প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অপ্সরার কাছে খোলা চিঠি
প্রিয় নাতাসা আমার হৃদয় নিংড়ানো সবটুকু ভালোবাসা নিও। জানি এখনো হয়তো আমার ওপর অনেকটা বিরক্ত হয়ে আছো। আমার লেখাটুকু পড়তেও পারো আবার তুচ্ছ টিস্যু ভেবে ছুঁড়েও ফেলতে পারো। তবুও বোবা প্রাণীর মতো বড় অসহায় হয়ে তোমার কান নয়, মন পর্যন্ত কিছু কথা পৌঁছাতে চাই প্রিয়। কারণ আমি যে বড্ড বেশি ভালোবাসি তোমায়। তাই তো তোমার এতোটা অবজ্ঞা, অবহেলা আর অসহ্য যন্ত্রণা বুকে ধরে বার বার তোমার কাছে ফিরে আসতে চেয়েছি। কিন্তু তাতেও আমি বড় নিরুপায়। কতটা দুর্ভাগ্য আমার, তুমি রেগে যাওয়ার ভয়ে কতো নমনিয়তায় তোমার সাথে মিষ্টি কথা বলার পরেও যেনো আমি তোমার কাছে অনেক বড় অপরাধী সেজেছি। ভালো কথা বললেও তুমি রেগে যেতে। ভিন্ন প্রসঙ্গ বললেও তুমি চরম ক্ষীপ্ত হতে আমার ওপর। তবুও তোমার ভালোবাসাটাকে বুকে আঁকড়ে ধরে সবকিছু মন থেকে মুছে নিয়ে বার বার তোমাকে আঁকড়ে ধরার ব্যর্থ চেষ্টা করেছি। আমি নির্বোধ বালকের মতো বুঝতে পারিনি যে আসলে যেখানে আমার প্রতি তোমার এতোটুকু ভালোবাসা নেই, এতোটুকু দয়া-মায়া নেই। সেখানে তোমাকে যতোই আঁকড়ে ধরি না কেনো। যতোই মিষ্টি ভাষায় সুন্দর কথা বলি না কেনো, সেটা তোমার কাছে বিষের মতোই মনে হবে। তবুও পাগলের মতো তোমাকে ভালোবেসে বেহায়াপনা আর নির্লজ্জের মতো তোমার কাছেই ফিরতে চেয়েছি বারবার। কতবার কতো আকুতি-মিনতি করেও চোখের জলে বুক ভাসিয়ে তোমার এতোটুকু দয়ার পাত্র হতে পারিনি। তোমার সাথে যোগাযোগ করার সমস্ত মাধ্যম হাজারো বার ব্লাকলিস্টে রেখে আমাকে সীমাহীন কষ্ট দিয়েছো। আমি নিরূপায় হয়ে বড় অসহায়ের মতো নিরবে চোখের জলে কাটিয়েছি কতো রাত, কতো মুহূর্ত। আমার হৃদয়ের সেই বোবা কান্নাটা কখনো তোমার হৃদয়কে স্পর্শ করেনি! আগুনের কাছে যেমন মম গলে পড়ে, সেভাবে কখনোই আমার নিরব কান্না তোমার পাথর মনকে গলাতে পারেনি।
জানি না কথায়, কথায় কেনো এভাবে রেগে যেতে। কোনো কারণ ছাড়াই কেনোই-বা এতোটা উত্তেজিত হয়ে যা ইচ্ছে তাই বলে বেড়াতে। তোমার নিদারুণ আচরণে আজ মনে হচ্ছে আমি হয়তো কখনোই তোমার পাথর মনে ভালোবাসার কোমল ফুল ফুটাতে পারিনি। নিজেকে অপরাধীর মতো এতো নমনিয়তায়, ভদ্রতায় নিচু স্বরে কথা বলার পরেও তোমার নিষ্ঠুর আচরণে আমাকে খুব ছোট করে অনেক বাজে বাজে কথা বলে বেড়াতে। কিন্তু সোনা বিশ্বাস করো তোমাকে বড্ড বেশি ভালোবাসি বলেই তোমার সব খাটো করে বলা কথাগুলো হাসিমুখে উড়িয়ে দিয়েছি।
তুমি কখনো হৃদয়ের গভীরতা বুঝতে চাওনি। কখনো রাগ-অভিমানের ভাষা বুঝোনি। একটু রাগ বা অভিমান করলে যেমন রেগে গিয়ে আমার সাথে হিংস্র আচরণ করতে। তেমনি কখনো কখনো আমাদের কথোপকোথনেও কথা একটু এদিক-সেদিক হলেই সমস্ত কিছু থেকে মুহূর্তেই আমাকে ব্লক করে রাখতে নিজের ইচ্ছে খুশি মতো। কখনো তোমার মাঝে মন, মনুষ্যত্ব বোঝার মতো সেই মন খুঁঁজে পাইনি প্রিয়। তবুও পাগলের মতো নিঃস্বার্থভাবে তোমাকে ভালোবাসি বলে কয়েক ঘণ্টা কিংবা একদিন পর যখন সেই ব্লক থেকে আমাকে মুক্ত করতে, তখন নিজেকে মিথ্যে শান্ত¡না দিয়ে বেয়াপনার মতো তোমাকে নক দিতাম। তুমি শতবার লাইন কেটে দেয়ার পরেও একটু শান্ত¡না পেতে হাজারো বার তোমাকে কল দিয়ে বিরক্ত করেছি। কারণ, আমি বুঝি প্রকৃত ভালোবাসার মাঝে মান-অভিমান থাকবেই। এতে