প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
প্রথম শিক্ষক মা, কথাটা অন্যরকম। প্রথম শিক্ষক কেনো, জীবনে প্রথম যাকে আমরা অনুভব করি তিনি মা। আর আমাকে বা আপনাকে যে প্রথম এই ইহজগতে অনুভব করেন তিনিও মাই। মায়ের সঙ্গে জীবনের সবকিছুই সন্তানের প্রথম।
শিক্ষা তো দুই রকমের। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আর অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের হাত ধরে যেমন প্রথম অনুভব করা পৃথিবীর রং, রূপ, গন্ধ। তেমনি মায়ের কাছ থেকেই প্রথম জানা সবকিছু। প্রথম স্পর্শের শিহরণ, প্রথম প্রহরের শব্দের উৎস, প্রথম সবকিছু মানেই মা।
আসলে প্রতিটি মায়ের চোখ দিয়ে সন্তানেরা দেখতে শিখে। সেটা পড়াশোনা থেকে শুরু করে জীবনের খুব ছোট ছোট বিষয়গুলোও। একজন মা তার সন্তানকে কোনটা সাদা কোনটা কালো তা যেমন শিখায়। তেমনি বহুমাত্রিক জীবনের স্রোতের ধারাও পড়তে শিখায়। সন্তানেরা আমরা চাই, বা না চাই, আসলে উপদেশ থেকে নয়, আমাদের প্রতিনিয়ত জীবনযাপন থেকে শিখে।
আমার আচর, মানুষের সাথে আমার গল্পগুলো কেমন, আমি প্রতিদিন আমার সন্তানের সামনে যা করছি, সেটা থেকে সে তার জন্য জীবনের পরবর্তী সময়কে নির্বাচন করছে। পুরো জীবনের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সব শিক্ষার দরজাটুকু খুলে দেন মা পরম মমতায় জড়িয়ে পৃথিবীর সব কিছু থেকে মা যেমন সন্তানকে আগলে রাখতে জানেন, তেমনি প্রয়োজনে তিনি তাঁর সন্তানকে সময়ের প্রয়োজনে মৃত্যু নিশ্চিত জেনে এগিয়ে দিতে জানেন। এদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস তাই বলে।
মা আসলে একাই একটা পরিপূর্ণ শিক্ষার ক্ষেত্রে। তার ছায়ায়, আলোতে, বোধে, মননে সন্তান নিজেকে প্রস্ফুটিত করে। আমাদের মায়েদের প্রতিটি বিষয়, সেটা প্রাত্যহিক রান্না ঘরের কাজ থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্র সবকিছু আমার সন্তান নিজের মতো করে তার মধ্যে গেঁথে নেয়। আমার সন্তান আমার ছায়া। সে ছায়া আমারই একটা অংশ। আমিই তার প্রথম শিক্ষক, যে তাকে পৃথিবী কীভাবে দেখতে হবে শিখিয়েছি। দায়ভার আমার। আমি তাকে চিনিয়েছি কোনটা ভালো এবং কেন।
যেমন আমার মা আমার বোধের, পড়াশোনার, আচরণের, ভালোবাসার, আবেগের আর অসহিষ্ণু পৃথিবীতে সহনীয় হয়ে চলতে শিখিয়েছেন। মা মানেই জুতা সেলাই থেকে চণ্ডিপাঠ, সব তার শিখানো। মা মানেই পুরো পৃথিবী।