প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
বিচ্ছেদ শব্দটা মনে মনে বারকয়েক আওড়ে নিলো ¯িœগ্ধা। আসলেই কি সে বিচ্ছেদ চাইছে? নাকি চেপে রাখা অভিমান প্রকাশ করে সম্পর্কটাকে আগের মতো সুন্দর-সাবলীল করতে চাইছে? প্রশ্নের উত্তর খুঁজে না পেয়ে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে সামনের চেয়ারে বসে থাকা ছেলেটির চোখের দিকে তাকিয়ে তাকে ফিরতি প্রশ্ন করলো
-একটা সুন্দর সম্পর্ক কীভাবে ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায় বলো তো?
উত্তরের বদল ফিরতি প্রশ্ন পেয়ে বিরক্তিতে চোখ-মুখ কুঁচকে ফেললো মাহি। মাহিকে চুপ থাকতে দেখে ¯িœগ্ধা নিজেই বললো
-চেপে রাখা রাগ-অভিমান আর অভিযোগ এর জন্যে।
মিনিট ছয়েক নীরব থেকে ¯িœগ্ধা পুনরায় বলা শুরু করলো তাদের প্রেমের শুরুটা কীভাবে হয়েছিলো, কত বেহিসাবি কথা হতো তাদের রাত-দিন। কারোর তখন ব্যস্ততা কাজ করতো না। হাজার কাজের চাপ থাকুক প্রিয়তম/প্রেয়সীকে গুরুত্ব দেয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিলো তখন। কিন্তু কেনো জানি একসময় তাদের মধ্যকার প্রেম, একজনের প্রতি আরেকজনের আকর্ষণের পরিমাণ, ভালোবাসা, কথা বলার আকাক্সক্ষা সব কেমন কমে আসছিলো। যেখানে একঘণ্টা কথা না বলে কেউ থাকতে পারতো না সেখানে আজ দু-চার দিনেও কেউ কারোর খোঁজ নেয়ার প্রয়োজন মনে করছে না। কাজের চাপ, ব্যস্ততা, সমস্যা, পরিস্থিতি সব কেমন প্রেমানুভূতির চাইতে বেশি গুরুত্ব পেতে শুরু করলো।
কেনো? কিছু মিথ্যে অভিমান, অমূলক অভিযোগের জন্য! কি অদ্ভুত! তাই না মাহি?
যেখানে আমাদের আত্মিক বিচ্ছেদ হয়েই রয়েছে সেখানে আর কিসের বিচ্ছেদ চাইছো তুমি মাহি?
বলবে?
মাহি কি বলবে, কি করবে ভেবে না পেয়ে ¯িœগ্ধার চোখে তাকিয়ে রইলো। আসলেই তো তাদের আত্মিক বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে!
কি করবো এখন আমি? ছেড়ে দিবো ¯িœগ্ধাকে? আমিও কি বিচ্ছেদ চাইছি? নাকি এই মেয়েকেই আঁকড়ে ধরে বাকি জীবন কাটাতে চাইছি? এসব ভাবতে ভাবতেই একসময় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো মাহি। যেখানে একটা সম্পর্কের আত্মাই নেই সেখানে এই সম্পর্কটা বয়ে বেড়ানোর কোনো মানে নেই। সম্পর্কের বোঝার চাইতে বিচ্ছেদই শ্রেয়! নিজের দিকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা করলো না মাহি। চলে গেলো। ইশ! যদি সে একবার পেছন ফিরে তাকাতো! তাহলেই দেখতে পেতো তাকে আপন করে পাওয়ার কতখানি ইচ্ছে নিয়ে ¯িœগ্ধা তার দিকে অপলক তাকিয়ে রয়েছে! সে তো বিচ্ছেদ চায়নি। মৃত আত্মাটাকে জাগাতে চেয়েছিলো মাত্র। ইচ্ছার পরিপ্রেক্ষিতে কি মিললো!
বিচ্ছেদ!