সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ভরা থাক স্মৃতির পাতায়
বাসুদেব মজুমদার

ভালো লাগার জগৎটা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। একে একে চলে যাচ্ছেন প্রিয় মানুষগুলো। খাঁটি মানুষের সংখ্যা কমে আসছে। এ কথাটা অপ্রিয় হলেও সত্য। প্রগতিশীল সংস্কৃতির জগতে সংগ্রামী পুরুষ ছিলেন পীযূষদা। আমার সাথে পীযূষদার পরিচয় প্রায় ২৫ বছর পূর্বে। পীযূষদার ছোট বোন বিউটি রায় চৌধুরীর সাথে আমাদের পারিবারিক গভীর সর্ম্পক ছিলো। বিউটিদের মাধ্যমেই পীযূষদার সাথে আমার প্রথম পরিচয় কত দিন কত সময় আমরা অর্থাৎ পীযূষদা, ব্যাংকার রণজিৎ দা সন্ধার পর একত্রে বসে আড্ডা দিয়েছি, এজন্যে আমাদের বন্ধুমহলে আমাদেরকে অনেকেই ত্রিরতœ বলতো। আজ সবই স্মৃতি।

পীযূষদা কাটিয়েছেন বিলাসবিবর্জিত সুন্দর জীবন। নানাবিধ সমস্যা-সংকুল অবস্থার মধ্যে থেকেও তিনি সদা হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন। তিনি কখনও গ্রামের কথা ভোলেননি। যে পরিবেশ থেকে উঠে এসেছেন, সে কথাও কখনো বিস্মৃত হননি। তাঁর মধ্যে সৌহার্দ্য, হৃদ্যতা, সম্প্রীতির সমন্বয় ছিলো। জ্ঞানচর্চার শৃঙ্খলাবোধের কারণেই পীযূষ দা তাঁর অনুভূতিও আহরিত জ্ঞানের সঙ্গে নিজের সৃজনশীল জ্ঞানানু ভূতিকে সমন্বিত করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কবিতা লিখেছেন। গান লিখেছেন, নিজের গানে সুর করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তা পরিবেশন করেছেন। বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদকে তিনি সন্তানজ্ঞানে লালন পালন করেছেন। প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে কবিতা আবৃত্তি শিখিয়েছেন। গান শিখিয়েছেন এবং তাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন সময় নিজ দায়িত্বে অনুষ্ঠানও করেছেন।

তিনি বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চাঁদপুর জেলা সংসদে দীর্ঘ ৮ বছর সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। একটি প্রগতিশীল ধারার সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সংগ্রামরত উদীচীর শিল্পীকর্মীদের সাথে দায়িত্বশীল থেকে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। বিভিন্ন সময় সংগঠনের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জাতীয় সম্মেলনের সময় ঢাকায় তাঁর মেয়ের বাসায় আমি একরাত্রি যাপন করেছিলাম। পীযূষদা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করে গেছেন আমৃত্যু। যখনই কোনো অনুষ্ঠান করেছি, সেখানে পীযূষদা সুন্দরভাবে অনুষ্ঠান সাজিয়েছেন। অনুষ্ঠান শেষ করে সঠিকভাবে সমস্ত হিসাব-নিকাশ বুঝিয়ে দিয়েছেন। এই গুণটির কথা সর্বজনস্বীকৃত। ইদানীং প্রগতিশীল সাজার হিড়িক পড়েছে সর্বত্র। মুক্তবুদ্ধি চর্চাকারীদের মধ্যেও চলেছে জাহির করার প্রতিযোগিতা, শিল্পচর্চার নামে দলাদলি, লেজুরবৃত্তি চলছে খটা করে। এই সময় প্রিয় মানুষগুলো একে একে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রণাম পীযূষদা, যেখানেই থাকেন ভালো থাকবেন।

লেখক : সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি লেখক পরিষদ, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়