প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
বাংলা নববর্ষ
হে বৈশাখী নববর্ষ
তুমি কি পারো না
তোমার বুক থেকে বিগবর্ষের সকল ব্যর্থতা
ও ধ্বংসের রক্তস্তূপ ঝেড়ে ফেলে
নতুন সুন্দর একটি সকাল উপহার দিতে?
তোমার মমতাস্পর্শী হৃদয়ে বিষাক্ত কাঁটাগুলো
যেভাবে বিদ্ধিত হয়েছিলো তাকে
ফুলের পাপড়ি বানিয়ে ছড়িয়ে দিতে?
হে বৈশাখী নববর্ষ
তুমি কি পারো না
তোমার স্বপ্ন-কল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে,
মমতাময়ী মায়ের আঁচলের কোণে
নববধূর লাল বেনারসী শাড়িতে
ফুলশয্যার অমৃত বন্ধনে
শান্তির প্রতীক মুক্তিত পায়রা উড়িয়ে
একটি সুবাসিত দিবস উপহার দিতে?
হে বৈশাখী নববর্ষ
তোমার কাছে চাইনি
যন্ত্রণায় তিক্ত-পিপাসিত হৃদয়,
চেয়েছিলাম মিষ্টি সান্ত¡না, অমিয় সুধা,
এগিয়ে যাওয়ার দ্বীপ্তিত তিথী বাসনা।
তবুও কেন বিগবর্ষ হয়ে গেলো
সুবাসহীন ঝড়ে যাওয়া শুকনো পাতা।
হে বৈশাখী নববর্ষ
তুমিতো সুবাসহীন শুকনো পাতা নও
তুমিত ঘোষণা কর নব যৌবনের
ঘোষণা কর স্বস্তির বিরামহীন ভালোবাসার
সুরের মূর্ছনায় ছন্দ তোলার
সমুদ্রের অতল থেকে মুক্তা আনার
সুখ পাখিটি উড়িয়ে দেওয়ার
যা বিকশিত হয়ে
ছড়িয়ে যাবে ধরণীর প্রাতঃকোণে কোণে।
হে বৈশাখী নববর্ষ
তোমাকে এবার পারতেই হবে
মমতাময়ী মায়ের মুখের হাসি
শ্রদ্ধাবদ্ধ বাবার সুখের স্বপ্ন রাশি
স্নেহময় বোনের কাজলা দিদি
আবেগময় ভাইয়ের উদ্যমী শান্তিত জয়তি
সশ্রদ্ধ ভক্তি দিয়ে ভরিয়ে তোলে
বেদনাসিক্ত অশান্ত কান্নাকে থামিয়ে
শুধু ভালোবাসা আর ভালোবাসা
দিতে হবে তোমাকে বিলিয়ে।
হে বৈশাখী নববর্ষ
তুমিত একটি প্রভাতই নও
তুমি অজস্র অসংখ্য প্রভাতের আবরণ
তোমার নবপ্রভাতে আনন্দ-উল্লাসে
রোমাঞ্চভরা উপাত্ত দিয়ে সাজিয়ে দাও সারাবেলা
তবুও যেনো মনে হয়
কোনো সুন্দরের কোথাও যেনো রয়ে গেলো অপূর্ণতার মেলা।
হে বৈশাখী নববর্ষ
তুমি জ্যোৎস্না রাতের তারা হয়ে এসো না
এসো না তুমি ঝিঁঝিঁ পোকার ঝিলিক হয়ে,
ঘুমের নিস্ফল স্বপ্ন হয়ে
এসো না তুমি নববধূর বেনারসী শাড়ি হয়ে,
যা কিনা একটি রজনীকেই সুন্দর করে
কিন্তু তুমিতো শুধু একটি রজনীই নও
তুমি দিবা রজনী প্রভাতসন্ধ্যা,
অজস্র আলোকিত সৃষ্টির সত্তা।
তোমার বিস্মৃত বিশাল বলয়ে
সৌন্দর্যে ফুটে উঠুক বিশ্বময় প্রাণীবাস।
হে বৈশাখী নববর্ষ
এখন সময় এসেছে তোমার
দ্বীপ্ত শপথে বিশ্বমানবতায় তোমার ভালোবাসার সমৃদ্ধ
পাখা ছড়িয়ে দিয়ে সকল অশান্তি বিশৃঙ্খলাকে পদদলিত করে
নবস্বর্গীয় একটি সূর্যোদয় করা,
যা আলোকিত করবে
বঙ্গ থেকে বাংলায়, কাল থেকে কালান্তর,
যুগ থেকে যুগান্তর।