শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশ
  •   নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে ফরিদগঞ্জে অবাধে ইলিশ বিক্রি
  •   পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মেঘনায় ভেসে উঠলো দুদিন পর
  •   নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি না করার শপথ করিয়েছেন এমএ হান্নান
  •   বিকেলে ইলিশ জব্দ ও জরিমানা

প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৮

সাক্ষাৎকার : রহিমা আক্তার মৌ

আমার লেখা পড়ে যদি একজনের কাজে আসে সেটাই সার্থকতা

অনলাইন ডেস্ক
আমার লেখা পড়ে যদি একজনের কাজে আসে সেটাই সার্থকতা

রহিমা আক্তার মৌ। তিনি সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক। বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় গল্প, কবিতা, ফিচার, কলাম, প্রবন্ধ ও নারী বিষয়ে নিয়মিত লিখছেন। প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ২০০৯ সালে, ইত্তেফাক গ্রুপের সাপ্তাহিক ‘রোববার’-এ। ঢাকা ও ঢাকার বাহির থেকে প্রকাশিত বেশ কিছু পত্রিকা ও লিটল ম্যাগাজিনেও লিখছেন। মূলতো দৈনিক পত্রিকায় লিখেই তিনি আনন্দ পান বেশি।

১৯৭৫ সালের ২২ ডিসেম্বর কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে বাবার কর্মস্থলে জন্মগ্রহণ করেন রহিমা আক্তার মৌ। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বানসা গ্রামে। মা সেতারা বেগম, বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান। চার ভাই-বোনের মাঝে তিনি দ্বিতীয়। শৈশব কাটে নোয়াখালীর চাটখিলে। ১৯৯৪ সাথে বিবাহ বন্ধনে আবধ্য হন কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার ডায়নার পারের হাম্মদ হোসেন ও কহিনুর বেগমের বড় সন্তান প্রকৌশলী কামরুল আহসানের সাথে। বিবাহিত জীবনে দুই কন্যা সন্তানের জননী তিনি। প্রিয় ব্যক্তিত্ব মা সেতারা বেগম। স্বপ্নের নগরী ঢাকা। চিঠি লেখা তাঁর একটি সখ। সম্পাদনা করছেন চিঠি বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘আকাশের ঠিকানায় চিঠি’।

