প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
পাঁচ বছরে চাঁদপুর সরকারি কলেজে অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ২০১৮-২০২৩ সাল পর্যন্ত কলেজের ১৭টি উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ১২ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির আন্তরিকতায় শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের অর্থায়নে এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
কলেজের প্রশাসনিক বিভাগ থেকে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পাঁচতলা ভিতবিশিষ্ট একাডেমিক কামণ্ডএক্সামিনেশন হলের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ সম্পন্ন হয়। এ কাজে ব্যয় হয় ১ কোটি ৭৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা। একই অর্থবছরে পাঁচতলা ভিতবিশিষ্ট নতুন ছাত্রীনিবাসের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ সম্পন্ন হয়। এ কাজে ব্যয় হয় ৮০ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
২০১৯-২০ অর্থবছরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের লোগো অবলম্বনে কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মিত হয় বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল। এটি নির্মাণে ব্যয় হয় ১ কোটি ৭৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা। প্রশাসনিক ভবনের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ সম্পন্ন করতে ব্যয় হয় ২ কোটি ১৩ লাখ ৫ হাজার টাকা।
২০২০-২১ অর্থবছরে কলেজ ক্যাম্পাসের বাউন্ডারি ওয়াল ও নতুন গেইট নির্মাণ সম্পন্ন করতে ব্যয় হয় ১ কোটি ৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। একই অর্থবছরে কলেজ ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাস্তার উপর পেডমেন্ট টালী বসানো হয়। একাজে ব্যয় হয় ৪৫ লাখ টাকা।
২০২১-২২ অর্থবছরে মুক্তিযুদ্ধ ও হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু তৈরি কাজে ব্যয় হয় ৯ লাখ টাকা। বাস্কেট বল গ্রাউন্ড সংস্কারে ৮ লাখ এবং গণিত বিভাগের মেরামত ও সংস্কার কাজে ব্যয় হয় ১৬ লাখ টাকা। উল্লিখিত সব কাজই শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
চাঁদপুর কলেজে আরও কিছু উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরের বরাদ্দে কলেজের অভ্যন্তরে অবস্থিত পুকুরের চারপার্শ্বে গাইড ওয়াল, ওয়াকওয়ে এবং সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে ব্যয় হবে ১ কোটি ৯৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এ প্রকল্পের ৪৫ ভাগ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। কলেজের কেন্দ্রীয় মসজিদের ৫ম তলা ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণসহ সম্পূর্ণ মসজিদের কার্য সমাপ্তকরণ প্রকল্পের ৫৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ কাজে বরাদ্দ ১ কোটি ৬ লাখ টাকা। কলেজ ক্যাম্পাসের সামনের দিকে বাউন্ডারি নির্মাণ এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাসের পেছনের বাউন্ডারি নির্মাণ কাজ ৬০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এ কাজে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ লাখ টাকা।
এছাড়া একই অর্থবছরের বরাদ্দে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে কলেজ ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে মাঠের মাটি ভরাট এবং ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে বাস্কেট বল গ্রাউন্ডের নেটিং ও লাইটিং স্থাপন করা হবে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে তিনটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এর মধ্যে নতুন ছাত্রীনিবাসের বাউন্ডারি ওয়াল ও গেইট নির্মাণে ৩০ লাখ টাকা, ইসলামিক শিক্ষা ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগের মেরামত ও সংস্কার কাজে ৮ লাখ টাকা এবং কলেজের অকেজো মালামাল সংরক্ষণের জন্য গোডাউন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে ২০১৮-২০২৩ অর্থবছরে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ১৭টি উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ১২ কোটি ২৮ লাভ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও লাইব্রেরির আধুনিকীকরণ কাজ চলছে।
কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কিএম হাসান শাহরিয়ার বলেন, অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়নের কারণে চাঁদপুর সরকারি কলেজের সামগ্রিক চেহারা পাল্টে গেছে। শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে বহুগুণ সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। মানসম্মত শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে। ফলাফলও ভালো হচ্ছে।
চাঁদপুর শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি মহোদয়ের আন্তরিকতা ও কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ স্যারের প্রচেষ্টায় আমাদের কলেজটি এখন অনেক বেশি দৃষ্টিনন্দন ও শিক্ষার্থীবান্ধব। এমন উন্নয়ন কাজ আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ বলেন, গত একযুগে চাঁদপুর সরকারি কলেজে যে উন্নয়ন হয়েছে তা অভাবনীয়। আমাদের অভিভাবক শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি। তাঁর প্রচেষ্টায় সরকারি কলেজ এখন আধুনিক ও প্রাগ্রসর। তাঁর কাছে কলেজের জন্যে যখন যা চেয়েছি তিনি দিয়েছে। তাঁকে অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ সবগুলো কাজই সহযোগিতা করেছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই।
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, চাঁদপুরের পুরানো উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চাঁদপুর সরকারি কলেজ। এ কলেজটি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিধন্য। আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নে ও জনকল্যাণে বিশ্বাসী। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা কাজ করছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গত একযুগে সত্যিই চাঁদপুর সরকারি কলেজের চেহারা পাল্টে গেছে। অভূতপূর্ব উন্নয়নের কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হয়েছে। ফলাফলেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তিনি আগামীতে এ কলেজটিতে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন কাজ অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।