প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
কী প্রয়োজন ছিলো কবুল বলার

কী প্রয়োজন ছিল কবুল বলার, বিয়েটা তো একদিনে হয়নি, দুইপক্ষের দেখা-দেখির পর কথা চূড়ান্ত হয়েছে, যখন কথা চূড়ান্ত হয়, তখন তুমি বাক্প্রতিবন্ধীর মতো ছিলে কেন? বিয়েটা যখন চূড়ান্ত হচ্ছে, তখন তুমি পরিবারের কাউকে না কাউকে তোমার প্রেমের কথা বলতে পারতে, তোমার বাক্প্রতিবন্ধীর অভিনয়ে আরেক মাবাবার স্বপ্ন যে বিলীন হয়েছে। এখন এর বিচার করবে কে!
কীভাবে লেখাটা শুরু করবো, এ নিয়েই ভেবেছিলাম। লেখার ভাষা জানা নেই। পরিবারের একমাত্র সন্তান, মেহেদীর ঘ্রাণ যেতে না যেতেই যে নিথর দেহ নিয়ে কাঁধতে হবে বাবমাকে, কে জানতো এ কথা। তুমি তো একজন পেশাদার খুনির চেয়ে ভয়ানক নারী।
প্রেম-ভালবাসা পৃথিবীর সৃষ্টি থেকেই চলে আসতে, আদমণ্ডহাওয়া, লাইলী মজনু, শিরি-ফরহাদ সেখান থেকেই প্রেম চলে আসছে, তারা তো তোমার মত বিয়ে করে স্বামীর লশের উপর দিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে পালায়নি, তুমি তো একজনকে ভালবাসছো, বিয়ে করেছো হাসিমুখে আরেকজনকে, বিয়ের পর তোমার বৈধ স্বামীর লাশের উপর দিয়ে মৃত ভালবাসাকে জাগ্রত করে চলে গেছো, একি তোমার ছলনার বিয়ে। তোমার ছলনায় বিয়ে নিবে গেলো একটি নিষ্পাপ প্রদীপ। যে প্রদীপ আলো দিতে তার পরিবারকে।
মেহেদির রং শুকায়নি, পবিত্র বন্ধনে বেঁধে পার করতে পারেনি ৪ দিনও সে, এরই মধ্যেই টগবগে যুবকের নিথর দেহ, সে তো কেউ মানতে পারবে না, বলছি চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ইবাদ হোসেনের গল্প। জীবন হয়তো ছিল ইবাদের, কিন্তু ইবাদের এই জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে বাবা-মারসহ পরিবারের হাজারো স্বপ্ন। সে স্বপ্ন নিমিষেই নিভে গেল। তোমার মন, তোমার জীবন, যেতে চাইলে, প্রেমিকের হাত ধরে আগেই চলে যেতে পারতে। এই পবিত্র বন্ধনের আবদ্ধ হওয়ার কী প্রয়োজন ছিল। ইবাদ তো তোমার বৈধ স্বামী, সে নীতিকে তুমি এখন বিধবা, সাদা শাড়ি পরে নাকের ফুল খুলে স্বামীর জন্য দোয়া করার কথা।
‘চাঁদপুর শহরে প্রেমিকের সাথে নববধূ উধাও, শ্বশুর বাড়িতে বিষ খেয়ে বরের আত্মহত্যা’ এখন সংবাদমাধ্যমে হচ্ছে শিরোনাম। প্রেমের টানে প্রেমিকের সাথে নববধূ চলে যাওয়ার খবর শুনে শ্বশুর বাড়িতেই প্রাণ দিলেন নববধূর স্বামী ইবাদ খান। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া রোডের নববধূর বাবার ভাড়া বাসায়।
চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের আলগী পাঁচগাঁও এলাকার খানবাড়ির খোরশেদ আলম খানের একমাত্র ছেলে ইবাদ খানের সাথে পারিবারিকভাবে গত ৮ মার্চ চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া রোডের বিআইডব্লিউটিএ’র চাঁদপুর শাখার পরিদর্শক পাইলট দিদারুল আলমের মেয়ে খাদিজা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের রাতেই বাসরঘরে স্বামী ইবাদ খানকে কাছে আসতে দেয়নি নববধূ খাদিজা আক্তার। কী প্রয়োজন ছিল তোমার এ বিয়ের নাটকের! তুমি কবুল বলার আগেই তো প্রেমিকের হাত ধরে চলে যেতে পারতে! তাহলে তো আর ঝড়তো না একটি নিষ্পাপ জীবন। কী নিয়ে এখন বাঁচবে ইবাদের পরিবার। একমাত্র ছেলের স্মৃতি ছাড়া আর কী আছে তাদের। বৃদ্ধ বয়েছে, বাবামা যখন চলে যাবে পরপারে তখন তাদের দেহ কাঁধে নিয়ে শেষ বিদায় জানানোর কথা ছিল ইবাদের, কিন্তু ঘটলো উল্টোটা। হায়রে নারী, হায়রে প্রেম!