প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
মাঝারি শহর
আমাদের মাঝারি গোছের শহরে
যখন নিয়ন বাতি জ্বলে
রাতগুলি কেমন ফর্সা হয়ে যায়
তখন ঢাকা ঢাকা লাগে
যখন আমাদের রিকশার শহরে
অটো, সিএনজি, বাস, ট্রাক মিলে
চিত্রলেখার মোড়ে জ্যাম লেগে যায়
তখন ঢাকা ঢাকা লাগে
যখন আমাদের এক রাস্তার শহরে
দুই দিক থেকে জয় বাংলা আর জিন্দাবাদের ঝড় ওঠে
লাঠি বাঁশ কিরিচ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়
মাতৃপীঠ বালিকা বিদ্যালয়ের মেয়েরা
চাচা-মামাদের শক্তিমত্তা দেখে আর কাঁদে
তখন ঢাকা ঢাকা লাগে।
যখন বৃষ্টি হয়ে হাঁটুপানি জমে
মানুষ শাড়ি উঁচিয়ে হাঁটে
ময়লায় শহর সয়লাব হয়
গ্রীন সিটি ক্লিন সিটির বিজ্ঞাপন দেখি
তখন ঢাকা ঢাকা লাগে
আমাদের শহরও একদিন ভরে উঠবে সীসায়
কারখানায়, বর্জ্য,ে
বিশ্ববিদ্যালয়, উঁচু উঁচু ভবন, চিপাগলি আর মশায়
আশপাশের গ্রামগুলি বিলীন হবে
উত্তর-দক্ষিণ ভাগ হবে
কখনো রাজধানী হবে না।
.
বৃক্ষের জীবনে বসন্ত আসে
শীতে যখন পাতা ঝরে, এমন করে
একবার ডানে একবার বামে
মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে
যেনো কেটে যাওয়া ঘুড়ি
বেণী দুলিয়ে হেঁটে যাওয়া এক কিশোরী
আবার কোনো কোনো পাতা ঝরে
ক্ষেপণাস্ত্রের মতো
মাছরাঙা পাখির মতো
মাটির বুকে বোমার মতো।
কেউ কেউ উড়ে যায় দূরে
বিরহী সুরে
কোনো কোনো পাতা ঝরে, গভীর মমতায়
এই পৃথিবীর মানুষের মতো।
সময় এক বৃক্ষ যেনো
যার সময় শেষ হয় সে যায় ঝরে
বৃক্ষের বন্ধন ছিন্ন করে
যারা এতোকাল আটকে ছিলো ডালে ডালে
ফুলে ফলে শোভিত হয়ে
দিনরাত হওয়ায় দুলে দুলে
আমাদের পাতার জীবন
শীত আসে, শীত যায়
পাতা ঝরা শেষে
বৃক্ষের জীবনে বসন্ত আসে।
.
আমার সমাধি
আমাকে অজ্ঞাত নির্জন কোনো পাহাড়ে কবর দিও
নচেৎ লোকেরা আমার জিয়ারতে কবিতা দাবি করবে
কবিতার জন্য সিজদায় পড়ে রইবে
দোয়া-দরূদের বদলে কেবল কবিতা পাঠ করবে।
যদি আমাকে লুকোতে না পারো
সাগরে ভাসিয়ে দিও, হাঙর নিবে খেয়ে
ওরা সভ্য হয়ে যাবে
ডলফিনের সাথে সৎসঙ্গ হবে।
অথবা, পুড়িয়ে দিও
ছাই ভষ্ম ছিটিয়ে দিও বাতাসে
তোমরা বাতাসে কান রেখো
মেঘপানে চেয়ে থেকো।