প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
আলাদিনের দুঃখ
ধীর-পায়ে যে রাত নেমে গেছে অনন্তে
তার পিছু হাঁটি সর্বত্র
আমি আর সেই গল্পের আলাদিন
প্রদীপ নিয়ে ঘুরি জলে-জঙ্গলে
মানুষ হৃদয়ে-
কাছে থাকি প্রতিটি মন্ত্রে
শুনি জাদুধ্বনি- ‘আদেশ করুন জাঁহাপনা!’
আমি আদেশ করতে পারি না
অগণিত শকুন খেয়ে নেয় চোখ
কুকুর স্বভাবে বাড়ে দাঁতাল মানুষ,
আর যান্ত্রিক চিৎকার...
ক্ষয়িষ্ণু মানুষ ছায়াশরীর হলে
আমি নীরব-নক্ষত্রে হারাই
আলাদিন ফেরে না গ্রামে!
.
ভুল মানুষ
ভুল মানুষ প্রায়ই হারায়
গোলকধাঁধা, মিথ্যা বারান্দায়
সহজেই কতজন ডুবে আকণ্ঠ
ভুল মানুষ বেদনা ওড়ায়।
অলিগলি ভরা শ্বাপদণ্ডশ্বাস
মৃতরা হাঁটে, সাঁতরায় প্রাণপণ
ঠিকানা নেই, পৌঁছে না তীরে
উড়ে যায় পাখি, শূন্যতায়...
ভুল মানুষ নদী রাখে দূরে
না মেঘ না পাতা
না কেউ জানে নাম
ভুল মানুষ প্রায়ই হারায়
যে হারায় সে জানে না
যে আছে সেও জানে না
চারদিকে ঢেউ বাড়ে,
আর ডুবন্ত মানুষ...
.
আত্মকথন
নিজেকে রাখি নির্মম অথবা প্রজাপতি ডানায়
নগ্ন পায়ে, বিক্ষত কোলাহলে
আত্মহননে রাখি বুক, প্রতিদিন...
ভালোবেসে গেঁথে নিই বিষমাখা ছুরি।
নিজেকেই ডাকি সযতনে অথবা বিরাগ মুখে
বৃষ্টির ফোঁটায়, আগুন আঁচে
এবং মহাপ্লাবনের প্রতি ক্ষণে ক্ষণে
সযতনে নিত্য চুমু আঁকি মৃত্যুর ঠোঁটে।
নিজেকে রাখি গোপনে অথবা পতন বিচ্ছেদে
রক্তের শিহরণে, চিৎকারে আর্তনাদে
এবং সক্রেটিসের হেমলকে...
নিজেকে রাখি সবটুকু ঘৃণা ও ভালোবাসায়।
.
আদিম
চোখের কার্ণিশে বসা বসন্ত রোদ
আর সকৌতুক নিহত এক গোলাপের নিচে
মেয়েটির ঠোঁটে জ্বলে প্রগাঢ় চুম্বন
প্রাচীন সুরার পাশে পতিত পেয়ালা
ঢের নেশা তার চিবুকে জমা
নির্লজ্জ দেহ ছোটে হরিণী পিছে
নীলের সীমানা ছোঁয়া অসংখ্য ফানুস
খোদাই করে মন উল্কি আগুনে
মাতাল শরীর রাখে আদিম কিরিচে