প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:২৫
নব্বইর দশক, সিনেমার স্মৃতির আঁতুড়ঘর!

স্মৃতি বড়োই মধুর। আর সংস্কৃতিমনা বাঙালির কাছে স্মৃতি মানেই বিনোদন জগৎ। ‘ছায়াছবি’ যেনো ছিলো প্রাণের স্পন্দন। দিন যায় যেমন কথা থাকে, ঠিক সে সময়কার দিনগুলো এখন কথার মতো। কতো শত স্মৃতি আঁকড়ে বেড়ায় মানুষ সে খবর ক’জনই বা রাখে। বিনোদনের সেকালের গল্পই তুলে ধরেছেন রিফাত কান্তি সেন।
আধুনিকতার মারপ্যাঁচে প্রযুক্তি অনেক এগিয়েছে। সাদাকালো থেকে রঙিন দুনিয়ায় মানুষ এখন স্বপ্ন দেখে। রঙিনের স্বপ্নের চেয়েও সাদাকালোর স্বপ্ন ছিলো ভিন্নতর। যদি টেলিভিশনের কথা বলেন, তবে এক কথায় বলা চলে, সাদাকালো টিভিই ছিলো বিনোদনের একমাত্র আনুষঙ্গ।
তাও আবার পাড়া-মহল্লা ঘুরলে খুব কম বাড়িতেই দেখা মিলতো। বিশেষ করে একটু সম্পদশালীদের বাড়িতেই ছিলো টিভি। চালানো হতো ব্যাটারির মাধ্যমে। সেই সময় অবশ্য ব্যাটারির ছিলো রমরমা ব্যবসা। দরিদ্র্যপীড়িত এলাকাগুলোতে বিনোদনের একমাত্র মাধ্যমই ছিলো এসব সাদাকালো টিভি। আর সে টিভি দেখতে ভিড় জমতো সম্পদশালীদের বাড়িতে।
এন্টেনা দিয়ে চালানো এসব টিভিতে একটি দেশী চ্যানেল দেখা যেতো। সেটি রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভি। বিটিভির অনুষ্ঠানগুলো ছিলো বেশ জনপ্রিয়।
অধীর আগ্রহ আর স্বপ্ন নিয়ে যেন অপেক্ষার প্রহর গোণা। সপ্তাহের শুক্রবার মানেই বিনোদনের নতুন মাত্রা। সিনেমা দেখার জন্যে সিনেমা হলের পরই জনপ্রিয় ছিলো বিটিভির শুক্রবারের সিনেমা আওয়ার। ঘটা করে ঘোষক বলে উঠতেন, এখন দেখবেন পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। শ্রেষ্ঠাংশে সালমান শাহ, মৌসুমী।
আর এতেই যেন দিল্লিকা লাড্ডু মনের কোণে বাজতে থাকে। অধীর আগ্রহ, বিজ্ঞাপনের জটিলতার পরও আগ্রহের কমতি নেই। টিভি সেটের সামনে হুমড়ি খেয়ে পড়া। চোখ এড়ানো দায়! নব্বইয়ের দশকের সেরা সিনেমাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো : বেদের মেয়ে জোসনা, সুজন মাঝির মতো দর্শক নন্দিত সিনেমা। দর্শক হুমড়ি খেয়ে পড়তো এসব সিনেমা দেখতে। স্বপ্নের জুটিগুলোও ছিলো অসাধারণ। সালমান শাহ-শাবনূর, মৌসুমী-ওমরসানী, সাবানা-আলমগীর, ববিতা-ফারুক জুটি ছিলো জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। সে সময় ইলিয়াস কাঞ্চন ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ ছবি উপহার দিয়ে দর্শকদের ভালবাসা কুড়িয়েছেন।
ডিভিডি, ভিসিআর : টেলিভিশন চ্যানেলের পাশাপাশি সে সময় বেশ জনপ্রিয় ছিলো ভিসিআর ও ডিভিডি প্লেয়ার। ফিতার ক্যাসেট ভিসিআর চালিয়েও দর্শক সিনেমার স্বাদ নিতেন। অবশ্য খুব দ্রুতই সিডি ক্যাসেট আসার ফলে বিনোদন আরো সহজতর হয়েছিলো নব্বই দশকের শেষদিকে।
