প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০
সুইজারল্যান্ডের মনোবিজ্ঞানী ঔবধহ চরধমবঃ তাঁর চংুপযড়ষড়মু ড়ভ ঃযব ঈযরষফ গ্রন্থে দেখান যে ‘মানুষের মন একটি শক্তিশালী একক। এটি সবার মধ্যে সমানভাবে থাকে। শিশু অবস্থায় মনের প্রকাশ এক রকম, আবার প্রাপ্ত বয়সে অন্য রকম। শিশুরা সাধারণত আত্মকেন্দ্রিক হয়ে থাকে এবং তা ৭ বছর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে’।
এক্ষেত্রে বড়রা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সব কিছু মূল্যায়ন করে থাকে। পরিবারের বড়দের একটা প্রকট ভূমিকা থাকে শিশুদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে। তাই আমাদের শিশুদের প্রতি যতœবান হতে হবে। আমাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি শিশুদের জন্যে রচনা করতে পারে সুন্দর ভবিষ্যৎ।
* পরিবারের ছোটরা ভুল/অন্যায় কিছু করে থাকলে সরাসরি অভিযুক্ত না করে ভুলের অপকারিতা তার সামনে তুলে ধরতে হবে।
* একজন শিশুকে উৎসাহ দিতে হবে যাতে করে তার ক্যাপাসিটির সর্বোচ্চটা সে করতে পারে, তবে কখনো নিখুঁত হতে নয়। কারণ নিখুঁত হওয়ার কারো পক্ষে সম্ভব নয়, এমনকি আপনার জন্য তা অসম্ভব।
* শুধু একাডেমিক রেজাল্ট দিয়ে মূল্যায়ন না করে তার সার্বিক ভালো দিক মূল্যায়ন করতে হবে। কারণ কে কোন্ সাইডে ভালো করবে তা এখনো আপনার অজানা। শুধু ভালো শিক্ষার্থী হলে চলে না, ভালো জিপিএ হলে হবে না। ভালো মানুষ হওয়া আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
* আপনার শিশুকে জিজ্ঞাসা করুন সে তার স্কুলে আজ কি শিখেছে। নির্ভয়ে অভিবাবকদের সাথে ব্যক্তিগত সবকিছু যাতে শেয়ার করতে পারে সে পরিবেশ সৃষ্টি করুন। এটি করতে পারলে তার সার্বিক মঙ্গল সাধন এবং অযথাচিত বিপদ থেকে তাকে রক্ষা করা সম্ভব।
* সব শিশুর অবশ্যই কিছু শক্তিশালী দিক রয়েছে। তবে তা একই সাথে প্রদর্শিত না-ও হতে পারে। প্রয়োজন সময়ের এবং আপনার যতœ। আপনার যতœ তার আত্মবিশ্বাসের পারদকে ঊর্ধ্বমুখী করে তুলবে।
* উপহাস পেয়ে যারা বড় হয়, তারা বড় হয়ে ভীতু হয়। সমালোচনার মধ্য দিয়ে বড় হলে সে অপরের নিন্দা করতে শিখে। আপনার সন্দেহের তীর তাকে প্রতারণা করতে পারদর্শী করে তুলে। বিরোধের পরিবেশ শিশুদের মধ্যে জিঘাংসার জন্ম দেয় এবং শত্রুতা শেখায়।
* উৎসাহ পেলে শিশুরা আত্মবিশ্বাসী হয়। শিশুর প্রশংসা তাকে অন্যের ভালো গুণগুলো ধারণ করতে সহায়তা করে এবং সুখী পরিবেশ তার মধ্যে ভালোবাসা ও সৌন্দর্যের মাহাত্ম্য তুলে ধরে।
* ধর্মীয় শিক্ষা, নৈতিকতা এবং মূল্যবোধের শিক্ষা একজন শিশু পরিবারের বড়দের থেকে পেয়ে থাকে। তাই শিশুদের এ সময়টাতে সঠিক শিক্ষা প্রদান আপনার কর্তব্য।
* আপনার শিশুকে ভালোকাজের জন্যে পুরস্কার দিন। এক্ষেত্রে ভালো বই উপহার দিতে পারেন। একটি ভালো বই একজন শিশুর ভাবনাকে বদলাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন একজন শিশুর মাঝে এক অসাধারণ উপলব্ধির সমাবেশ ঘটাতে পারে, যা তাকে নতুন দিগন্ত উন্মোচনে অনুপ্রাণিত করবে। তাই সুযোগ পেলে শিশুকে নিয়ে ঘুরে আসুন।
সর্বোপরি একজন শিশুকে অন্যকে সাহায্য করার জন্যে সুযোগ করে দিন। তাকে সরি বলতে শেখান। অন্যকে ক্ষমা করার মাহাত্ম্য তার সামনে তুলে ধরুন। একটি সহযোগিতা মূলক কাজের ক্ষেত্র গড়ে তুলুন যা একজন শিশু কে নেতৃত্ব দিতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি নিজের দেশের কল্যাণে যাতে সে একজন আদর্শবান এবং ভালো নাগরিক হয়ে গড়ে উঠে সে দিক্ষা দিন।
আমাদের বড়দের/অভিবাবকদের সার্বিক সহযোগিতা আমাদের ছোটদের/শিশুদের জন্যে রচনা করতে পারে আমাদের কাক্সিক্ষত তাদের জন্যে সর্বোচ্চ কল্যাণ। তাই শিশুদের জন্যে যতœবান ও মনোযোগী হওয়া আমাদের বড়দের অপরিহার্য দায়িত্ব।
তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া, সাইকোলজি অফ দ্যা চাইল্ড-জ্যা পিয়াজে, গুগল।