প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
খোলা চুলে দৌড়ানো, ডানামেলা ধবল বকের সারিতে,
ডোবা পুকুরের কচুরিপানা তোলা বালকের ভিড়ে।
খেলার ছলে, ইরি ধানের বীজতলা ভেজানোর উল্লাসে,
লুঙ্গির ভাঁজে গোঁজা, ছোট মাছ নিয়ে ফিরে আসা ঘরে।
গরম জলের অপেক্ষাহীন, ঝুপঝাপ ডুব পুকুরে।
কনকনে শীতে, থরথর কেঁপে, মাটির উনুনের উষ্ণতায়
চারিপাশে বসে মেলে ধরা হাতের আঙুলের আলিঙ্গনে।
ভোর হতেই কলসি হাতে রসের অপেক্ষায়
গল্পে বিভোর, গাছিদের খেজুর বনের তলে।
নির্বাচনী প্রার্থীর মিছিলের স্লোগান শেষে
উঠোনের জনসমাবেশে ফেলে রেখে চা, মুড়ি
বয়ঃসন্ধিকালের অভ্যাসে, রুদ্ধ ঘরের জানালার ফাঁকে
চেয়ে থাকা দুটি চোখে, তাকানোর মোহে।
সময় শেষে দৌড়ে স্কুলে যাওয়া পথ পানে।
টিফিন বিরতিতে, মেয়েবেলার গল্প বলে
হেসে লুটে পড়া সখিদের নিত্য আলাপনে।
সুপারি গাছের গায়ে, কলমের আঁচড়ে লেখা
দুটি কাছের মানুষের নামের প্রথম অক্ষরে।
শুকনো মাঠে বিকালের গোল্লাছুট খেলার ক্লান্তিতে।
বেঁধে রাখা খড়ের আঁটিতে লম্ফঝাঁপের অস্থিরতায়।
সরষে ফুলের আড়ালে চিঠিপড়া সইয়ের উৎসুক চোখে।
ন্যায়ের পক্ষে আঙুল তোলার নির্ভীক শাসানিতে।
শিক্ষকের ভারি ব্যাগ বহনে কাড়াকাড়ি বন্ধু মহলে।
মোটা চশমা খুলে, দুচোখ বুজে, খুঁজে ফিরি আজও
আমার চৌদ্দ বছরের হারানো দুরন্ত কৈশোর।