রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২২, ০০:৪৮

কে হচ্ছে ইতালির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী

ইতালি প্রতিনিধি
কে হচ্ছে ইতালির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী

নানা টানাপোড়েনে ইতালির রাজনীতিতে গত কয়েক বছর ধরে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর এখনও কোন সরকার ধারাবাহিক ভাবে দেশ চালতে পারেনি। আগামী মাসের শেষ ভাগে শুরু হতে যাচ্ছে আগাম নির্বাচন।

জানা গেছে,আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ইতালি প্রজাতন্ত্রের ১৯তম আইন সভার আগাম সাধারন নির্বাচন হবে। ইতোমধ্যে প্রচার,প্রচারনায় মুখরিত গোটা দেশ। বিভিন্ন শহরে এরই মধ্যে অনেক দলের প্রার্থী দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে সবার মনে একটাই প্রশ্ন কে হচ্ছে ইতালির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। এই মুহুর্তে আলোচিত দলগুলোর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বের্লুসকনির দল (মধ্য-ডানপন্থী) ফরছা ইতালীয়া,পারতিতো ডেমোক্রেটিক(পিডি),মধ্য-বামপন্থী দলের সাধারন সম্পাদক এনরিকো লেত্তা,সাবেক সরাষ্ট্র মন্ত্রী মাত্তেও সালভিনির লেগা নর্দ,সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তি,ফাইভ স্টার মুভমেন্ট,ফ্রাতেল্লি ডি ইতালীয়া সভাপতি,জরজা মেলোনি, আসিয়োনে দলের সাধারণ সম্পাদক কারলো কালেনদা এবং সিভিক এনগেজমেন্টে নেতা লুইগি ডি মাইও ।

দিন যতই যাচ্ছে নির্বাচনী মাঠ ততই সরগরম হচ্ছে। এ সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান হবে সেপ্টেম্বরের ২৫ তারিখ নির্বাচনের পর। এবারও ডানপন্থী, মধ্য ডানপন্থী ও মধ্য বামপন্থী একাদিক দলের সঙ্গে লড়াই হতে পারে। তবে এবার মধ্য বামপন্থীদের মাঝে কোন্দলের কারনে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে কিনা তা নির্বাচন অতি সন্নিকটে আসলে জানা যাবে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে নিয়মিত গণসংযোগ।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে ভোটাররা বুঝে শুনে প্রার্থী নির্বাচন করবেন। বিগত কয়েক বছরের হিসাব কষে প্রার্থী নির্বাচন করতে ভোট কেন্দ্রে যাবেন সাধারণ জনগণ। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ পর্যন্ত টানা ৫ বছর কোন সরকার টিকে থাকতে পারেনি। এ নিয়ে সাধারণ জনগনের মাঝে চরম বিরক্তভাব দেখা দিয়েছে। ২০১৮ নির্বাচনে ডানপন্থী ও ফাইভস্টার মুভমেন্টসহ অন্যান্য দল মিলে কোয়ালিশন সরকার গঠন করে।

এসময় প্রধানমন্ত্রী হন জুসেপ্পে কোন্তি। প্রায় চৌদ্দ মাস দেশ পরিচালনা করার পর গত ২০ আগষ্ট ২০১৯ তিনি পদত্যাগ করেন। সুত্র বলছে,কোন্তি ২০১৮ থেকে ২০১৯ এরপর আবার ২০১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এরপর তিনি আবার ২৬ জানুয়ারি পদত্যাগ করে ক্ষমতাচ্যুত হন।

