মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   উত্তরায় স্কুল ভবনে বিমান বিধ্বস্ত, মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
  •   উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত ১৯, জানালো ফায়ার সার্ভিস
  •   উত্তরায় বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত
  •   চাঁদপুরে ডাকাতিয়া নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
  •   রোগীর চাপে বেসামাল চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল!

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৪

মাত্র দু বছরে আমার তিন ভাই নিলেন চিরবিদায়

মো. মনির হোসেন মিয়াজী মিন্টু
মাত্র দু বছরে আমার তিন ভাই নিলেন চিরবিদায়

আমার বাবা মরহুম আব্দুস্ ছাত্তার মিয়াজী। তিনি ছিলেন শাহরাস্তি উপজেলার একজন রাজনৈতিক, সামাজিক ও উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি। জনগণের কল্যাণে তিনি তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময়টুকু পার করতেন। বাবার হাত ধরে আমরা পাঁচ ভাই দেখেছি, কীভাবে মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হয়। বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমার মেজো ভাই দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতি ও মানবসেবায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি প্রায় ১৮ বছর বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির শাহরাস্তি উপজেলার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দুবার ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শোকরিয়া, তিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। আমি পরিবারের ছোট ছেলে হওয়াতে শুধু তাঁদের পাশে থেকে এ কাজগুলো দেখার সুযোগ হয়েছে। কিন্তু ভাবতে অবাক লাগে, মাত্র ২ বছরের মধ্যে আমার তিন ভাই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।

মহান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে আমার তিন ভাই দু বছরের মধ্যেই না ফেরার দেশে চলে যান। প্রথম ২০২১ সালের ২১ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৮ টায় আমার মেজো ভাই দুবারের শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত সফল চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী ইন্তেকাল করেন। তিনি ছিলেন আমাদের মাথার ওপর বট বৃক্ষের

ছায়ার মতো এবং শাহরাস্তির জনগণের ভরসার জায়গা। আসলে তাঁর বিষয়ে যতোই বলবো, তা শেষ হবার নয়। বিশেষ করে আমার জীবনে আমার মেজো ভাইয়ের অবদান অনেক, আমার বাবার পর আমার মেজোভাই ছিলেন আমার অভিভাবক। ছোট থেকেই আমাকে আদর-স্নেহ দিয়ে বড়ো করেন।

ভাইয়ের একটা কথা এখনো খুব বেশি মনে পড়ে। ১৯৭৪ সালে জীবনে প্রথম ভাইয়ের সাথে ঢাকায় গিয়েছিলাম। তখন আমার বয়স ১০ কি ১১ বছর। ভাই আমাকে একটি ফুল প্যান্ট কিনে দিয়েছিলেন। এমনিতে ওই বয়সে হাফ প্যান্টই পরতাম। তখন অনেক বেশি খুশি হয়েছিলাম। এমনিতে ভাইয়ের কাছে কিছু চাওয়া লাগতো না, নিজেই কিনে দিতেন। আমার কখন কী প্রয়োজন, তিনি নিজেই অনুভব করতেন এবং তা এনে দিতেন। এসব কথা এখন শুধুই স্মৃতি।

আমার জীবনের প্রত্যেকটা মুহূর্তে এবং পথচলায় ভাইয়ের অবদান অসীম।

মেজো ভাইয়ের মৃত্যুর শোক কাটতে না কাটতেই ২০২৩ সালের ১৪ মে আমার সেজো ভাই মো. মোশারফ হোসেন মিয়াজী ইন্তেকাল করেন।

মৃত্যুকালে ভাইয়া সৌদি আরবে ছিলেন। সেখানে ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন। ওমরা পালনের কিছুদিন পর অসুস্থ হয়ে যান এবং কিছুদিন চিকিৎসাধীন থেকে সৌদি আরবেই ইন্তেকাল করেন।

আবারও আমাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এলো। আল্লাহর কী ইচ্ছে দেখুন। এর কিছু মাস পরেই আবার ২০২৩ সালের ২২ আগস্ট আমার বড়ো ভাই মো. নুরুল ইসলাম মিয়াজী ইন্তেকাল করেন।

এভাবেই আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে আমার তিন ভাই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেন।

আমার জীবনে আমার ভাইদের অনেক অবদান রয়েছে। পরিশেষে শাহরাস্তিবাসীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা আমার ভাইকে যে সম্মান দিয়েছেন এবং আমাদের পরিবারকে যে ভালোবাসায় আবদ্ধ করেছেন, তার জন্যে আপনাদেরকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না, আমি এবং আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

সবশেষে আমার ভাইদের জন্যে দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন আমার ভাইদের জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করেন আমিন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়