ভালোবাসার মানুষের কাছে শত অপমান আর তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য হওয়ার পরেও যদি তার সাথে নির্লজ্জের মতো কথা বলা হয়। তাহলে সেটাকে কখনোই ছোট হওয়া বলে না। ভালোবাসার কাছে কেউ কখনো ছোট হয়নি প্রিয়। সেটা ভেবেই মনকে শান্ত¡না দিয়েছি প্রতিনিয়ত। কারণ আমি যে খুব বেশি ভালোবেসেছি তোমাকে। যেটাকে বলে অন্ধ ভালোবাসা। তোমার নিপুণ অভিনয়ের কাছে নিজেকে অন্ধ করে পাগলের মতো ভালোবেসে বারবার তোমার মাঝেই পৃথিবীর সমস্ত সুখ খুঁজে নিতে চেয়েছি।
অথচ কতটা দুর্ভাগ্য আমার হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা উজার করে দিয়েও তোমাকে ধরে রাখতে পারিনি। যতোবার যতোটা মুহূর্ত তোমার সাথে কথা বলার অপেক্ষার প্রহর গুণে গুণে নিজেকে নিরবে পুড়িয়েছি। ততোবারই তোমার নিষ্ঠুর আচরণে অপমান, অপদস্ত, অবজ্ঞা আর অবহেলার পাত্র হয়েছি। আমি নির্বোধ বলে কখনো বুঝতে চাইনি যে আমার প্রতি তোমার ভালোবাসাটা ছিলো ক্ষণিকের অভিনয় মাত্র।
একটু মনে করে দেখো তো প্রিয়, তোমার প্রতি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছি যে। যার কারণে কতবার, কতোদিন তোমাকে বলেছি, নাতাসা অন্তত মিছে মিছি হলেও তুমি আমাকে সারাজীবন ভালোবেসে পাশে থেকো। কিংবা ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয় করে যেও। তবুও মনে করবো তুমি আমারই আছো, আমাকেই ভালোবাসো। কারণ আমি যে তোমাকে হারানো বেদনা সইতে পারবো না। এতো অনুরোধ আর আকুতি-মিনতি করেও তুমি সে কথাটাও রাখলে না। মিথ্যে অভিনয়টা মাঝ মঞ্চে বন্ধ করে দিলে। নিভিয়ে দিলে মনের ভেতর সাজানো ভালোবাসার মঞ্চের সব কটি রঙিন বাতি। সেই শুরু থেকে আজ অবদি তোমাকে যতোটা মূল্যায়ন এবং গুরুত্ব দিয়ে তোমার একটু ভালোবাসার কথা শুনতে অপেক্ষার কাছে নিজেকে হার মানিয়েছি। তার বিন্দুকণাও যদি তুমি আমাকে ভাবতে জীবনটা ধন্য হতো প্রিয়।
নাতাসা তোমার আলো-অন্ধকারের মিছে ভালোবাসায় বারবার নতুন করে বুক বেঁধেছিলাম। ভেবেছি হয়তো আমাদের ভালোবাসাটা একটুখানি গভীর হলে হয়তো আমার প্রতি এতোটুকু মায়া জন্মাবে। কিছুটা ভালোবাসার মূল্য দিতে শিখবে। কিন্তু আমার সেই ভাবনটাও মিথ্যে করে দিলে, যেদিন কোনো কারণ ছাড়াই তোমার ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটস্অ্যাপ এবং মোবাইল নম্বরে আমাকে ব্লক করে দিয়ে। তোমার সেই নিষ্ঠুরতায় আমি নির্বাক বোবা মূর্তি হয়ে গেলাম। মনটাকে শান্ত¡না দেয়ার মতো আর কোনো ভাষা খুঁজে পাইনি। প্রতিদিন প্রতিক্ষণ ফেসবুকের চার্জ বক্সে তোমার নামটি চার্জ করে ব্যর্থতার সাগরে নিজেকে নিরবে জ্বলে পুড়ে মরছি।
হয়তো আর কখনো তোমাকে বিরক্ত করার সুযোগ হবে না এই অসভ্য বেহায়াপনা পাগল ছেলেটার।
যাই হোক, সোনা মনের কষ্টটাকে কিছুটা হালকা করতে অনেক কথা লিখে ফেলেছি। জানি হয়তো এতেও তুমি অনেক বিরক্ত হচ্ছো। তবুও জানোয়ার নয়, আমাকে একজন মানুষ ভেবে ক্ষমা করে দিও। তুমি সুখে থেকো, ভালো থেকো থেকো। যদি কখনো ভুল করেও চলার পথে কখনো তোমার চোখে চোখ পড়ে যায়। তাহলে সেদিন অন্তত একটু দয়া করে, চোখে মায়া জন্মে নিয়ে এই অসহায় মানুষটার কিছুটা কষ্ট অনুভব করে নিও। তাহলে হয়তো মরেও শান্তি পাবো।
ইতি
তোমার ভালোবাসার ভিক্ষে চাওয়া, তোমাকে বিরক্ত করা বেয়াদব, অসভ্য, অশিক্ষিত, ফালতু একটি ছেলে।