শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

বাবুরহাট কলেজে ডিগ্রি ও অনার্স কোর্স চাই

মোখলেছুর রহমান ভূঁইয়া
বাবুরহাট কলেজে ডিগ্রি ও অনার্স কোর্স চাই

নোবেল জয়ী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বাবুরহাট স্কুলের মধুর সংযোগ শান্তি নিকেতনের। এই সংযোগ স্থাপন করেন বাবুরহাট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক, শিক্ষাবিদ সারদাচরণ দত্ত (১৮৬৯-১৯৬৫) আজও স্মরণীয়। এভাবেই জ্ঞানীজনরা কর্ম দিয়ে স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে থাকেন, থাকবেন। অনেক সময় মেধা-মননশীলতা কর্মদক্ষতা কর্মপরিবেশ থাকা সত্ত্বে ও যথাযথ উপলক্ষ না থাকায় নিজেদের অমর করে রাখা সম্ভবপর হচ্ছে না ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নাম লিপিবদ্ধ করার। সেই মাহেন্দ্রক্ষণটি ঝলঝল করছে বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদ ও স্থানীয় সচেতন সমাজের সামনে।

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে জ্বালো। একজন শিক্ষিত মা দাও, একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিব। জ্ঞানার্জনবিহীন মানুষ অধঃমৃতের ন্যায়। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় সাক্ষরতার হার প্রায় শত পার্সেন্টের দ্বারপ্রান্তে। আজকাল টিপসই দিয়ে কার্য সমাধান করা মানুষ প্রায় হাতেগোনা। সাক্ষরতার এমন সাফল্যজনক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সূদরপ্রসারী অদম্য ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগের সুফল। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে উপনীত পর্যায়ে। স্মার্ট বাংলাদেশকে স্মার্টভাবে রূপান্তর করতে শিক্ষার বিকল্প নেই।

উন্নত প্রযুক্তির সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে উচ্চশিক্ষার বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যেই বর্তমান সরকারের শিক্ষা কারিকুলামে ব্যাপক পরিবর্তন-পরিমার্জন-পরিসংশোধন এসেছে। সাথে সাথে শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা, শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আজ চোখে পড়বে ডিগ্রি ও অনার্স শিক্ষাদান কার্যক্রম। উচ্চশিক্ষার সুফলের সাথে সাথে স্থানীয় জীবনমান, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত, যা সমাজ ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা টেকসই উন্নয়ন অগ্রগতিতে দৃশ্যমান হয়।

চাঁদপুর সদর উপজেলার পৌরসভাধীন ঐতিহ্যবাহী প্রায় একশ’ পঁচিশ বছরের বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজ। এক কথায়, পারম্ভিকেই বলা চলে বাতির নিচে অন্ধকার! জেলায় ভৌগোলিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় চতর্মুখী সহজলভ্য অবস্থানে বাবুরহাট বাজার। এখানেই জেলার প্রধান শিল্পকারখানা বিসিক শিল্পনগরী, জেলা কারাগার, জেলা পরিষদ কার্যালয়, পুলিশ লাইনস্, একাধিক প্রাইমারি স্কুল, একাধিক কিন্ডারগার্টেন, চাঁদপুর পৌরসভাধীন বৃহৎ বাজার, প্রায় পনেরটি ব্যাংক, অসংখ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের কার্যক্রম। ফলে আগত বিভিন্ন জেলার মানুষের বসবাস এবং আশপাশের স্থানীয় জনগণের সন্তানদের পড়ালেখার কেন্দ্রবিন্দু বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজ। বর্তমানে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ কার্যক্রম চলমান। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া অভিভাবকরা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও এবং দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার মেধা-মননশীলতার অদম্য আগ্রহ থেকেও শিক্ষা ব্যবস্থার কাঙ্ক্ষিত সুবিধা না পাওয়ায় তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের অন্তরায়। উচ্চশিক্ষাবঞ্চিত অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতি একটু গভীর মমত্ববোধ, দায়িত্ববোধ সমাজ-সংস্কারে নিজেদেরকে উপনীত করার আরাধনার মানসে শিক্ষা বিস্তারে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় মহতী উদ্যোগে মনোযোগী হলে বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজকে ডিগ্রি ও অনার্স ক্লাস চালুকরণ সময়ের কার্যক্রম মাত্র। বিষয়টি নিয়ে বর্তমান পর্ষদ, প্রাক্তন শিক্ষার্থীগণ এবং স্থানীয় সচেতন মহলের সানুগ্রহ সহযোগিতা একান্ত কাম্য। সবার সম্মিলিত আন্তরিক প্রয়াসে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা নিয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলোর শিখায় আলোকিত করবে ভবিষ্যৎ শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বনির্ভর করবে পরিবার সমাজ রাষ্ট্রকে। স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে সময়ের একান্ত আবশ্যিক এই জনগণ গুত্বপূর্ণ বিষয়টি অনুধাবন করবেন সংশ্লিষ্ট সকল মহল।

