প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
স্পেনে ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস’ পদক প্রদান
বাংলাদেশ দূতাবাস, মাদ্রিদে দূতাবাসের শ্রম উইং-এর উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় 'আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস' উদযাপন করা হয়েছে এবং একই সাথে উক্ত অনুষ্ঠানে স্পেন থেকে বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রেরণে শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে 'আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পদক' প্রদান করা হয় । দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ছিল 'প্রবাসী কর্মীরা উন্নয়নের অংশীদার/সমুন্নত রাখবো তাদের অধিকার'। দিবসটি উপলক্ষে দূতাবাসের মিলনায়তনে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ১৮ ডিসেম্বর (সোমবার) সকাল সাড়ে ১১টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানের সূত্রপাত হয়। অনুষ্ঠানে প্রবাসী গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পেনে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ, এনডিসি স্পেন প্রবাসী অভিবাসী কর্মী, তাদের সুহৃদ ও পরিবারের সদস্যবৃন্দসহ অভিবাসন কার্যক্রম ও কল্যাণে যুক্ত সকল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, জাতির পিতার অসামান্য নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। তার সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি উন্নয়নের সিঁড়ি বেয়ে। দেশের সার্বিক এই অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসী কর্মীদেরও রয়েছে অসামান্য অবদান। স্পেনে বসবাসরত প্রায় ৬০ হাজার প্রবাসী তাদের প্রেরিত রেমিটেন্সের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করছেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সারা বিশ্বের অর্থনীতির মত বাংলাদেশের অর্থনীতিও কিছুটা চাপে পড়েছে। দেশের অর্থনীতির এই চ্যালেঞ্জ উত্তরণে তিনি সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি আরো জানান যে, স্পেন থেকে বৈধভাবে রেমিটেন্স প্রেরণ প্রতিবছর উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। স্পেন থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮৪.৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈধভাবে দেশে প্রেরণ করা হয়েছে। অধিক সংখ্যক মানুষ যেন বৈধভাবে দেশে রেমিটেন্স প্রেরণে উৎসাহ বোধ করে সেজন্যে দূতাবাসের পক্ষ থেকে ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পদক' চালু করা হয়েছে। এই বছর ব্যক্তি ক্যাটাগরিতে দিদারুল আলম প্রথম পুরস্কার এবং প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে আমানাহ মানি ট্রান্সফার প্রথম স্থান, ভিক্টরি মানি ট্রান্সফার ও ট্রাভেলস দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। তিনি এই পুরস্কার অর্জন করায় তাদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি প্রবাসীদের কল্যাণে দূতাবাস সবসময় সচেষ্ট রয়েছে মর্মে মন্তব্য করেন এবং স্পেনে নিরাপদ অভিবাসনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। স্পেন সহ ইউরোপের দেশগুলোতে দক্ষ কর্মীর চাহিদা রয়েছে এবং বৈধ প্রক্রিয়ায় ভিসা নিয়ে প্রবাসীরা যেন ইউরোপীয়ান ইউনিউয়নভুক্ত দেশগুলোতে আসতে পারেন সেজন্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে মর্মে তিনি সকলকে অবহিত করেন। স্পেন প্রবাসীরা যেন দূতাবাসের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে পারেন এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স যেন তারা সহজে পান সেজন্যে দূতাবাস আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে তিনি সকলকে অবহিত করেন। তিনি প্রবাসীদের পরিবার স্পেনে আনার কার্যক্রম সহজিকরণ করার জন্যে স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করার বিষয় অবহিত করেন। তিনি আরো বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে বাংলাদেশ সরকার নানাবিধ ভূমিকা রেখে চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে চালু করা হয়েছে পেনশন স্কিম , যার মধ্যে প্রবাস স্কিম চালু করা হয়েছে শুধুমাত্র প্রবাসীদের কল্যাণে। প্রবাসীরা উক্ত স্কিমে নিজে অংশগ্রহণ করতে পারেন অথবা পছন্দ অনুসারে অন্য যে কোনো স্কিমে নিজের কোনো নিকটাত্মীয়ের পক্ষেও অংশ নিতে পারেন। তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন 'সোনার বাংলা' গড়ে তোলার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি উন্নত দেশ গড়ার 'রূপকল্প ২০৪১' বাস্তবায়নে। তিনি উক্ত লক্ষ্য বাস্তবায়নে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।