প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
সুগন্ধার পাশে
সুগন্ধার পাশে এই নীরব সকালে
ধূলিমাখা পায়ে এসেছে নেমে এই শান্তি
শীতের আকাশ ছেড়ে বসন্তের মিঠে হাওয়া
ধোঁয়াওঠা জলে যেতেছে ভেসে মাছধরা নাও।
এপাশে সরু পথের দুপাশে ভাঁটফুল,
সাদা সাদা রঙে ছড়িয়ে গন্ধ বাতাসে বাতাসে,
গাছের আড়ালে একটানা মনে চলেছে ডেকে বসন্ত বাউরি,
তবু নীরবতা, প্রার্থনার ধ্যানের মতো নিরিবিলি চারিদিক।
সবুজ-স্বাধীন পথে হেঁটেছে চলে এইদিন
আঁচলের খোটে বেঁধে, ক্ষেতে বোনা লালশাক,
খসায়ে করুণ খোঁপা চেয়ে আছে দূরে
মিছামিছি নেই কোনো জীবনের তাড়া তার।
আমাকে এনেছে ডেকে এই নির্জনতা
সুগন্ধার পাশে
ভালোবেসে পৃথিবীর আর সব মানুষের মতো
কত শতাব্দী আগে কত শান্ত-মৌন ধ্যানে
হারিয়ে গিয়েছে যারা আমার মতোন এইখানে এসে।
নদীর জলের ঢেউয়ে জেগেছে যেনো তরুণ রৌদ্র
মৃদু হাওয়ায় ভাসে জলের অপূর্ব সংগীত,
মনে হয় সারাদিন শুনি যেনো এইসব তান,
তোমার সৃষ্টির সুরে
মৃত্যু অবধি চলে যাবো যেই পথে,
ক্ষয়ে গেছে যা কিছু স্মৃতির ফলক
ইশারা আভাসে চিনবে না কেউ আমারে আর
মিশে যেতে যেতে এই ধূলিমাটি ঘাসে।
রচনাকাল : ৪/৩/২০২২
.
নির্লিপ্ত বিস্ময়ে
শেষ রাতে শেষ চাঁদ চুপিসারে
ডেকে নিয়ে গেছে তারে ইশারায়,
ধবল কাপড়ে ঢেকে গেছে মুখ তার,
রোগশয্যার জানালায় তরুণ নিমের হাওয়া
ভোরের ক্ষীণ আলোয় ভাঙে না বুঝি ঘুম আর,
মৃত শরীরের মন গেছে সরে,
সমস্ত ক্ষুধা আকাঙ্ক্ষার ওপারে যে অসীম আকাশ
পেয়েছে আহ্বান তার,
পুরোনো পৃথিবী, প্রতিদিন অকারণ যুদ্ধ,
তবুও ইচ্ছে থেকে যেতে আর ক’টা দিন
এইখানে মানব শরীরে।
থেমে গেছে আজ ইচ্ছার বেগ শীতের নদীর মতো,
প্রিয়জন, প্রিয় অগণন মানুষের ভিড়ে
শুধু অন্তর্গত পথে
ভেসে ওঠে সেই সব রমণীর কথা, ঘর-সংসার,
নিমগ্ন গোপনে,
সেই সব বীতশোক অন্তরদীপ্ত আগুনের ঘরে
দূর থেকে নেমে আসে নীল নক্ষত্রপুঞ্জ।
অঙ্গারের গন্ধে ছেয়ে যায় বুঝি দশদিক,
বসন্ত বেলা, তবু যেতে যেতে মহা গোধূলিতে
জীবনের যতিচিহ্ন
তবু মৃত্যু, তবু শান্তি
মুখ ঢেকে
নির্লিপ্ত বিস্ময়ে।
রচনাকাল : ০২/০৩/২০২২, ১৭ ফাল্গুন ১৪২৮