রহিমা আক্তার মৌ সম্প্রতি দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ‘পাঠক ফোরাম’ বিভাগের মুখোমুখি হন। সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে লেখকের জীবনের নানা দিক।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার লেখালেখির শুরুটা কবে এবং কীভাবে হলো? রহিমা আক্তার মৌ : ২০০২ থেকে ২০০৮ ব্যক্তিগত জীবনে অদেখা ঝড়। মনে হচ্ছিলো মাঝ নদীতে সাঁতার কাটছি। কিনারা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। খুব নিষ্ঠুর পরিকল্পনাও ভেবেছি, সাথে সুন্দর একটা পথ খুঁজছি। কিন্তু সেটা কি, তা ভেবে পাচ্ছিলাম না। ২০০৮ মেয়ের স্কুল থেকে ফেরার পথে পত্রিকার দোকান থেকে পড়ার জন্যে কিছু ম্যাগাজিন নিয়ে আসি। পড়তে থাকি, কিছু লেখার সাথে লেখকদের মোবাইল নম্বর পাই। তাদের সাথে কথা বলে জিজ্ঞেস করি, ‘লিখলেই কি পত্রিকায় ছাপা হয়?’। ওনারা জানালেন, ‘পছন্দ হলে ছাপায়’। আমি শুরু করলাম মন দিয়ে পড়া। বিভিন্ন পত্রিকা থেকে ঠিকানা সংগ্রহ করি, চারপাশের সমস্যা নিয়ে পত্রিকার চিঠিপত্রের কলামে ছোট ছোট লেখা পাঠাতে শুরু করি। এভাবেই লেখালেখির শুরু ২০০৯ সালে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : গল্প, কবিতা, ও প্রবন্ধের মধ্যে কোন ধারাটি আপনাকে বেশি আকর্ষণ করে? রহিমা আক্তার মৌ : স্কুল-কলেজ কবিতা পড়তে ভালো লাগতো। ভালো লাগা কিছু কবিতা নিজের নোটখাতায় লিখেও রেখেছি, কিন্তু কবিদের নাম সাথে লিখিনি। নিজেও ২/৪টা মনের কথা লিখেছি। একটা সময় নোটখাতা বের করে আর বুঝতে পারিনি কোনটা আমার লেখা কোনটা কবিদের। ২০০৯ সাল থেকে যখন পড়তে পড়তে লিখতে শুরু করি তখন বুঝলাম গদ্য (গল্প, কলাম, প্রবন্ধ, ফিচার) আমাকে টানে খুব। আর পদ্য (কবিতা, ছড়া) লেখা খুব কঠিন। পদ্যকে আমি বাংলা সাহিত্যের সারমর্ম বলি আর গদ্যকে বলি ভাবসম্প্রসারণ। ২০০৯ সালে প্রয়াত সিনিয়র সাংবাদিক আতাউস সামাদ স্যার বলেছিলেনÑআমার লেখায় আবেগ অনেক। আবেগ দিয়ে গদ্য লেখাই সহজ। গদ্য আমাকে আকর্ষণ করে আর গদ্য লিখতেই সাচ্ছন্দ্যবোধ করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় লেখার অভিজ্ঞতা কেমন? রহিমা আক্তার মৌ : বরাবরই জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় লিখছি আমি। জাতীয় পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হলে আনন্দ বেশি হয় কারণ এই পত্রিকা দেশ-বিদেশের পাঠকরা পড়ে, পরিচিতি সেভাবে হয়। স্থানীয় পত্রিকা আবার আমাদের জেলা বা মফস্বলের পাঠকদের কাছে পৌঁছায়। তারা খুব যত্ন করে পড়ে আবার সংগ্রহেও রাখে। লেখা প্রকাশের অনেকদিন পর যখন কেউ লেখার সমালোচনা করেন অনেক আনন্দ লাগে। একটা সময় লেখা প্রকাশের সময় পত্রিকা, ম্যাগাজিন বা এলাকা দেখতাম না। লেখা প্রকাশিত হবে এটাই মাথায় ছিলো। স্থানীয় পত্রিকা থেকে যখন লেখা চায় তখন নিজের প্রতি আস্থা বাড়ে এই বলে যে তারা আমাকে চেনেন, আমার লেখা ছাপাতে চান। আবার এমনও দেখেছি জাতীয় পত্রিকায় লেখা প্রকাশের পর স্থানীয় পত্রিকায় সেই লেখা প্রকাশিত হয়েছে, তখনও আনন্দ পাই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : লেখালেখির ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোতে আপনি সবচেয়ে বেশি আগ্রহ পান? রহিমা আক্তার মৌ : যখন কেউ লেখালেখি শুরু করে তখন যা মনে আসে তাই লিখতে থাকে। আমিও তাই করেছি। পত্রিকার প্রায় সব বিভাগেই আমি লিখেছি তাই ইস্যু পেলেই কোন বিভাগে কী লিখতে হবে তার উপর লেখা রেডি করি। একটা সময় সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লিখেছি খুবই, সেটা কলাম হোক বা প্রবন্ধ বা ফিচার হোক। করোনার পর অনেক পত্রিকা বন্ধ, অনেক পত্রিকার পেইজ কমে যাওয়ায় সমসাময়িক লেখার জায়গা কমে গেছে বলে সেসব কম লিখি। দিবসভিত্তিক লেখা লিখতে আগ্রহ পাই, কারণ লেখা আগেই রেডি করা যায়। আমরা যারা সংসার সামলে লেখালেখি করি তারা চাইলেই সময় বরাদ্দ রাখতে পারি না লেখালেখির জন্য, তাই আগে আগে রেডি করতে হয় আমাদের। মোট কথা, একটু সময় নিয়ে বিষয়ভিত্তিক লেখার উপর আমার দুর্বলতা। বিভিন্ন পেশার নারীদের নিয়ে বেশ কিছু কাজ করার ইচ্ছা আছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কোন লেখক বা ব্যক্তিত্ব আপনাকে লেখালেখিতে অনুপ্রাণিত করেছেন? রহিমা আক্তার মৌ : লেখালেখির বিষয়ে বলতে গেলে আমি সবসময় যার কথা বলি আর বলবো, তিনি হলেন রংপুরের সালমা সেতারা আপা। সেই ২০০৯ থেকেই তাঁর সাথে আমার যোগাযোগ। তিনি আমাকে বলেছেন, ‘মৌ, গল্প কবিতা চিরকাল তোমার থাকবে। তবে পাঠকের কাছে যেতে হলে তোমাকে বিষয়ভিত্তিক লেখা লিখতে হবে’। আপার এই কথা আমার জীবনের উৎসাহ। আসলে লিখতে হলে পড়ার বিকল্প নেই। দৈনিক পত্রিকার কলাম পড়ে পড়ে কলাম লেখা শিখেছি আমি। সত্যি বলতে লেখক হওয়ার জন্য লেখালেখি শুরু করিনি। আমি পড়তে পড়তে লেখক হওয়ার চেষ্টা করছি। কোন ব্যক্তি নাম সেভাবে বলবো না। তবে যা লিখতে চাই তা পড়তে হবে অনেক। বাংলা সাহিত্যের রাজকন্যা সেলিনা হোসেন আপার সাথে যখনই দেখা হয়, আমার লেখালেখির বিষয় শুনে আপা বলেন, ‘সবাইকে যে গল্প, উপন্যাস লিখতে হবে এমন নয়, তুমি যে কাজগুলো করছো এগুলো চিরস্থায়ী কাজ’। ২০২৪ সালে প্রথম উপন্যাস আসে আমার। উপন্যাস শুরুর আগে কয়েকটি উপন্যাস পড়েছি, সেটা প্রতিষ্ঠিত লেখকের পাশাপাশি নতুন লেখকদের। বুঝেছি উপন্যাস লিখতে হলে আরো অনেক উপন্যাস পড়তে হবে আমায়।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার লেখায় সমাজের কোন বিষয়গুলোকে আপনি বেশি গুরুত্ব দেন?

