প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
কুমিল্লার উন্নয়নে যাঁরা কাজ করেছেন, ভেবেছেন, লিখেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুস ( ১৯০৬-১৯৮৮)। জাতির কাছে তাঁর প্রধান পরিচয়, তিনি শিক্ষা-চিন্তক, গবেষক ও শিক্ষাবিদ। তিনি বহুমুখি প্রতিভাধর, বয়ষ্ক শিক্ষার পথিকৃৎ, আখতার হামিদ খানের সহচর, শিশুদের মনজগৎ নির্মাণ প্রসঙ্গসহ বহু গ্রন্থের লেখক, সম্পাদক, নিরহংকার আধুনিক এক নিরব সাধক। জাতি তাঁর অবদানের স্বীকৃতিতে অনেক পুরস্কার বিশেষত একুশে পদকে তাঁকে ভূষিত করেছে।
কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সন্ধান করতে গিয়ে তিনি নজরুল গবেষণা করেছেন, নওয়াব ফয়জুন্নেছা ও রাজিয়া চৌধুরানীর জীবনীসহ তাদের সাহিত্যকর্ম সংগ্রহ ও সম্পাদনা করেছেন।
এ অঞ্চলের শিশুদের সৎ মেধাবী ও দেশপ্রেমিক হিসাবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে কুমিল্লা মডার্ন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। টাউনহলের সামনে স্মৃতিস্তম্ভে নামাংকিতদের পরিচিতি তাঁরই রচনা। এক কথায় কুমিল্লার জন্য তাঁর অবদান বলে শেষ করা যাবে না।
আমার সৌভাগ্য যে শিশু-কিশোর বয়সে আমি তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছি। আমাকে এবং পাড়ার শিশুদের তিনি হাত ধরে ভোরে হাঁটতে নিয়ে যেতেন ও হাঁটতে হাঁটতে প্রেরণাদায়ী কথা বলতেন। দক্ষিণ বাগিচাগাঁওয়ে আমাদের বাসার উল্টো দিকে তার বাগানবাড়িটা এখন কুদ্দুস-আফিয়া শিশু শিক্ষালয়।
কুমিল্লার জন্য এত অবদান রেখে যাবার পরও সত্য হলো এই যে তাঁর স্মৃতি ধরে রাখার কোন স্থায়ী ব্যবস্থা শহরে কোথাও নেই, এমনকি নেই কোন নামফলকও। আমরা কুমিল্লাবাসী অকৃতজ্ঞ হয়ে আগামী প্রজন্মের কাছে দায়ী থাকতে চাই না।
তাই আমাদের দাবি, তাঁর নামে অন্তত একটি রাস্তার নামকরণ করাসহ স্মৃতিস্তম্ভ বা অন্যান্য নির্মাণ বা ব্যবস্থার মাধ্যমে তাঁকে যোগ্য সম্মান দেয়া হোক এবং এমনি করে অন্য গুণীদেরও (যে ক্ষেত্রে যাঁর যা অবদান, তার মূল্যায়ন একটি জনপদের মানমর্যাদা ও আগামী গন্তব্যের দিকনির্দেশক ও শক্তির পরিচায়ক, সে ক্ষেত্রে প্রতিটি মনুমেন্ট, রাস্তার মধ্য গোলক/ত্রিকোণ, বাগান ইত্যাদির সৌন্দর্য বিকাশের সময় পরলোকগত অথবা এখনো আমাদের মাঝে আছেন, তাঁদের কথা ভাবা উচিত। যাতে আগামী প্রজন্ম তা দেখে ও জেনে আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার অনুপ্রেরণা পায়।
পোর্টেট : মাসুক হেলাল