সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২২, ০০:০০

গোপন চিঠি
অনলাইন ডেস্ক

-যদি আমি চিঠি প্রেমিকের ঠিকানায় চলে যেতাম?

-গেলে তো আরো মজা হতো। আমিই তো। তুমি তো আমারই হতে। তাছাড়া সবাই স্বপ্নপূরণের জন্যে আপনকে ছেড়ে যায় না। কেউ কেউ অন্যের ভালোবাসার জন্যে থেকে যায়। কথাটা শুনে নীলু আমাকে আরো জোরে চেপে ধরলো।

ছয় মাস আগের ঘটনা। ইচ্ছে করেই অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ফিরলাম। নীলুফা নীলু আমাকে দেখে চমকে উঠলো। তড়িঘড়ি কিছু একটা লুকিয়েছে। সেটা কি হতে পারে আমার ধারণা আছে। মনে মনে হেসে নিলাম। কঠিন স্বরে বললাম, কী করছিলা নীলু? আমতা আমতা করে বললো, মোবাইলটা যে কোথায় রেখেছি খুঁজে পাচ্ছি না। কিন্তু তুমি এই অবেলায়!

-শরীর খারাপ লাগছিলো তাই চলে এসেছি।

সেদিনই প্রথমবার অনেক রাত অবধি আমার চুল এলিয়ে দিতে লাগলো। আর আমি চোখ বন্ধ করে প্রশান্তি অনুভব করতে লাগলাম। আমি অবশ্য কিছুক্ষণ পর পর ডেসিং টেবিলের আয়না দিয়ে তার মৃদু মৃদু হাসি দেখে আমার সিদ্ধান্তে অটুট থাকলাম। কিছুদিন পর ইচ্ছে করেই রাতে দেরিতে ফিরলাম। নীলু তখন মন খারাপ করে বসে আছে। বললাম, কিগো মন খারাপ কেনো? আজ ফিরতে দেরি হলো তুমি একবারও কল করলে না যে? তোমার জন্যে মন খারাপ। আর মোবাইলে ব্যালেন্স নেই। তাই কল করতে পারিনি সোনা। দুটোই মিথ্যা কথা বলেছে নীলু। মানুষ মিথ্যা শুনতে তখনই ভালোবাসে যখন সত্যিটা আগে থেকে জানে। আমার ভিতরে খুশিতে আনন্দের বন্যা বয়ে যেতে লাগলো। আমি অসুস্থের ভান ধরলাম। সে ব্যাকুল হয়ে পূর্বের ন্যায় আমার খেদমত করতে লাগলো। ওর ভীষণ মন খারাপ। তবুও আমাকে বুঝতে না দিয়ে আবারও চুল এলিয়ে দিচ্ছে। আজ আমি চোখ বন্ধ করলাম না। আমি অপেক্ষা করছি। সে কখন ভারাক্রান্ত মন নিয়ে কখন আমার কাছে কিছু জানতে চাইবে। এক সময়ে অপেক্ষার প্রহর কাটলো।

-স্নেহার আব্বু।

-বলো, শুনছি।

-তুমি চিঠি লিখতে পারো?

-প্রশ্নটা শোনার পর আমি এতোটাই উৎফুল্ল হলাম যে ইচ্ছে করছিলো সঙ্গে সঙ্গে তাকে আলিঙ্গন করে চুমো খাই। এটার জন্যেই তো কত অভিনয় করেছি এতোদিন।

-না, পারি না।

তার খারাপ মন আরো খারাপ হয়ে গেলো। মুখটা কালো হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে এখনই হুট করে কালবৈশাখের ঝড় নামবে। আমি তাকে আর কষ্ট দিতে চাই না। বললাম, আহারে চিঠি প্রেমিক আইজগা এক্কেবারে চইল্লা গেছে। আর মনের কষ্টে চিঠি লিখতো নো। তুমিও কি নীলু বেচারাকে একখান রিপ্লাই চিঠি দিলে কী হইতো? আমার মুখে অপত্যাশিত কথা শুনে সে নির্বাক হয়ে অসহায়ের মতো আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। আমি আবার বলতে লাগলাম। এতো রোমান্টিক চিঠি লেখককে কেউ হাতছাড়া করে? তাছাড়া তোমার স্বপ্নের প্রেমিক পুরুষকে আমার জন্যে ছাইড়া দিলা। কামডা কি বালা হইলো?

-তার মানে তুমি?

সে অনেক বুদ্ধিমতি। আমি সঙ্গে সঙ্গে করে হেসে উঠলাম। নীলু আমাকে দুষ্টু একটা বলে আলিঙ্গন করে বললো, আমি আজকে জীবনের সবচেয়ে বেশি খুশি। কিন্তু এতো লুকোচুরি। দশটি চিঠি! আমাদের বিয়ের কয়েক বছর আগে তোমার ফেসবুক পোস্টের কথা মনে আছে? সেজন্যেই তো তোমাকে বিয়ে করা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়