প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
তব অমল পরশ-রস শীতল শান্ত
পুণ্যকর অন্তরে দাও।
তব উজ্জ্বল জ্যোতি বিকাশি হৃদয়
মাঝে মম চাও।।
মনে পড়ে “ন হন্যতে’র” কথা। মৈত্রী দেবী কবিগুরুর পায়ের উপর মাথা রেখে কেঁদেছিলেন। ওই জায়গাগুলো চোখ বুঁজে অনুভব করতাম। আফসোস হতো খুব! কেনো আমি মৈত্রী দেবীর মতো তাঁর ¯েœহ-সংস্পর্শে আসতে পারিনি!
পর মুহূর্তে নিজেকে বুঝিয়েছি এইতো তাঁর সৃষ্টির মাঝে রোজ তাঁকে অনুভব করি। তাঁর ছায়ামূর্তি যে হৃদয়ের সিংহাসনের পরম পূজনীয় স্থানে পূজিত হচ্ছে ভালোবাসায়। এইতো অনেক বড় পাওয়া।
সেই আফসোসটাকে আবারও জাগিয়ে দিলো শ্রদ্ধেয় কবি মুহাম্মদ ফরিদ হাসান সম্পাদিত ‘রবীন্দ্রনাথ ও চাঁদপুরের মানুষেরা’ বইটি।
যে কালীবাড়ি রেলস্টেশন রোজকার পথ, এই স্টেশনে প্রাণের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছিলেন! এখন তো আমি যতোবার স্টেশনে যাবো তাঁকে অনুভব করবো যেমন করে শান্তিদেব ঘোষ গান গাওয়ার সময় তাঁকে বিশেষভাবে অনুভব করেছিলেন!
আফসোস হয় ভীষণ, আমি কেনো চিত্রনিভা, শান্তিদেব কিংবা কালীমোহন অথবা সাগরময় ঘোষ না! আমি কেনো রবীন্দ্র-যুগের কেউ না। কেনো আমি সাগরময় ঘোষের মতো বলতে পারি না...
‘যদি কেউ প্রশ্ন করে এই পৃথিবীতে জন্মে তুমি কি পেলে? আমার উত্তর রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথ আর রবীন্দ্রনাথ।’
কেনো তাঁর সত্তরতম জন্মজয়ন্তীতে শান্তিনিকেতনের শালবীথিকার মাথার উপর সীমাহীন আকাশের নিচে, চন্দ্রালোকে বসে তাঁর মুখ থেকে ‘সতী’ কবিতার আবৃত্তি শুনতে পারিনি!
সাগরময় ঘোষের ভাষাতেই নিজেকে শান্ত¡না দিই, সৃষ্টিকর্তা আপন সৃষ্টির মধ্যেই স্বপ্রকাশ। নাই-বা হলো তাঁকে চাক্ষুষ দেখার সৌভাগ্য। তিনি হৃদয়ে ভালোবাসায়, শ্রদ্ধায় লালিত হোক।
শ্রদ্ধা রইলো কালীমোহন ঘোষ, মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন, শান্তিদেব ঘোষ, চিত্রনিভা চৌধুরী, আল্পনা শিল্পী সুকুমারী দেবী, যাযাবর ও সাগরময় ঘোষের মতো চাঁদপুরের কৃতী সন্তানদের প্রতি। যাঁরা কবিগুরুর ভালোবাসা ও ¯েœহ সংস্পর্শে আসতে পেরেছিলেন।
বিশেষ শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা কবি মুহাম্মদ ফরিদ হাসানের প্রতি বইটি উপহার দেয়ার জন্যে। আর এতো সুন্দর করে সবকিছু তুলে ধরার জন্যে।