রহিমা আক্তার মৌ : সত্যি বলতে বরাবরই নারীরা সব দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে। আমি সব ইস্যু নিয়ে লিখলেও দিনশেষে দেখছি নারীদের নিয়ে লেখা আমার বেশি। নারীদের যাপিত জীবন, সমস্যা এসব নিয়ে শতশত ফিচার কলাম লিখেছি, তবে ক্ষেত্র ভিন্ন। প্রেম-ভালবাসা নিয়ে অনেকেই লিখেন, আমিও লিখি। তবে আমার মনে হয় লেখায় অন্তত একটা টিপস যদি দেয়া যায় পাঠকের জন্য। আমার একটা লেখা ১০০ জন পড়ার পর যদি একটা টিপস একজনের কাজে আসে সেটাই সার্থকতা। লেখালেখির ১৫ বছরের মাথায় এসে দেখছি সমাজ পরিবার, দেশ প্রায় সব বিষয় নিয়ে কিছু হলেও লিখেছি। তবে এটা বুঝি সমাজ পরিবর্তন হচ্ছে সময়ের সাথে, আমাদেরকেও লেখায় পরিবর্তন আনতে হবে সময়ের সাথে তাল রেখে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার লেখা প্রথম কোথায় প্রকাশিত হয়েছিল এবং সেই সময়কার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?

রহিমা আক্তার মৌ : আমার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ইত্তেফাক গ্রুপের সাপ্তাহিক রোববার ম্যাগাজিনে। সেটা ছিলো ‘নর ও নারী’ শিরোনামে কবিতার মতো কিছু। সেদিন আমি ১০টি সংখ্যা কিনেছি। পরিচিতিদের দেখিয়েছি, দিয়েছি। একটা ম্যাগাজিন সবসময় সাথে থাকতো, সবাইকে দেখাতাম যে ছাপার অক্ষরে আমার নাম পত্রিকায়। সাপ্তাহিক নামের ম্যাগাজিন, সাপ্তাহিক ২০০০, দৈনিক ভোরের কাগজ, দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রথম দিকে লেখা বেশি প্রকাশিত হয়েছে। তখন ফেসবুক ছিলো না, লেখা প্রকাশ পেলেই একটা ম্যাসেজ লিখে পরিচিতদের জানাতাম। সম্ভবত ২০০৯ বা ১০ সালের ‘সাপ্তাহিক ২০০০’-এ আমার একটা লেখা ছাপা হয়। ৮০/৮৫ টাকা দিয়ে সংখ্যাটা কিনেছি। সেই টাকা জোগাড় করতে খুবই কষ্ট হয়েছে। আর এখন হাজার শব্দের লেখা প্রকাশ পেলেও পত্রিকা কিনি না। তখন যাদের সাথে আমার লেখা ছাপা হতো তাদের অনেকেই নেই এখন লেখালেখিতে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : পাঠকদের কাছ থেকে কেমন প্রতিক্রিয়া পান? রহিমা আক্তার মৌ : পাঠকের প্রতিক্রিয়া নির্ভর করে লেখার বিষয়ের উপর। আর প্রতিক্রিয়া ফেসবুক টাইমলাইনে লাইক-কমেন্টের সাথে যারা ইনবক্সে আলোচনা-সমালোচনা করেন ভালো লাগে। মজার বিষয় অনেক পুরাতন লেখা পড়ে কেউ কেউ কল দেন সেটা এনজয় করি। লেখকদের জন্য বিশাল প্রাপ্তি গুগলে অনেক লেখাই থাকে। পাঠক সেখান থেকে লেখা পড়ে ফেসবুক আইডি বের করে বলে, ‘আপনিই কি সেই লেখক?’ এমন যোগাযোগগুলো অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। কেউ কেউ আমার লেখার পত্রিকার কাটিং জমা করতেন। এতো বছর পর ফেসবুকে খুঁজে পেয়ে সেসব পাঠাচ্ছেন। এসব দেখে চোখে জল এসে যায়। মজার বিষয় লেখকদের পরিচিত শুধু একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ নয়, তাদের নামেই তাদের বিশ্বব্যাপী পরিচয়।