এই বিষয়ে সর্বজনশ্রদ্বেয় প্রয়াত শহীদ উল্লাহ মাস্টারের স্মৃতি রোমন্থন করে চাঁদপুর জেলার শীর্ষ স্থানীয় জনপ্রিয় দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের একটি বিশেষ নিবন্বনে প্রকাশিত অংশে আমি আলোকপাত করে করণীয় আর্জি পেশ করেছিলাম। শহীদ উল্লাহ মাস্টার স্মারক গ্রন্থের পঞ্চাশ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত। প্রয়াত শহীদ উল্লাহ মাস্টারের অন্তিম ইচ্ছার অন্যতম ছিলো বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজকে ডিগ্রিতে উন্নীতকরণ। স্যারের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে এই মহতী উদ্যোগে সবার আন্তরিকতা একান্তভাবে কামনা করছি। শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার। উচ্চশিক্ষা রাষ্ট্রের সহায়ক। বাবুরহাট সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে উদ্গ্রীব এবং সম্ভব। আমাদের আশপাশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সীমিত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে শুধুমাত্র আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে খুব সল্প পরিসরে শুরু করে শিক্ষা হিতৈষী মনোভাবে অনেক অগ্রগামী ভূমিকায়। ১৯৯৫ সালে এইচএসসি ক্লাস উন্নতিকরণে স্থানীয় আর্থিকভাবে সচ্ছল পিছিয়ে পড়া জনগণের সন্তানরা পাঠদান করে আজ অনেকেই প্রতিষ্ঠিত। বিশেষ করে, নারী শিক্ষার্থীরা এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। বাংলাদেশের সার্বিক শিক্ষার মনোন্নয়নে বর্তমানে ডিগ্রি/সমমানের যোগ্যতা নিয়ে শিক্ষকতা পেশায় আবেদন করতে হয়। ডিগ্রি শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ না থাকায় আজ তারা অনেক ক্ষেত্রেই বঞ্চিত হচ্ছেন। এর দ্বায়ভার অনেকটাই আমাদের সমাজের উপর বর্তায়। যে কোনো মহৎ কাজে অর্থিক সংশ্লিষ্টতা এবং কিছু অন্তরায় থাকে। বাবুরহাটে উচ্চ শিক্ষা বিস্তারে স্থানীয় সচেতন সমাজ সর্বান্তকরণে সহযোগিতা করবে বলে আমার বিশ্বাস। আমাদের পিছিয়ে পড়া মানে, অপেক্ষার ফল সুমিষ্ট হয়। আশা করছি, একশত পঁচিশ বছরপূর্তি উপলক্ষে ঘোষণা আসবে বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজে ডিগ্রি ও অনার্স কার্সের ভর্তি কার্যক্রম চলছে।

লেখক : ৬ষ্ঠ শ্রেণি ১৯৮৬ সাল, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বাবুরহাট হাইস্কুল, বাবুরহাট, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়