প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২২, ০০:০০
বন্ধু কেমন আছিস? কী খবর তোর?
অনেকদিন হলো তোর কোনো জানি না।
তুই তো ছিলি ছাত্ররাজনীতির একজন সক্রিয় সদস্য,
দলের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সংগ্রামী মানুষ।
মিছিলে-মিছিলে স্লোগানে-স্লোগানে কত না
সংগ্রাম করেছিস ন্যায্য দাবি আদায়ের।
রাজপথ কাঁপানো বজ্রকণ্ঠের সেই স্লোগান,
তোর স্লোগানে মুখোর হতো রাজপথ।
মনে পড়ে...
তোর আগুন ঝরানো বক্তৃতায় মুগ্ধ হতো মানুষ।
কলেজের শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীরা বলতো-
শুভ একদিন বড় নেতা হবে, অবদান রাখবে
দেশ ও জাতির উন্নয়নে।
বন্ধু শুভ, কেমন আছিস তুই?
কতদিন হল তোকে দেখি না!
সেদিনের সেই মিছিলে গোলাগুলির এক পর্যায়ে
একটি বন্দুকের গুলি
তোর পায়ে এসে লাগলো।
তোকে হাসপাতালে নেয়া হলো।
ডাক্তার বললেন,
- রোগীকে বাঁচাতে হলে তাঁর পায়ের
হাঁটু পর্যন্ত কেটে ফেলতে হবে।
একটা সময় তোর একটি পায়ের হাঁটু
পযন্ত কেটে ফেলা হলো।
সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে
তুই তোর নিজ গ্রামে ফিরে গেলি।
তারপর থেকে তোর কোনো খবর জানি না।
বন্ধু তুই কেমন আছিস? কী খবর তোর?
তোর কি মনে পড়ে সুপ্রিয়ার কথা!
যাকে তুই খুব ভালোবাসতি।
একদিন সুপ্রিয়াকে বকুল ফুলের মালা
দিয়ে বলেছিলি,
- তুমিই আমার একমাত্র ভালোবাসা।
আমার এই বকুল ফুলের মালাটি গ্রহণ করো।
আর সুপ্রিয়া তোর কাছ থেকে মালাটি নিয়ে
মাথা নিচু করে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলো।
আমরা ভেবে নিয়ে ছিলাম নীরবতায় সম্মতির লক্ষণ।
কিছুদিন আগে সুপ্রিয়ার বিয়ে হয়েছে।
শুনেছি স্বামী-সংসার নিয়ে ভালোই আছে মেয়েটি।
আর আমি রোমানাকে বিয়ে করেছি।
তুইতো জানতি আমি রোমানাকে কতটা ভালোবাসি।
রোমানা প্রথম দিকে আমার প্রস্তাবে রাজি না হলেও
পরবর্তীতে রাজি হয়েছিলো।
বন্ধু শুভ, কেমন আছিস তুই?
তোর কি মনে পড়ে সুপ্রিয়ার কথা!
সেই কলেজ ক্যাম্পাসে বসে বন্ধুদের আড্ডা,
রাজপথের মিছিলে অগ্নিঝরা স্লোগান।
হয়তো মনে পড়ে... হয়তো পড়ে না...