দেশটিতে যখন সরকার সংকট দেখা দেয় ঠিক তখন রাষ্ট্রপতি সেরজো মাতারেল্লা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবীদ ও সাবেক ইউরোপিয়ান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সভাপতি মারিও দ্রাঘির হাতে। তিনি প্রায় আঠারো মাস প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরই মধ্যে শুরু হয় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ গোটা ইউরোপে দেখা দেয় নানা রকম সংকট যার প্রভাব এসে পড়ে ইতালির রাজনীতিতে। দ্রাঘি ১৯ জুলাই ২০২১ প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগপত্র দিলে রাষ্ট্রপতি তা গ্রহন করেনি। পরে সংসদে নিম্ন কক্ষ থেকে উচ্চ কক্ষে আস্থা ভোটে দ্রাঘি সরকারের পতন হয় অর্থাৎ ২১ জুলাই ২০২১ তার পদত্যাগ কার্যকর করা হয়। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ইস্যুসহ নানা কারনে সংসদে দ্রাঘি আস্থা ভোটে লেগা নর্দ,ফরছা ইতালিয়া ও ফাইভ স্টার মুভমেন্ট ছাড়া ৯৪ ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর পথ থেকে সরে দাঁড়াতে হয় দ্রাঘিকে।এভাবেই দেশটিতে সরকার সংকট ঘনীভূত হয়। ২০১৮ নির্বাচনে সংসদ আসন ছিল ৯শ ৫১ এরমধ্যে উচ্চ কক্ষে ৩শ ২১ এবং নিম্ন কক্ষে ৬শ ৩০ আসন।

জানা গেছে,দ্রাঘি সরকারের আমলে সাধারণ চাকরি জীবিদের বেতন ভাতা-বৃদ্ধির একটি আলোচনা যখন চলমান শরীক দলের নেতারা ব্যাপারটি ভাল ভাবে নেননি। বরং রীতিমতো বিরোধিতা করেন তারা। স্থানীয়রা মনে করেন এসব কারনও হতে পারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী দ্রাঘির পতন।

গত চার বছরে তিন বার প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হয়। এর মধ্যে জুসেপ্পে কোন্তি দুইবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০২২ নির্বাচনে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে,ডানপন্থী দলগুলো এগিয়ে রয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মধ্য ডানপন্থী বের্লুসকনি,সাবেক সরাষ্ট্র মন্ত্রী ও সাধারন সম্পাদক লেগা নর্দের সালভিনিসহ অন্যান্য ডানপন্থী দল ঐক্যজোট হলে আগামীতে সরকার গঠন করার সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে,সাবেক সরাষ্ট্র মন্ত্রী সালভিনি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বের্লুসকনি তাদের দলের পক্ষে জরজা মেলোনিকে সমর্থন জানিয়েছেন এর ফলে ধারনা করা হচ্ছে আগামী নির্বাচনে ফ্রাতেল্লো ডি ইতালীয়া দলের সভাপতি জরজা মেলোনি মন্ত্রী সভার সভাপতি হতে পারেন। আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিতে পারেন। এমনটাই শোনা যাচ্ছে।

কারন এই মুহুর্তে তিনি বেশ আলোচনায় রয়েছেন। সংখ্যা গরিষ্ঠতায় না আসলে কোয়ালিশন সরকার গঠন করার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এদিকে ডানপন্থী দলগুলো কট্টর অভিবাসী বিরোধী তাদের নির্বাচনে একটি ইশতেহার থাকে অবৈধ ঠেকাও। কোন অবৈধ অভিবাসীকে ইতালিতে প্রবেশ করতে দিবেনা। এমনকি বৈধদের জন্যেও নিয়মনীতি কড়াকড়ি করবেন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশি বংশদ্ভূত ইতালিয়ান নাগরিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনছির আছিওনে ইতালীয়া ভিভা দলের সদস্য সোহেল মজুমদার শিপন বলেন,এখন পর্যন্ত ডানপন্থীরা এগিয়ে আছে। আমরা যারা ইতালিয়ান (পাসপোর্টধারী) সবার উচিত এবারের নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করা। ডানপন্থীরা বরাবর বিদেশি বান্ধব হয়না। তারমধ্য বামপন্থীদের মধ্যে রয়েছে মৃদু দ্বন্দ যা আমাদের জন্য মঙ্গলকর নয়। ফলে সামনে কঠিন সময় আসছে বিদেশীদের জন্য।

আসন্ন ২৫ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে পার্লামেন্টে আসন সংখ্যা মোট ছয়শ। এরমধ্যে ডেপুরি চেম্বার নিম্ন কক্ষ চারশ ও উচ্চ কক্ষ সিনেটের দুইশ। উল্লেখ্য,গত ৪ মার্চ ২০১৮ নির্বাচনে ৭২.৯৩% ভাগ ভোট গ্রহন করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়