মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |  
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

দেবদাস কর্মকারের কবিতা
অনলাইন ডেস্ক

প্রতীক্ষা জাগে প্রাণে

শুনেছি তার প্রথম ভোরের কথা

কল কল স্বরে যখোন যেতেছে বয়ে মধুছন্দা

অনায়াসে শরীর ঢেকেছে মেঘ বনের উপরে

ভেঙে গেছে ঘাট তবু সে দাঁড়ায় একা তৃণের প্রাণের কাছে।

তানিমা এসেছে নেমে ঠিক পাশে তার ফসলের মাঠ

মৃদু পায়ে মাড়িয়ে আঘাত ছায়া পড়ে চোখে মুখে চুলে,

সহস্র বছর ধরে এ মৃত্তিকা ভালোবেসে আছে বুঝি ধ্যানে,

তরুণ রোদের কাছে অর্জুনের মগ ডালে সুঁই চোরা পাখিটির মতো।

এসেছে গোধূলি বেলা আকাশের নীল গেছে ভেসে

এখোন শরীরে স্নায়ু শিরার ভিতরে জাগে ইচ্ছা কথা কহিবার,

হৃদয় ফেলেছে তার সন্ধ্যার ছায়া চন্দ্রাবলী জলে,

সারাজীবনের সব কথা দুঃখ রোমাঞ্চকর ইতিহাস।

তাহার আপত্তি জেনে কেটে দেই নিস্তব্ধ অপেক্ষার কথা

শুধু পড়ে থাকে চুপচাপ, প্রতীক্ষা, হৃদয়ের খামে

পড়ে থাকে সব নির্মাণ রাতভর নক্ষত্র আকাশে।

সময় ফুরিয়ে আসে ধীরে ফিকে হয় অরব বারতা

গভীর ঘুমের ভিতরে রাতভর কতো স্বপ্ন কুহক,

যেন পাড় ভাঙা কুলে যেখানে এখনও ঘাসে লেগে আছে

তার আঙুলের ছাপ, অপার্থিব প্রেমে,

মধুছন্দা জাগে মৃদু স্রোতে বটের ছায়ার পাশে

এই বুঝি শেষ হয় প্রতীক্ষার পালা, জীবন অথবা মৃত্যু

পাথর বাটির মতো, বাদুরের ডানা ছুঁয়ে ছুঁয়ে

রাত শেষে আসে মৃদু জ্যোৎস্না কুয়াশায় মোড়া নীলে।

রচনাকাল : ১৯/০৯/২০২২ ঢাকা, ৪ আশ্বিন ১৪২৯

যখোন তাকিয়ে দেখি

যখোন তাকিয়ে দেখি ভোরের আকাশে

কতো রং তার মিশে আছে মেঘে

কিছু তার খসে পড়ে নদীর উপরে,

কিছু কিছু ফসলের খেতে

কিছুটা দাঁড়ায় এসে উঠানের কোণে।

কোন এক প্রত্যুষ তরুণ রোদে দুরাগত হাওয়া

শীতের আমেজে তোমারে এনেছি ডেকে কাছে

কতো উচ্ছ্বাস স্বপ্নের দেশে, উড়ে পাতা অধীর বাতাসে

জীবন উঠেছে ফুটে আলোর ঝলকে হৃদয় অতলে।

এখোন আমারে ডাকে না কেউ আর সেই সব খানে

যেখানে বাতাসি দিঘি কুমারী চুলের রঙে

শৈলদাহ যেতেছে বয়ে অপরাহ্নে এসে

একবুক নিঃশ্বাস চেপে কাকে যে বলি আবেগের কথা

মুছে যায় যা কিছু পুরানো সব সময়ের স্রোতে

যে দিন বিলীন হবো শেষ প্রিয় নামে

নির্জন সেই রাত যদি হয় ঘন নীল

অথবা ভরে থাকে জ্যোৎস্না হলুদে,

দ্বাদশীর সেই রাতে আকাশে আসিবে বুঝিবা

চাঁদণ্ডকুয়াশার পাশে।

ছৈলার গোপন পাতার ফাঁকে ফুটেছে তারঙ্গ কতো

তার পাশে শৈলদাহ যেতেছে ভেসে নিরিবিলি রাতে

দাঁড়াই জীবন আড়াল করি আঁধারের পাশে

সেই রাতে তুমি যেন বহু দূরদেশে, চেয়ে দেখি

অনুরাধা জ্বলে আছে অজস্র নক্ষত্রের মাঝে

