বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সাথে আমার জীবন
আবদুর রাজ্জাক

শুরুতে সবাইকে জানাই আমার সালাম ও আন্তরিক ভালোবাসা। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যখন স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেয় সাথে সাথে কোন কিছু চিন্তা না করে চাঁদপুর সরকারি কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিষয়টি আমার ১ম পছন্দের তালিকায় দিয়ে দিই। আমার আর কোন বিষয় পছন্দের তালিকায় ছিল না। যখন রেজাল্ট প্রকাশিত হবে জানতে পারলাম তখন অনেক চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমি তো মাত্র একটি বিষয় পছন্দ দিয়েছি, আমার বিষয় কি আসবে? যখন রেজাল্ট প্রকাশিত হলো তখন দেখলাম, আমি প্রথম মেরিট লিস্টে চাঁদপুর সরকারি কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিষয় নিয়ে পড়ার জন্য মনোনীত হয়েছি। তারপর ১৫ নভেম্বর ভর্তি হওয়ার জন্য চলে আসলাম। সাথে ছিল আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু ইব্রাহিম চৌধুরি (অন্তু) আমার রোল নং হলো ২৭৬৮ আর অন্তুর হলো ২৭৬৯। এইভাবে আমার হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সাথে পথ চলা শুরু হয়।

২০১৫ সালে পহেলা ডিসেম্বর ছিল আমাদের নবীনবরণ। যখন ক্লাসে প্রবেশ করলাম, তখন নিজেকে অনেক অসহায় মনে হলো। কারণ তখন আমি কাউকে চিনি না, জানি না। প্রথমে আমাদের ক্লাসে আসলেন সাজ্জাদ স্যার। তিনি তার পরিচয় দিয়ে আমাদের সাথে অনেকক্ষণ কথা বলেন। তারপর সকল স্যারদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন আমাদের বিভাগীয় প্রধান বেলাল হোসাইন স্যার। প্রথম বর্ষে আমার বেশি ক্লাস করা হয় নাই। তাই কোন স্যারের সাথে সেভাবে পরিচিত হতে পারি নাই। ২য় বর্ষ থেকে আমার হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রতি বেশি আবেগ আর ভালোবাসা কাজ করতে শুরু করে। কোনদিন ক্লাস না করতে পারলে আমার ভালো লাগতো না। স্যারদের সাথে আস্তে আস্তে পরিচিতি বাড়তে থাকলো। স্যাররা ও আমাকে অনেক কাছে টেনে নিতে শুরু করলো। আস্তে আস্তে বিভাগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নেওয়া শুরু করলাম। এইভাবে চলে গেল ২য় বর্ষটি। শুরু হলো ৩য় বর্ষ। আমাদের ৭ম ব্যাচ প্রথমবারের মতো স্যারদের সহযোগিতায় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। তারপর আমাদের মাঝে আসেন আমাদের শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক শাহজালাল স্যার। স্যার আমাকে অনেক পছন্দ করেন। স্যারের সাথে যেদিন প্রথম আমার পরিচয় হয় সেদিন আমি ইনকোর্স পরীক্ষা দিতেছিলাম। ৩য় বর্ষ পরীক্ষার শেষে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সাথে আমার প্রথম শিক্ষাসফর। আমার জীবনে দিনটি খুবই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। স্যাররা ছাত্র ছাত্রীদের সাথে এতটা মিশতে পারে তা আমি শিক্ষাসফরে না গেলে বুঝতে পারতাম না। সেদিনের সবচেয়ে মজার বিষয় ছিল আমি আর মফিজ স্যার একসাথে নাচ করে ছিলাম। সত্য কথা বলতে কি আমি হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনেক কিছু অর্জন করেছি যা মাঝে মাঝে মনে করে কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যাই। ৪র্থ বর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে কেন জানি মনের ভিতর একটু একটু করে বেদনার চিহ্ন দেখা দেয় কারন আমার বিবিএ জীবন থেকে ৩ টা বছর চলে গেল। আর মাত্র ১ বছর বাকি। কোনদিন ক্লাস মিস করতাম না। স্যারদের আমার রোল নং তো মুখস্ত হয়ে গেছে। স্যাররা আমার হাজিরা ডাকার সময় আমাকে হাজিরা দিতে হতো না। স্যার এমনেই দিয়ে দিতো।

৪র্থ বর্ষের শেষ দিন ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের দিন। ঐ দিন স্যাররা আমাদের সাথে ৫ বিষয় ক্লাস করেন। দিনটি ছিল অক্টোবরের ৩০ তারিখ। ক্লাস শেষ করে যখন বাসার আসলাম তখন আমার কান্না দেখে রুমমেটরা সবাই বলে ভাইয়া কান্না করেন কেন। কান্না জড়িত কন্ঠে বললাম আজ আমার বিবিএ জীবনে শেষ ক্লাস। তাই অনেক কষ্ট লাগে। এই চার বছরে আমি অনেক স্যারকে পাই যাদের কথা আমি জীবনে কোনদিন ভুলতে পারবো না। যেমন শ্রদ্ধেয় বেলাল স্যার, বেদারুল আলম স্যার, মফিজুর রহমান স্যার, জাকির স্যার, আতিক স্যার, মহসিন স্যার, সাজ্জাদ স্যার, শাহজালাল স্যার। এই চার বছরে আমি আমার অনেক বন্ধুদের মাঝে ঋণী হয়ে থাকবো তারা আমাকে বিভিন্নভাবে অনেক সহযোগিতা করেছে। তাদের মাঝে অন্যতম হরো অন্তু, জান্নাতুল ফেরদাউস (তমা), নুসরাত জাহান, রাসেল, তানভীর, মাসুম, ইমরান, মহিউদ্দিন, মেহেদী, নুরের নাহার, নিজাম শেখ, আকাশ, তানজিল, অন্তর আরো অনেকে। এই চার বছরে পেয়েছি অনেক বড় ভাইদের কাছ থেকে ভালোবাসা আর ছোট ভাইদের কাছে সম্মান। অবশেষে সকল স্যার ও বন্ধুদের প্রতি আমার শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইলো। আমি স্মরণিকা ‘সমন্বয়’-এর সম্পাদক মহসিন শরীফ স্যারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই আমার প্রস্তাবিত নামটি ‘সমন্বয়’ স্মরণিকার নাম হিসেবে গ্রহণ করার জন্য। আমার এই লেখাটি উৎসর্গ করলাম আমার প্রাণপ্রিয় শ্রদ্ধেয় শিক্ষক বেদারুল আলম স্যারকে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়