শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৩, ০০:০০

শখ থেকে জিয়া খানের কবুতরের খামার ও মিশ্র ফলের বাগান
কৃষিকণ্ঠ প্রতিবেদক ॥

শখের বসে কবুতর পালন শুরু করেন জিয়া খান। আর এ শখই এখন রূপ নিয়েছে বাণিজ্যিক খামারে। বর্তমানে তা থেকে ভালো উপার্জন করছেন তিনি।

জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই কবুতর পালনের শখ ছিল চাঁদপুর শহরের ওয়্যারলেস এলাকার মৃধা বাড়ি রোডস্থ মোঃ জিয়াউর রহমান জিয়া খানের। তিনি মূলত গিফট আইটেম ব্যবসায়ী। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও কবুতর পালন বন্ধ করেননি তিনি।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালে বাড়ির আঙ্গিনায় মিশ্র ফলের বাগান শুরু করি। চার বছরের মাথায় বিভিন্ন জাতের ফলন পেতে শুরু করি। আমার বাগানে ২০ প্রজাতির মিশ্র ফল গাছ রয়েছে। বর্তমানে জাম্বুরার ফলন এসেছে। আমার বাগানে মৌসুমি ফল আম, কাঁঠাল, লটকন, লিচু, আমলকি, পেঁপে, তেঁতুল, মাল্টা, লেবু, বেল, নারিকেল, সুপারি, রাম্বুটানসহ অন্যান্য বারোমাসি ফল রয়েছে। এছাড়া বিলাতি ধনিয়াসহ বাগানে উৎপাদিত ফল নিজের চাহিদা মেটিয়েও বিক্রি করে থাকি। কীটনাশক, ওষুধ, আনুষঙ্গিক খরচ ও শ্রমিকের মজুরি মেটানোর পরও আয় থাকে।

জিয়া খান জানান, মৌসুমি ফল এলে বাগানে ২ জন শ্রমিক কাজ করে থাকেন। তখন তাদের (শ্রমিক) দিন হিসেবে মজুরি দিতে হয়। আমি বাগান গড়ে তোলার পর স্থানীয় অনেকেই আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। পাশাপাশি একদিকে আমার নিজের আয় হচ্ছে, অন্যদিকে মানুষও ভেজালমুক্ত (ফরমালিন) ফল, শাক-সবজি পাচ্ছেন। আমি মনে করি, এতে মানুষের সেবা করাও যাচ্ছে। তাই ব্যবসার পাশাপাশি মিশ্র ফলের বাগান ও শখের বশত কবুতর পালন করছি।

১ যুগ ধরেই এ শখকে পুঁজি করেই খামার গড়ে তোলেন জিয়া খান। বর্তমানে তার খামারে ৪০ গিরিবাজ প্রজাতির কবুতর রয়েছে। যার প্রতিটির মূল্য চার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তার কবুতরগুলোর মধ্যে রয়েছে চুইনা, মার্কসি, জিরাগলা, সবুজগলা, লালগলা, বেনারস ও পাঙ্খি প্রজাতির কবুতর।

এ কবুতরগুলো পালনের জন্যে নিজ বাড়ির দ্বিতীয়তলায় তিনি তৈরি করেছেন আলাদা খামার। আর সেগুলোকে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই দিচ্ছেন নিয়মিত চিকিৎসাসহ অন্যান্য খাবার। জিয়া খানের এই খামারের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকা থেকে কবুতরপ্রেমীরা ছুটে আসেন কবুতর কেনার জন্যে।

জিয়া খান বলেন, ব্যবসার পাশাপাশি কবুতরের খামার করেছি। কবুতর পালন করে অল্প পুঁজিতে বেশ লাভ করে অতি সহজেই বেকারত্ব দূর করা যায়। অনেক বেকার যুবক এবং অন্যরাও আমার মতো খামার করে সফল হতে পারেন।

প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চাঁদপুর জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫৭০টি কবুতরের খামার রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, তারা জিয়া খানের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি এতে উদ্বুদ্ধও হচ্ছেন।

চাঁদপুর পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ আলমগীর গাজী বলেন, জিয়া খানের মতো অন্য যুবকরাও মিশ্র ফলের বাগান এবং কবুতর পালনে এগিয়ে আসলে স্বাবলম্বী হতে পারবে। এছাড়া এতে তারা মাদক থেকেও দূরে থাকবে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি অফিসার আয়শা আক্তার বলেন, কৃষির সাথে আমাদের সকলেরই লেগে থাকা উচিত। জিয়াউর রহমান তার নিজ আঙ্গিনায় মিশ্র ফলের বাগান করে নিজে উপকৃত হয়েছেন এবং সমাজের মানুষকেও উপকৃত করছেন। আমি মনে করি, প্রত্যেকের নিজ আঙ্গিনায় সবজি বাগান করা সময়ের দাবি।

জিয়াউর রহমান খানের পিতা দেলোয়ার হোসেন খান ও মাতা হোসনেয়ারা বেগম। তারা দুজনেই বর্তমানে মরহুম। তাদের বাড়ি মধ্য তরপুরচণ্ডী মৃধা বাড়ি রোডে। এটি চাঁদপুর পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ডের ওয়্যারলেস সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত। জিয়া খানের স্ত্রী মোসাম্মৎ পারভীন বেগম টুনু একজন আদর্শ গৃহিণী। সন্তানরা যথাক্রমে মোসাম্মৎ ইশরাত জাহান (অনার্সে অধ্যয়নরত), নুসরাত জাহান জয়া (এসএসসি পরীক্ষার্থী) ও উম্মে হামীমা অরূপা (৪র্থ শ্রেণি) এবং মোঃ হোসাইন ইবনে জিয়া (৩ বছর)।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়