সামাজিক দৃশ্যপট :
সিনেমা জীবনের কথা বলে। কেননা বাস্তবতাকে অনেকটাই সিনেমায় খুঁজে পাওয়া যায়। এই যেমন সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তনে তখনকার সামাজিক ছবিগুলো বেশ সাড়া ফেলেছিলো। বাস্তবতার নিরিখে নির্মাতা সিনেমার দৃশ্যপট এঁকেছিলেন বলেই হয়তো টিভি সেটার সামনে দুচোখ গড়িয়ে জল পড়তো। পিতা-মাতা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান সকলকে একসঙ্গে নিয়ে সেসব সিনেমা দেখা যেতো।ছবি-১৮
নাসিরের কণ্ঠে নতুন গান ‘একদিন আমিও ভুলে যাবো তোরে’
সংস্কৃতি অঙ্গন প্রতিবেদক ॥ ভালোবাসা কখনও কখনও রয়ে যায় স্মৃতির ভাঁজে, যেখানে মানুষ চায় ভুলে যেতে, কিন্তু পারে না। সেই অচিন্তনীয় বেদনার কথা নিয়েই কণ্ঠশিল্পী নাসির হাজির হয়েছেন তাঁর কণ্ঠের নতুন গান ‘একদিন আমিও ভুলে যাবো তোরে’। গানটির কথা লিখেছেন শিব শংকর রবিদাস, সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন আল আমিন খান। গত ২ নভেম্বর ২০২৫ গানটি প্রকাশ পেয়েছে ‘আল আমিন খান অফিসিয়াল’ ইউটিউব চ্যানেলে। নতুন এই গানে ভুলে যাওয়ার চেষ্টার মধ্যেও রয়ে গেছে না ভুলতে পারার আকুতি। নাসিরের কণ্ঠের নতুন এই গানটির প্রতিটি শব্দের ভেতর বেজে উঠে হৃদয়ের টান, যা শ্রোতাদেরকে নিয়ে যায় নিজের অতীতের কোনো প্রিয় মুখের কাছে।
গানটি সম্পর্কে গীতিকার শিব শংকর রবিদাস বলেন, মানুষ যখন কাউকে খুব ভালোবাসে, তখন একসময় ভুলে যাওয়াটাই হয়ে উঠে তার সবচেয়ে বড়ো যন্ত্রণা। এই গান সেই আবেগের কথাই বলে। যেখানে স্মৃতি, সময় আর ভালোবাসা একসাথে মিশে যায়।
সুরকার ও সংগীত পরিচালক আল আমিন খান বলেন, আমি এমন সুর তৈরির চেষ্টা করেছি, যেখানে নাসির ভাইয়ের কণ্ঠের আবেগ যেন শ্রোতার ভেতরে ঢেউ তোলে। আশা করছি এ গানটি শ্রোতাদেরকে এক ধরনের শান্ত কষ্টের ভেতর ডুবিয়ে দেবে। তাঁর মতে, নাসিরের কণ্ঠে একধরনের অদ্ভুত মায়া আছে। যা বিচ্ছেদের কথাও শ্রোতার কানে মধুর করে তোলে। শিল্পী নাসির বলেন, এই গানটি আমার জন্যে ভীষণ কাছের। আমরা সবাই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে একজন প্রিয় মানুষকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু পারি না। আমি চেয়েছি সেই অনুভূতিটা যেন গান শুনে সবাই নিজের মতো করে অনুভব করতে পারে।
প্রকাশের পর থেকেই গানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। শ্রোতারা মন্তব্য করছেন, নাসিরের কণ্ঠে এই গানটি যেনো হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসার দিনগুলো আবারও ফিরিয়ে এনেছে।







