প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২১:২৪
আজো কান্না থামেনি শতবর্ষী জুলেখা বেগমের
শাহরাস্তি উপজেলার শতবর্ষী নারী জুলেখা বেগমের আজো কান্না থামেনি। এখনো আদরের সন্তানের কথা মনে হলে নিজ থেকেই কান্না করে চোখ ভাসিয়ে ফেলেন। জীবনের অনেক স্মৃতি মুছে গেছে জীবন থেকে কিন্তু হঠাৎ করেই যখন ছেলেটার কথা মনে পড়ে যায় তখন কান্নায় দুচোখ ভাসিয়ে ফেলেন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিয়ার বিদ্রহে তিনি তার ছেলে লে কর্নেল অবঃ দেলোয়ার হোসেন কে হারান।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী রাতে বিডিআরের কিছু সংখ্যক বিপথগামী জওয়ানের নৃশংসতায় যে ক’জন সেনা কর্মকর্তা প্রাণ হারিয়েছিলেন চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার ঠাকুর বাজারস্থ নিজমেহার পাটোয়ারি বাড়ির লেঃ কর্ণেল (অবঃ) দেলোয়ার হোসেন তাদের একজন। অবসরপ্রাপ্ত এ সেনা কর্মকর্তা স্বস্ত্রীক চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছিলেন বিডিআর সপ্তাহের দাওয়াতে আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে। বিডিআর’র নিহত ডিজি শাকিল আহমদ ছিলেন তাঁর ব্যাচম্যাট ও অন্তরঙ্গ বন্ধু। বিডিআর বিদ্রোহের সময় শাকিল আহমদের বাসাতেই স্ত্রী রশনী ফাতেমা আক্তার লাভলীসহ ছিলেন তিনি।
নিহতের বড় ভাই হাজী আমীর হোসেন পাটোয়ারী (৮৩) কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, “আজ ১৩ বছর হলো আমার ছোটভাইকে দেখিনা, খুনিরা তাঁর স্ত্রীকেও মাফ করেনি। আমার মা এখনো দেলু দেলু বলে কাঁদেন।
নিহত দম্পতির ২ কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে শারমিন ফাইরুজ লেখাপড়া সমাপ্ত করে চট্টগ্রামে স্বামীর সাথে রয়েছেন। ছোট মেয়ে নাজিফা ইসমাম ইংল্যান্ডে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিষ্টনে উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছেন।
নিহতের বড় মেয়ে শারমিন ফাইরুজ মুঠোফোনে জানান, “হত্যাকান্ডের সময় আমি লন্ডণ কলেজ অব একাউন্টেন্সিতে সিএ অধ্যয়নরত ছিলাম। আমার ছোট বোন নাজিফা ইশমাম সে সময় চট্টগ্রাম প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তো। ১০ বছর আগের সে দুর্বিষহ স্মৃতি আজো হৃদয়পটে ভেসে উঠে। মানুষের মা কিংবা বাবা বিদায় নিলে একজন হয়তো পাশে থাকে আমরা এমনই দুর্ভাগা যে দুজনকেই একসাথে হারিয়েছি। আজ সবই আছে শুধু মাথার উপরের সবচেয়ে বড় ছায়া দু’টি হারিয়ে গেছে”। এ হত্যাকান্ডের বিচার প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আদালতে মামলা বিচারাধিন, আমার বিশ্বাস আমরা ন্যায় বিচার পাবো”।