প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৩, ১৬:৪৪
চাঁদপুরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার তেতৈয়া গ্রামে স্ত্রী নাজমা আক্তারকে যৌতুকের দাবীতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় স্বামী আব্দুস ছালামকে মৃত্যুদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত।
|আরো খবর
সোমবার ১২ জুন দুপুরে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী এই রায় দেন। আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেয়া হয়।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ছালাম উপজেলার ৬ নম্বর কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের তেতৈয়া গ্রামের মৃত আয়েত আলীর ছেলে। পেশায় তিনি সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক। হত্যার শিকার নাজমা একই উপজেলার একই ইউনিয়নের নাহারা গ্রামের মো. আবু তাহেরের মেয়ে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ১০ এপ্রিল নাজমা ও সালামের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কনে পক্ষ সালামকে ১ লাখ টাকা মূল্যমানের জিনিপত্র দেয়। প্রায় একবছর তাদের দাম্পত্য জীবন ভালো চলছিলো এবং তাদের কন্যা সন্তান জন্ম হয়। এরপর বিভিন্ন সময় সিএনজি চালিত অটোরিকশা ক্রয় করার জন্য নাজমার কাছ থেকে তার স্বামী ছালাম আরো যৌতুকের টাকা দাবী করে। ঘটনার দিন অর্থাৎ ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টার দিকে ২ লাখ টাকা যৌতুকের দাবী নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছালাম নাজমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হলে তাকে প্রথমে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৪দিন পর ১৪ অক্টোবর হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাজমার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় ১২ অক্টোবর নাজমার বড় ভাই মো. সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে নাজমার স্বামী ছালামকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কচুয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ছালামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলাটির তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় কচুয়া থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরল ইসলাম খানকে। তিনি তদন্ত শেষে ১০১২ সালের ১৭ জানুয়ারি আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) খোরশেদ আলম শাওন জানান, মামলাটি দীর্ঘ ১৩ বছর চলাকালীন সময়ে আদালত ৭জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন করে। স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় দেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. শাহজাহান মিয়া।