মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

ট্রেনে হলো দেখা
অনলাইন ডেস্ক

আজ শুক্রবার, সরকারি ছুটির দিন। মানুষজন এদিক-সেদিক ঘুরতে যায়। আমাদেরও সব কিছু বন্ধ। আমরাও ঘুরতে বের হয়েছিলাম। আমরা কিছু সঙ্গী নিয়ে একটা স্থানে যাচ্ছি। তো আমরা সকলেই সকাল বেলা যে যার বাসা থেকে যা পেরেছে তা খেয়েই বের হলাম।

বড় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। রাস্তায় কোনো গাড়ি দেখা গেলো না। চিন্তায় পড়ে গেলাম। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এটা চিন্তা করতে করতে দেখি একটা গাড়ি চলে আসলো এবং আমরা সবাই খুব আনন্দিত হই। আমাদের যাত্রাটা এখান থেকে শুরু।

আমরা একটি স্টেশনে পৌঁছলাম। সেখানে নেমে কিছু খাবার কিনে আনলাম, ক্লান্ত হয়ে গেছি তো সকলে বসে খাবারটা খেয়ে নিলাম। দুই মিনিট হাঁটতে হবে ট্রেন স্টেশনে পৌঁছতে আমরা দ্রুত হাঁটা শুরু করলাম। আবার বৃষ্টি যেনো মনে হয় আষাঢ়ের মতো ঝড়ছে। গাড়িও পাচ্ছি না ট্রেনও ছেড়ে দিবে, সময় হাতে বেশি নাই। অবশেষে অনেক ঝড় বয়ে যাবার পর আমরা পৌঁছলাম।

আমরা ট্রেন দেখতে পেয়ে খুবই খুশি হয়েছিলাম কারণ, আমরা আজকে ট্রেনে উঠতে পারবো, আসলে এর আগে কখনো উঠাও হয়নি। এজন্যে আজকে আমরা ভীষণ খুশি। আমরা আমাদের সকলের জন্যে টিকিট কিনলাম কাউন্টার থেকে এবং ট্রেনে উঠলাম। আমাদের সিট নম্বর দেয়া ছিলো আমরা সেগুলো খুঁজে বের করলাম এবং পেয়ে সেখানে বসলাম। কিছুক্ষণ পরে একটা লোক আমাদের পাশের সিটে বসেছিলো। আমরা তার সাথে ভাব বিনিময় করলাম ও মজার সব কথা বললাম।

ট্রেন এখন ছেড়ে দিচ্ছে। আমার ট্রেন ছাড়া দেখে ছোট বেলার একটা কবিতার কথা মনে পড়ছিলো। সেটা হচ্ছে, ‘ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে, ট্রেনের বাড়ি কই? রাত দুপুরে ওই’। আসলে ট্রেন যাত্রাটা যে এতো মজার, এতো আনন্দের তা আমরা আর কখনো উপলব্ধি করতে পারিনি।

২.

একটা স্টেশনে গিয়ে থামলাম। কয়েক জন যাত্রী নামবে আবার কয়েকজন উঠবে। এখানে কিছু সময় বসলাম। ট্রেনের যে স্টাফ ওরা লোকজন কে ডেকে উঠাচ্ছে এবং বলছে তাড়াতাড়ি উঠুন। সবাই প্রায় উঠে গেছে, ট্রেন চালক এইবার ট্রেন ছাড়লেন। আমাদের মনে হচ্ছে কোনো ঊর্ধ্ব আকাশে গমন করছি। আসলে আমদের আনন্দের কোনো সীমা নেই। যে যার মতন উল্লাস করছি।

তারপর আরেকটা স্টেশনে আমরা আসলাম। এবার যে পরিমাণ যাত্রী উঠেছে, মনে হয় আর কোনো জায়গা নাই ট্রেনে। একটা পিপীলিকাও চাইলে উঠতে পারবে না। সবাই চাপাচাপি করে বসছে, গরম তো পড়ছে। বিশেষ করে মানুষ বেশি থাকলে গরমটা মনে হয় একটু বেশি লাগে। যতই কিছু হক ট্রেনের ভ্রমণটা আমাদের কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে।

আমাদের ইচ্ছে ছিলো সামনের স্টেশনটি আসলে কিছু কেনাকাটা করবো, খাবারের জন্যে। সেটা আসার পর আমাদের মধ্যে থেকে দুজনকে পাঠানো হলো। তারা কিনে চলেও আসলো। আমরা খেয়ে নিলাম সকলেই এক সাথে বসে। আমাদের আশপাশে যারা ছিলো তাদেরকেও আমন্ত্রণ করলাম তারাও আসলো।

৩.

আরেকটা স্টেশন চোখের পলকে চলে আসলো। এবার ট্রেনের জানালার পাশে বসেছিলাম। প্রকৃতির শোভা আর সবুজ বন-বনানীর সৌর্ন্দয দেখছিলাম। আমার মনে হয় সেদিনেই প্রকৃতি সেজেছিলো। আমি দেখছি আর বিস্মিত হচ্ছি। ভাবনায় পড়ে গেলাম। আসলে ট্রেন দিয়ে যাওয়ার সময় যা ঘটে, সে ঘটনাই ঘটলো। তো যাত্রী যে উঠাণ্ডনামা করছে, পায়ের খট-খট শব্দ শুনতে বুঝতে পাচ্ছি একজন বৃদ্ধ মহিলা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, তাকে দেখে মেয়েটি বললো, ‘এখানে জায়গা আছে, চলে আসুন, ট্রেন ছেড়ে দিবে’।

আমার মনে হয়েছিলো আমি যে ভাবনায় পড়েছিলাম কোনো স্বর্গের থেকে মনে হয় এই ডাক এসেছিলো। আমি একটু অবাক হয়েছিলাম বটে! কিন্তু ট্রেন ছেড়ে দিলো, আমি এবার এলোমেলো হয়ে যাচ্ছি কেমন যেনো।

৪.

আমি সুরটি শোনার পর আমার মনের আড়ালে গিয়ে তাকে খুঁজি। এই স্বর্গের পরীটার সাথে দেখা মিলে কি না। সেটার জন্যে ভীষণ ভাবনায় পড়েছি। এক বগি থেকে অন্য বগিতে যাচ্ছি। আমি সেই সুরটি ঝঙ্কার আমার কর্ণে বাজছে। কিন্তু আমি সেই মানুষটিকে খুঁজে পাইনি।

একেক বগিতে একেক রকমের কথা শুনতে পাই, কিন্তু সেই মধুমাখা সুরটি শুনতে পাই না। সেই মেয়েটির কথাও শুনতে পেলুম না, মনটা খুব বিষাদে ভরে গেলো। ট্রেন আর যাবে না সে থেমে গেলো জংসন স্টেশনে। একে একে সবাই নেমে গেলো। সেই বৃদ্ধ নারীটিও নেমে গেলো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়