প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। পৃথিবীর সৃষ্টি থেকেই সব শ্রেণী-পেশা ধর্মণ্ডবর্ণ নির্বিশেষে সবারই জানা। কিন্তু এই জানা কথাটি আমরা বাস্তবে প্রয়োগ করি ক'জনা। দুর্ভাগ্যজনক হলে বাস্তব সত্য, আমার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশেই সর্বোচ্চ এর প্রাদুর্ভাব। অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে বাধ্য, আমার যে দেশে বসবাস সেই স্পেনে তার শক্ত অবস্থান।
নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদের ভাষায় "তারা নিজেদেরকে এমনভাবে উপস্থাপন যেন ধোয়া তুলসী পাতা, একমাত্র আমিই শুধু তিতা নিম পাতা ! তবে আমি তিতা হলে আমার দ্বারা কারো কখনো কোনো ক্ষতি হয়নি। আর এ জন্যেই তোমাদের শত চেষ্টা প্রচেষ্টাও আমার জীবনে নিয়ে আসতে পারেনি কোনো মৃত্যু কিংবা দুর্গতি।''
তাদের আবার একাধিক লম্বা ডিগ্রি-সার্টিফিকেট। অথচ এ লম্বা ডিগ্রি-সার্টিফিকেট কোনোটিই সহায়তা করতে পারেনি উন্নত বিশ্বের উন্নত কোনো সামনের দরজায় প্রবেশের পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে। পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকলেও সমস্যা ছিল না, যদি তাদের শিক্ষা এবং সার্টিফিকেট উন্নত দেশের উন্নত পরিবেশ তাদের উন্নতি করতো এবং হালাল উপার্জনের মাধ্যম হতো। আমার সবচেয়ে কষ্ট হয় তাদের বাবা মায়ের জন্যে, যারা লালন পালন করে শিক্ষিত করে ১০/১৫ লাখ টাকা অবৈধ পুঁজির বিনিময়ে খুন-ডাকাতির মাধ্যমে উপার্জন করার জন্যে। অথচ এরা যদি পৃথিবীতে চিরস্থায়ী বসবাসের সুযোগ পেতো, তাদের এই পশুসুলভ আচরণে প্রকৃতিই তাদের কাছ থেকে বিদায় নিতো।
পরিশেষে আমি আমার পিতা ও মাকে যেন আমার মৃত্যু পর্যন্ত জীবিত রাখেন এবং হালাল উপার্জনের মাধ্যমে তাদের যে কোনো ইচ্ছা যেনো পূরণ করতে পারি এ আশাই মহান আল্লাহর কাছে করছি। সেই সাথে আল্লাহর কাছে তাদের জন্যেও দোয়া করি, তারা যেন সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে এ রকম দু-একটি কাজের জন্যে সমস্ত উপার্জনকে হারাম না করে। আমি সব সময় মহান আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করি আল্লাহ কর্তৃক প্রাপ্ত নেয়ামত যেন অব্যাহত থাকে।
ধন্যবাদ কিংবা ভালোবাসায় কোনোদিন সেই ঋণ শোধ করতে পরবো না আমার পরিবার-ভাই-বোন, সংবাদ মাধ্যম স্পেনের মাদ্রিদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আমার প্রিয় সবার প্রতি।
আমার এই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় তিনটি বছর হারিয়েছি। কিন্তু এমন প্রাপ্ত শিক্ষা আমার জীবনের ত্রিশ বছরে অর্জন করা সম্ভব হতো না। যার ফলে মহান আল্লাহর রহমতে এখন আমি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি সাহসী ও শক্তিশালী। আজ থেকে আমার কাজ হবে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এখন আর আমার হারানোর কিছু নেই। আমার এই ফিরে আসার মাধ্যমে ব্যথা কিংবা বেদনা, সবার সব পাওনা মিটিয়ে দিতে পারি ষোল আনা।
আমার এই লেখার মাধ্যমে সতর্ক করার চেষ্টা করেছি, কারো নাম কিংবা বংশ উল্লেখও দরকার নেই। কেউ যদি নিজ দায়িত্বে তার ওপর নিয়ে যায় তখন আর নীরব থাকব কী করে। আমার ভদ্রতা কিংবা নীরবতা পারিবারিক শিক্ষা, এটা কিন্তু দুর্বলতা নয়।
লেখক : সাধারণ সম্পাদক, ইউরোপ বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব।