শনিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুরে রাজনৈতিক মামলায় আসামীদের আটক অভিযান অব্যাহত। যুবলীগ, কৃষকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫ নেতা-কর্মী আটক
  •   ছেঁড়া তারে প্রাণ গেল যুবকের
  •   চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
  •   রাজধানীতে কচুয়ার কৃতী সন্তানদের সংবর্ধনা
  •   সম্প্রীতির চমৎকার নিদর্শন আমাদের বাংলাদেশ --------------জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

মিশরে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন

আফছার হোসাইন ॥
মিশরে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন

‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনব হাসি সবার ঘরে’ প্রতিপাদ্যে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মিশরের কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে পালিত হলো স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস।

রোববার ১৭ মার্চ প্রত্যুষে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিক ভাবে উত্তোলন করার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি সূচিত হয়। রাষ্ট্রদূত মিস সামিনা নাজ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীত সহকারে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করেন।

দুপুরে দূতাবাসের হল রুমে শিশির কুমারের সঞ্চালনায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রুহের মাগফেরাত, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করার পর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা থেকে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনান যথাক্রমে দুতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) মোঃ ইসমাইল হুসাইন, দূতালয় প্রধান আতাউল হক ও ২য় সচিব শিশির কুমার ।

দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা থেকে প্রেরিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হওয়ার পর বিশেষ আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ শুরুতেই সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, যাঁর মহান নেতৃত্বে ১৯৪৮-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং সকল সংগ্রামে বাংলার মানুষ শোষণ, নির্যাতন, বঞ্চনা ও স্বাধিকার আদায়ে সোচ্চার হয়েছিল। রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে দিয়েছেন একটি দেশ, পতাকা ও মানচিত্র। তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বের গুণে তিনি কেবল বাংলার অবিসংবাদিত নেতা হিসেবেই পরিগণিত হননি, নিজেকে তিনি তৎকালীন বিশ্বের একজন মহান নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।

রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা ছিল অপরিসীম। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে শিশুদের জন্যে নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করার নতুন শপথ নিতেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ১৯৯৬ সাল থেকে দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।

জাতিসংঘ শিশু সনদের ১৫ বছর আগে বঙ্গবন্ধু শিশু আইন প্রণয়ন করেন ১৯৭৪ সালে। রাষ্ট্রদূত আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বঙ্গবন্ধুর অসামান্য গৌরবময় কর্ম ও রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস থেকে প্রতিটি শিশু শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং তাদের মাঝে চারিত্রিক দৃঢ়তার ভিত্তি গড়ে উঠবে।

রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে আরো উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী, সমৃদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে দৃঢ় পদক্ষেপে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে চালিত করছেন। গত ১৫ বছরে টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিক এন্ড ব্যাংকিং রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ২,৮২৪ মার্কিন ডলার। গত ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ বার্ষিক ৬% প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস, কায়রো বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় মিশর প্রবাসী বাংলাদেশী শিশুদের অংশগ্রহণে বয়সভিত্তিক চিত্রাঙ্কন এবং রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ প্রতিযোগিতায় বেশ ক'জন ছোট শিশু-কিশোর অত্র দূতাবাসে তাদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা জমা দেয়। রাষ্ট্রদূত প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিশরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বাংলাদেশী শিক্ষকবৃন্দ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশী কর্মকর্তাবৃন্দ, মিশরে প্রসিদ্ধ বাংলাদেশী ব্যবসায়ী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীবৃন্দ, পেশাজীবী, শ্রমজীবীসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সকলকে রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে বাঙালি ঐতিহ্যে ইফতার ও ডিনারের ব্যবস্থা করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়