প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
আসিফ আহমদের গুচ্ছ কবিতা
মহানগর
মুদ্রা বিলাপীর হাহাকার! নগরীর কুঠুরি হতে প্রাচীরে। এখানে মানবজনম থেকেও দ্বিগুণ, পাথুরে ভবনের জন্ম। তার সাথে সাথে কেমন নিরেট পাথুরে হয়ে উঠছে লোকেদের মখমলে মনটা!
পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রকৃতি হত্যার মহোৎসব।
বহুতলা ভবনের আধিপত্যে দেখা মেলে কই নীলিমার? প্রভাকরেরও সাক্ষাৎ নেই তাই।
এখানে মানুষ আসে মুদ্রা অন্মেষণে,
শেষে মুদ্রা হয়ে উঠে জলজ্যান্ত মানুষ।
আর মানুষটা হয়ে যায় কচকচে নোট!
হায়রে নগর,মহানগর! সব সমাপ্তির পর ধরলি আবার নয়া নাগর। তো এই নাগরের নাচন কদ্দিনের? আমিও তো একি নাওয়ের নাবিক। কয় নম্বর নাগর আমি, মহানগরী হে?
এখন
কাকভোরে মক্তব পালানো ছেলেটি এখন জীবন থেকে পালাতে চায়।
বুক পকেটে কলম রাখা কিশোরটি এখন,
প্যান্ট পকেটে রিবালবার নিয়ে ছুটদেয় স্কুল পথে। তার বুক পাশে এখন আর পকেট নেই, পকেট ছেঁটে পুরে নিয়েছে একবুক প্রতি হিংসা জগৎ-জাতির পরে।
সদ্য বলতে শেখা শিশুটি এখন টিকটক লাইকির বাজিমাৎ। ব্যস্ত সময় পার করে ফ্যান ফলোয়ার মেইনটেইনে।
মোস্তফা ভাইসিটি খেলা বালকটি এখন
এলাকার বড় ভাই, মানুষ নিয়ে খেলে হরহামেশাই।
পাশের পাড়ার,সকিনার প্রেমে মত্ত হয়ে কবিতা লেখা যুবকটি এখন পৌর মেয়রের ডান হাত।
সন্ধ্যের বাজার চা আড্ডায় মাতানো বয়োজ্যেষ্ঠটা এখন নিজ মেয়ের সমান,
মেয়েগুলোর সাথে বাবু সোনা আলাপে মেতে উঠে অবলীলায়।
লাশের সারি!
গোরস্থানে লোকেরা মরীচিকা ধরা কোদাল নিয়ে অপেক্ষারত। আর ডোমেরা শ্মশানে ঘাটে আধ-ভেজা কাঠ ও মাচিশ ভর্তি শলা নিয়ে। যেন তাঁরা প্রতিক্ষায় শত সহস্র বছর একটি লাশের।
এখন কোদাল ভেঙে যায়, গোরস্থান পুরে যায়। শ্মশানে কাঠ মাচিশে অনল জ্বেলে রয়। তবুও ফুরায় না শেষ হয়না অযুত লাশের সারি!