প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
অফিস থেকে বের হতেই পড়লাম বৃষ্টির কবলে। একেবারে ঝুম বৃষ্টি। প্রকৃতির এখন আর কোনো নিয়মকানুন নেই। যখন ইচ্ছা ঝরতে শুরু করে। কেন যে খুব ইচ্ছা হলো বৃষ্টিতে ভিজতে! ইচ্ছারও যেন বৃষ্টির মতো অবস্থা। কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। রিকশাটা পেয়েও ছেড়ে দিলাম। রুমঝুম শব্দে বৃষ্টি ঝরছে নিরবচ্ছিন্নভাবে।
আমার মনে পড়ল শৈশবের কথা। আহা! কত ভিজেছি শ্রাবণের বৃষ্টিতে। শহরে এসে তো মেশিন হয়ে গেছি। আবেগ-অনুভূতি সব ভোঁতা হয়ে গেছে। শুধু খাওয়া আর ঘুমানোই যেন নিত্যদিনের রুটিন এখন। ভিজতে ভিজতে প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে হাঁটতে লাগলাম। রাস্তার দু'পাশের হলুদ লাইটগুলো জ্বলে উঠেছে। ঘোলাটে আলোর দিকে তাকালে নিমিষেই কল্পনায় হারিয়ে যাওয়া যায়। নন্দিনীর কথা বড্ড বেশি মনে পড়তে লাগল। ভার্সিটিতে পড়া অবস্থায় বৃষ্টি দেখলেই ফোন দিয়ে বলত, 'চল, রিকশায় করে পুরো ঢাকা শহর ঘুরে বেড়াই অথবা হাতে হাত রেখে কোনো রেললাইনের পথ ধরে হেঁটে যাই বহুদূর।'
মেয়েটি পাগলি বটে। আজ নন্দিনী নেই, আছে শুধু ওর স্মৃতি। যে স্মৃতিগুলো বৃষ্টিতে ভিজে আবার রোদে শুকিয়ে যায়। প্রবল বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে একসময় ভেজা শরীর নিয়ে বাসায় ফিরলাম। রাতে প্রচণ্ড জ্বর এলো। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত নয়, ইদানীং বৃষ্টিতে ভিজলেই শরীর কাঁপিয়ে জ্বর আসে। জ্বরকে আমি খুব ভয় পাই। এই শহরে আপন বলতে কেউ নেই। চোখ বন্ধ করে তাই মায়ের আদর খুঁজছিলাম। কাঁথাটা পাতলা টিস্যু মনে হচ্ছে, খুব শীত লাগছিল। মায়ের ছবিটা মাথার কাছে রেখে দিলাম। ঠিক যেমনটি ছোটবেলায় জ্বর এলে মা মাথার কাছে বসে থাকতেন। রাত বাড়তে থাকে আর আমার মুখ দিয়ে একটি শব্দ বের হয় মা... মাগো! বুঝতে পারি কণ্ঠটা ধরে এসেছে। চোখ ভিজে উঠেছে।