উজানি হাওয়ায় যেতে যেতে ভেসে।

রচনাকাল : ২৪/০৮/২০২২ ঢাকা। ৯ ভাদ্র ১৪২৯

মাথার উপরে মেঘে

হয়তো শোনেনি সে জীবনের অপরূপ ডাক

দুপায়ে মাড়িয়ে ধূলো পথের কিনারে চলে গেছে দূরে,

মাথার উপরে মেঘ নিরুজ্জ্বল সূর্য, পাশে তার অবারিত নীল,

এমোন সবুজ ঘাসে নরোম নদী ছুঁয়ে গেছে ভালোবেসে।

কোটি কোটি বৎসর মানুষের কতো না হৃদয়ের কথা

আনন্দণ্ডবেদনার ক্ষত, ঝরে যায় ফুলের বোঁটার মতো,

মুছে যায় কতো খেদ স্বপ্ন, নিমীল আঁধারে,

কতো স্মৃতি পরিপাটিহীন তবু তারে অযথা অন্বেষণ,

ভূত হয়ে বোনে বীজ চুপিসারে হৃদয়ের মাঠে,

যেতে যেতে কবরের কাছে কী যেন খোঁজে সে চাঁদের আকাশে?

সাফল্য ব্যর্থতা কখনও আসেনি অনায়াসে,

নেশাতুর চোখে ভালোবাসা নারী ও পুরুষে,

যখোন হঠাৎ কাঁপে মৃত্যু আঁধারে,

নিস্তব্ধ ঘুরঘুটে কোন এক অদ্ভুত ধ্যানী রাতে,

দূর নক্ষত্র লোক থেকে এসেছিল কোন ঐশী কথা,

শুধু বিশ্বাসের অলৌকিক গম্ভীর স্বরে

প্রেমের মতোই অধীর বাতাসে!

পথের কিনার ঘেঁষে সুবর্ণ নদীর কাছে

পড়ে আছে কতো অচেনা পায়ের ছাপ,

শুধু একবার মুখোমুখি এসে মিশে গেছে বহু বহু দূরে,

কতো রহস্য আমাদের ক্ষীণ জীবন বীণার তারে,

ধরাধরি করে চলেছে জীবন মৃত্যুর হাত পৃথিবীর পাশে!

মাথার উপরে মেঘে একবার যার দেখেছি মুখের আদল

ঈশ্বরের চেয়েও তার কথা খুব মনে পড়ে।

রচনাকাল : ১৩ আগস্ট ২০২২,ঢাকা, ২৯ শ্রাবণ ১৪২৯

মেঘের মতোন ভেসেছো আকাশে

অন্ধকারে কথা হয় একা একা মনে

ধ্যানের সময় গেলে সরে চারিদিকে শুধু কলরব

বনের পাতার আড়ে নামে শান্তির মতো নিরবতা

সব অবহেলা থেমে গেলে কে করে যেন আহ্বান

ছায়ার মতোন বুঝিবা সে ভাসে বাতাসে,

কোনদিন তারে দেখিনাই আমি

প্রিয়ার মতোই যেন সেই মধুরিত ডাক,

জীবনের কতোকাজ আছে পড়ে,

পুরনো হয়ে গেলে ধীর পায়ে আসে দুঃখের পদাবলী

নিতে চায় মন সুস্থ শরীরে নিভৃত মৃত্যুর স্বাদ।

পৃথিবীর বিহ্বলতা, বুকের ভিতরে কতো ইচ্ছের ঘূরণি

কেউ জানেনা সেখানে বাতাসের কতো হত স্বর

সংসার সরোবরে ঘুমন্ত ফুলের মতো থাকে ফুঁটে

ভালোবাসা ঘৃণা ক্ষমা বুকে লয়ে মেঘ রাতে থাকে জেগে।

সমস্ত জীবনের কতো জঞ্জাল ভুলচুক মিশে আছে মনে

এই মাটির শরীরে একদিন ছিল কতোনা স্পর্শ বৈভব

রক্ত মাংসের এই ঠুনকো আয়ুস্কাল যায় যদি থেমে

তেঁতুলের ঘন বনে শোনা যাবে কি সেই মধুরিত স্বর!

কতো সব প্রিয়তর মুখ অথবা সামান্য মানুষ যারা

একদিন ছিলো তারা আমারি চারিপাশ ঘিরে!

তাহাদের ছেড়ে অশ্রু ঝরায়ে দেখব তোমার মুখ

যে চির সখা হয়ে অনন্ত মেঘের মতোন ভেসেছো আকাশে?

৩১/০৫/২০২২ ঢাকা, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়