প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
দেওয়ান মাসুদ রহমান। লেখক ও চাকুরিজীবী। তার লেখা বইগুলো হলো : অবসরের গান, নিঃশব্দের অপূর্ণতায়, কাঁচপোকার টিপ, অপেক্ষায় অনাদিকাল। এর মধ্যে ‘অপেক্ষায় অনাদিকাল’ গল্পের বই। তিনি চাঁদপুর থেকে প্রকাশিত ছোটকাগজ ‘শিল্পশিখা’ সম্পাদনা করছেন।
দেওয়ান মাসুদ রহমান সম্প্রতি চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠক ফোরামের মুখোমুখি হন। সাক্ষাৎকারটি নিম্নরূপ।
চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?
দেওয়ান মাসুদ : আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : সাহিত্য চর্চায় কীভাবে যুক্ত হলেন?
দেওয়ান মাসুদ : স্কুল জীবন থেকেই বই পড়ার অভ্যাস। এই বিষয়ে বলতে গেলে একটি ঘটনা বর্ণনা করতে হয়, স্কুল পরীক্ষার আগের দিন বন্ধুর সাথে দেখা করতে গিয়েছি, দেখলাম তার বিছানায় ছড়ানো-ছিটানো গল্প-কবিতার বই। পরীক্ষার আগের দিন এই সকল বইয়ের সাথে তার সখ্যতা দেখে ভীষণ অবাক হয়েছি। মনে আছে, সেদিন তার থেকে একটি বই নিয়েছিলাম, বইটির নামও স্পষ্ট মনে আছে ‘দেবদাস’। আমিও স্কুল পরীক্ষার কথা ভুলে ‘দেবদাস’ পড়লাম। তখন থেকেই বই পড়া শুরু করি, বিভিন্ন চরিত্রের সাথে যখন সংগোপন ও সন্ধিক্ষণ হয় তখন আমার ভেতর থেকে কেউ যেন ডেকে বলেছে লেখো, এভাবেই শুরু।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় লেখক কারা?
দেওয়ান মাসুদ : আসলে অনেকের লেখাই পড়েছি, পড়ছি, শেকসপিয়ার, জন কিটস, রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ দাস, হুমায়ুন আহমেদ, নজরুল, সমরেশ মজুমদার, শীর্ষেন্দু, শরৎচন্দ্র এঁদের মধ্যে থেকে আমার অন্যতম প্রিয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।
চাঁদপুর কণ্ঠ : সাহিত্যের কোন্ কোন্ মাধ্যমে আপনি লিখেন?
দেওয়ান মাসুদ : কবিতা দিয়ে শুরু করেছি, এখন গল্পও লিখছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রথম বই প্রকাশ সম্পর্কে বলুন।
দেওয়ান মাসুদ : প্রথম বই প্রকাশের ক্ষেত্রে আমার একটি আনন্দময় স্মৃতি রয়েছে, কবিতা লিখতাম কিছু থাকতো সংরক্ষণে, কিছু হারাতো। সেই মুহূর্তে আমার এক সুহৃদ বললো, আপনি যা-ই লিখবেন মোবাইলের নোটপ্যাডে লিখবেন এবং আমাকে ই-মেইল করবেন। আমি তা-ই করলাম। একদিন সেই সুহৃদ আমাকে বললো, ভালো কবিতা জমা হয়েছে, আপনার কাছে যে ক’টা কবিতা রয়েছে একটা বই হবে। আমি বললাম, বই করার ইচ্ছে তো নেই। তিনি বললেন, কেন করবেন না? আমারও মনে হলো আসলেই তো কেন করবো না? তখন প্রথম বই প্রকাশ করার কাজ শুরু করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার মোট বই কতটি? কী কী?
দেওয়ান মাসুদ : আমার চারটি বই প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো হলো : অবসরের গান, নিঃশব্দের অপূর্ণতায়, কাঁচপোকার টিপ, অপেক্ষায় অনাদিকাল। এর মধ্যে ‘অপেক্ষায় অনাদিকাল’ গল্পের বই।
চাঁদপুর কণ্ঠ : কোনো বই কি প্রকাশের অপেক্ষায় আছে?
দেওয়ান মাসুদ : নতুন একটি বই নিয়ে কাজ করছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : সাহিত্যের সঙ্গে সমাজের সম্পর্ক কতটুকু?
দেওয়ান মাসুদ : দেখুন, আমরা সকলেই জানি সাহিত্য সমাজের দর্পণ। নিজের চেহারা যেভাবে আয়নায় দেখা যায়, তেমনি সমাজের চেহারা সাহিত্যে দেখা যায়। একজন লেখক বৈশ্বয়িক জীব, পৃথিবীর সভ্যতার যে কোনো সমাজেই তো লেখক জন্মগ্রহণ করবে, তিনি যেখানেই জন্মাবেন সমাজজীবনের নানা মিশ্রিত উপাদান তিনি সাহিত্যে প্রতিবিম্বিত করবেন। কারণ লেখক সামাজিক জীব, তাই তার রচনায় সমাজের নানা দিক সন্নিবেশিত হয়, সেই অর্থে সমাজের সাথে সাহিত্যের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য।
চাঁদপুর কণ্ঠ : সাহিত্য চর্চার জন্যে মানুষের কাছ থেকে কতটুকু সাড়া পান?
দেওয়ান মাসুদ : আসলে মানুষ বলতে, আমি সাড়া পাচ্ছি কিছু পাঠকের কাছে। ভালো লাগে এই ভেবে, যখন দেখছি আমি কিছু পাঠক তৈরি করতে পেরেছি যারা সত্যিকার অর্থে আমার লেখার অপেক্ষা করে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : কখন লিখতে বসেন?
দেওয়ান মাসুদ : আমি নির্দিষ্ট করে সময় নিয়ে লিখি না। যখন ভেতর থেকে তাড়া আসে লিখতেই হবে, তখন আমি লিখি। দিন-দুপুর-রাত নেই, সময় তা যখনই হোক, তবে তা অফিসের কাজের বাইরে।