শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

পুরানো বাড়ির ফুটো ছাদ
অনলাইন ডেস্ক

পাহাড়ঘেরা উপত্যকায় বাস করতো এক বৃদ্ধ এবং বৃদ্ধা দম্পতি। তাদের কোনো সন্তান ছিলো না। তারা নিজেরাই নিজেদের ভরনপোষণ করতো। তাদের আয়ের একমাত্র উৎস ছিলো ভেড়া পালন। কিন্তু এক্ষেত্রে ছিলো চোর আর বন্য নেকড়ের ভয়। একটি স্থানীয় চোর মাঝে মধ্যে ওই খামারে ভেড়া চুরির আশায় হানা দিতো।

তো এমনই একদিন সন্ধায় ওই চোর এসে অবস্থান নিলো বৃদ্ধাদের বাড়ির ছাদে। উদ্দেশ্য রাতে বৃদ্ধ আর বৃদ্ধা ঘুমালে তাদের কয়েকটা ভেড়া চুরি করবে। এদিকে ওই রাতেই দৈবভাবে একটি বন্য নেকড়েও ওই খামারে ভেড়া শিকার করার লোভে হানা দিলো। কিন্তু বৃদ্ধ আর বৃদ্ধা জেগে থাকায় তারা কেউই ভেড়ার খামারে প্রবেশ করতে পারলো না।

তখন চোরটি বাড়ির ছাদ থেকে আর নেকড়েটি বাড়ির সামনে থেকে তাদের দুজনের কথা শুনতে লাগলো বৃদ্ধ এবং বৃদ্ধা পরস্পর বলাবলি করছে।

বৃদ্ধ : তুমি সবথেকে বেশি কিসে ভয় পাও?

বৃদ্ধা : আমি সবথেকে বেশি ভয় পাই বনের মোটাসোটা সাদা লোমওয়ালা নেকড়েগুলোকে। আর তুমি? (এই কথা শুনেতো নেকড়ে ভিশন গর্ববোধ করলো)

বৃদ্ধ : আমিতো সবথেকে বেশি ভয় পাই পুরোনো বাড়ির ফুটো ছাদ! এই পুরনো বাড়ির ফুটো ছাদ জিনিসটা কী নেকড়ে তা জানে না। তাই সে খুব ভয় পেয়ে গেলো। এদিকে হালকা আলোয় ছাদের ওপরে থাকা চোরটি নেকড়েকে দেখে ভাবলো এটা মোটাসোটা একটা ভেড়া! তাই সে ঝপাৎ করে লাফ দিলো ছাদ থেকে ওই নেকড়ের পিঠের ওপর। নেকড়েটি তখন ভাবলো যে তার পিঠে নিশ্চয় সেই ভয়ানক জিনিস পুরনো বাড়ির ফুটো ছাদ এসে পড়েছে। তাই সে ভয়ে দ্রুত বেগে দৌড় দিলো জঙ্গলে সকল প্রাণীর গুহার দিকে। গুহাটি বেশি উঁচু নয় নেকড়েটি কোনো মতে প্রবেশ করতে পারে। তাই গুহায় ঢোকার সময় নেকড়ের পিঠ থেকে চোরটি ছিটকে পরে গেলো। আর নেকড়েটি তখন দৌড়ে ভেতরে প্রবেশ করলো। নেকড়েকে এতো দ্রুত গুহায় প্রবেশ করতে দেখে ওখানে থাকা প্রাণীরা ভয় পেয়ে গেলো। তারা নেকড়েকে এতো তাড়াতাড়ি গুহায় প্রবেশ করার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে সব কথা তাদের খুলে বললো। নেকড়ের কথা শুনে সকল প্রাণী ভয় পেয়ে গেলো এবং তারা গুহার মধ্যে ভয়ে হুড়োহুড়ি করতে লাগলো। তারা সবাই তখন সেই পুরোনো বাড়ির ফুটো ছাদের ভয়ে আশ্রয় নিলো গুহার এককোণে। তখন বনের রাজা অন্য একটি নেকড়ে তাদের শান্ত করে একটি চেলেঞ্জ দিলো। যে গিয়ে বাহির থেকে ওই ভয়ানক পুরোনো বাড়ির ফুটো ছাদ সম্পর্কে জেনে আসতে পারবে তাকে পরবর্তীতে বনের রাজা হিসেবে মনোনীত করা হবে। এই লোভনীয় প্রস্তাবে অনেকেই রাজি হলো। কিন্তু সাহসে না দেয়ায় কাজটি কেউই করতে পারলো না। একপর্যায়ে বনের একটি বানর এই কাজটি করার সাহস করলো। সে তখন হাঁটা শুরু করলো গুহার মুখের দিকে প্রথমে লেজের মাথা দিয়ে। অর্থাৎ উল্টো দিকে ফিরে পিছন দিকে হাঁটতে লাগলো। এদিকে ওই চোরটিও অপেক্ষা করছিলো গুহার মুখে। বানরের লেজের মাথা গুহা থেকে বের হয়ে আসলে চোরটি অন্ধকারে এটিকে ভেড়ার লেজ ভেবে জোর করে চেপে ধরলো। বানরটি তখন ভাবলো যে তাকে ধরেছে ওই ভয়ানক পুরোনো বাড়ির ফুটো ছাদ তাই সে প্রাণপনে টানাটানি করতে লাগলো এটির হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্যে। এখন বানর নিজেকে টানে গুহার দিকে আর চোর টানে গুহার বাইরের দিকে। বানর যখন নিজেকে গুহার দিকে টানে তখন তার লেজ কিছু বৃদ্ধি পেয়ে তার মুখ গিয়ে ঘঁষা খায় পাহাড়ের দেয়ালে। তখন ঘঁষা খেতে খেতে বানরের মুখের সব লোম উঠে গিয়ে মুখ টকটকে লাল হয়ে যায়। আর টানাটানির এক পর্যায়ে বানরের লেজের মাথা ছিঁড়ে চোরের হাতে রয়ে যায়। বানর তখন মুক্তি পেয়ে গুহায় ঢুকে যায়। সেই থেকেই বানরের মুখ বাধে সারা শরীরে লোম আছে আর মুখটি টকটকে লাল আর লেজের মাথা ছেঁড়া।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়