প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪৩
দেবদাস কর্মকারের কবিতা
নির্জন মনশ্রী
শরতের রাতে তার যেন মৃত্যু হলো
হঠাৎ অনিচ্ছায় চলে যাওয়া
রাত শেষে ঠিক শিশির কুয়াশায়
ভিজে ছিলো বেলুয়ার স্নিগ্ধ তীর
কেমন শ্বেতপাথরের মতো ঠাণ্ডা,
তারপরও
একটি জীবনে তার কতো সৌন্দর্য রসের ঘ্রাণ
পরিতৃপ্তিহীন দুঃখের অনুস্মৃতি
অকপট নীলাভ চাঁদজ্যোৎস্নার প্রেম
রূপ কন্যার কথা, তার রূপসী চুলের ঘের,
এইটুকুই ছিল তার আনন্দ বেদনার অমল ধ্রুপদ,
একা একা নদীকে চিনেছে সে, জেনেছে বৃক্ষের নাম
জটিল সংসার, ধুলোর রেণু মেখে দিব্যি ছিল বুঝি!
জেনেছিলো প্রেম, নারী--আরও কতো কিছু।আলোর গন্ধ ছুঁয়ে জেগে ছিলো যেন সে,
মুঠো মুঠো আলো নীল-সাদা -লাল-সবুজ,
স্মৃতিদীর্ণ বুকে ফিরে ছিলো সে নিমছায়া তীরে
বেলুয়ার ভরা জল কচুরিপানার স্পন্দিত রূপ
হঠাৎ কেন যেন মনে হলো তার
কোথায় চলেছি আমি, কোথায় চলেছে দেশ
অকপট নীলাভ রঙের চাঁদ, রূপ কন্যার স্মৃতি
নির্জন সমাধির পাশ
বড্ডো নির্জন মনশ্রী।২৫ অক্টোবর ২০২৪, ঢাকা, ৯ কার্তিক,১৪৩১
যখোন নিমজ্জিত হই
ক্রমশ নিমজ্জিত হই
চারিদিকে শরতের জ্যোৎস্না নিশাচর কীটের সঙ্গীত
মাত্র জোয়ারে ভরেছে নদী, স্থির সরানি
কোথাও উল্লাস নেই, চরাচর নিরিবিলি
ভেসে যাচ্ছি কচুরিপানার মতো
কোন সুখ নেই অশ্রু নেই স্বপ্ন নেই
মানুষের তো স্বপ্ন থাকে ভালোবাসা থাকে
অবশেষে থাকে মৃত্যু
কেমন বেছং জীবন মানুষের ।মাঠের ধান পাকেনি বলে যাদের কপালে ঝরে ঘাম
পৃথিবীর সেই সব পুরোহিত এসেছে চলে মাঠে
সব যুবরাজ বড্ডো ক্লান্ত
কৃষকেরা গেছে নির্বাসনে
যখোন মানচিত্র নিয়ে খুব টানাটানি
তখোন নিজের কাতর চোখ ওঠে ভেসে
এ মাঠ ঘাট নদী যেন রূপসীর শরীর এক
তাকে ছিঁড়ে খায় শকুনেরা যেন ক্রুর সোহাগে,
কুয়াশা এসেছে নেমে চোখ বুঁজে পাই টের
শিয়রের ঘাস গেছে ভিজে
কী নিবিড় আশ্বাসে হঠাৎ কাহার হাত
ধরে থাকে আমাকে অপূর্ব স্নিগ্ধ অনুরাগে।১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১ শরতকাল।