প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৫, ০০:২৬
রেলওয়ের লেক থেকে স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার, শহরব্যাপী তোলপাড়
৭ সহপাঠীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে থানায় নিলেও পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে ॥ পরিবারের অভিযোগ, কিশোর গ্যাং সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে

চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে লেকের পানি থেকে আল-আমিন (১৭) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করার ঘটনায় শহরব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (১২ জুলাই ২০২৫) রাত ৯টার দিকে স্থানীয়রা অচেতন অবস্থায় আল-আমিনকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আল-আমিন সদ্য এসএসসি পাস করা ছাত্র। তিনি চাঁদপুর গণি স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
|আরো খবর
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আল-আমিন রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী প্রধানিয়ার ছেলে। তাদের পরিবার বর্তমানে চাঁদপুর শহরের মমিনপাড়া এলাকায় বসবাস করেন।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে আল-আমিন বাসা থেকে বের হয়ে চাঁদপুর শহরের হাসান আলী হাই স্কুলের নিকটস্থ মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ‘অঙ্গীকার’ সংলগ্ন লেকেরপাড় এলাকায় কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। পরে রাত ৯টার দিকে হঠাৎ লেকের পানিতে ভাসমান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে আনার পর তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান স্বজনরা।
ঘটনা সম্পর্কে নিহতের পিতা রমজান প্রধানিয়া তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে বলেন, আমার ছেলেকে ভূঁইয়া বাড়ির সামনে থেকে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে ছুরি মেরে পানিতে ফেলে দেয়া হয়। আমার ছেলে বাঁচার জন্যে সাঁতার কেটে লেকের দক্ষিণ পাশ থেকে উত্তর পাশে আসার সময়ে ব্যথা সহ্য করতে না পেরে পানিতেই মৃত্যুবরণ করে। আমি একজন বাবা হিসেবে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই, বিচার চাই।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে আল-আমিনের সঙ্গে থাকা সহপাঠী মামুন, দিদার গাজী, জাহেদ, দিদার ইসলাম, মঈন ইসলাম, শামীমসহ মোট ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
আল-আমিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে ভিড় করেন তার স্বজন ও এলাকার মানুষজন। কান্নায় ভারী হয়ে উঠে হাসপাতালের পরিবেশ। নিহতের পরিবার দাবি করেছেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে লেকের পানিতে ফেলে দিয়েছে।
ঘটনার পর পরই চাঁদপুর মডেল থানার ওসি ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে বিস্তারিত জানেন। স্বজনরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বাহার মিয়া বলেন, কাউকে আটক করা হয়নি, তারা কেউ অপরাধী নয়। তার সহপাঠী যাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আনা হয়েছিলো, পরে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে । মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে নিহতের পরিবার মামলা দায়ের করেছেন।