চাঁদপুর কণ্ঠ : ভবিষ্যতে আপনার কোনো নতুন লেখার পরিকল্পনা আছে? নতুন কোনো বই নিয়ে কাজ করছেন কি? রহিমা আক্তার মৌ : আসলে আমার লেখার বিষয়গুলো একটু ভিন্ন, বলতে গেলে ভিন্ন ধরনের বই। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চারটা বই। শিশুতোষ গল্পের বই, বড়দের গল্পের বই, প্রবন্ধের বই। নারীদের নিয়ে কাজ করেছি আর চলমান আছে। ‘একাত্তর ও নারী’ বইটি ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয়। জনপ্রিয়তা ছিলো অনেক। কলাম-প্রবন্ধের পাশাপাশি আমি ভাষাকন্যাদের নিয়ে কাজ করছি, কলমকন্যাদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ২০২৪ সালে ভাষাকন্যারা বইটি এসেছে। ২০২৫ সালের জন্য আমার ২৫তম বই, ২৫ কলমকন্যাকে নিয়ে লেখা পাণ্ডুলিপি জমা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নতুনভাবে আবার আসছে ‘একাত্তর ও নারী’ বই, জমা দেয়া হয়েছে শিশুতোষ গল্পের দুইটা পাণ্ডুলিপি। ২০২৫ সালে আমার অন্য একটা বিশেষ কাজ আসবে সেটা হলো, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজেরা নজরুলের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয় কিছুদিন আগে। তিনি তাঁর দুটো বই আমাকে উপহার দেন। একটা গল্পের আরেকটা কবিতার। এই বই দুটির শেষ কপি এগুলো। হাজেরা খালাম্মার অনুমতি নিয়ে এই দুই বই আবার নতুন করে পাঠকদের জন্য আমি মেলায় আনার দায়িত্ব নিয়েছি। বইয়ে আমি কিছু লিখছি না। তাঁর বইগুলো শুধু দায়িত্ব নিয়ে আনবো। এই প্রজন্মের পাঠক যেনো তাঁর লেখাগুলো পড়তে পারে। নতুন আরো কিছু কাজের কথা ভাবছি, তা বলছি না আপাতত। আপাতত প্রকাশিত বই ২১টি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : যারা নতুন করে লেখালেখি শুরু করতে চান, তাদের জন্য আপনার কী পরামর্শ থাকবে? রহিমা আক্তার মৌ : যে যে বিষয় নিয়ে লিখতে চায়, সে বিষয়ে বেশি পড়তে হবে। যে পত্রিকার যে বিভাগে লিখতে চায় সেই পত্রিকার সেই বিভাগের লেখা বেশি বেশি পড়তে হবে। লেখা প্রকাশিত হবেই এমন মনোভাব দূর করতে হবে। আজ লেখা পাঠাচ্ছে, বিভাগীয় সম্পাদক পড়ছে। লেখা প্রকাশিত না হোক তার নাম তো সম্পাদকের চোখে পড়েছে। লেখা প্রকাশিত হয়নি মানেই যে লেখা হয়নি তা নয়। পড়তে থাকো, লিখতে থাকো, পাঠাতে থাকো। সব লেখার সাথে নিজের চলমান মোবাইল নম্বর দিবে, এতে করে বিভাগীয় সম্পাদক তোমায় খুঁজে পাবে। একটা লেখা এক পত্রিকায় প্রকাশ হয়নি বলে মন খারাপ করা যাবে না। অন্য পত্রিকায় ছাপা হতে পারে। আর এক লেখা একই সাথে কয়েক পত্রিকায় না দেয়াই উত্তম।

চাঁদপুর কণ্ঠ : লেখালেখিতে সফল হতে গেলে কী কী গুণাবলি থাকা জরুরি বলে মনে করেন? রহিমা আক্তার মৌ : পড়ার মানসিকতা থাকতে হবে। ধৈর্য থাকতে হবে। নিজে যা পারে না তা সহজে স্বীকার করার মানসিকতা থাকা। যে ধরনের লেখায় আগ্রহ সেই ধরনের লেখা বেশি পড়া।

উল্লেখ্য, রহিমা আক্তার মৌ ব্যক্তিজীবনে বহু সম্মাননা অর্জন করেছেন। তন্মধ্যে বাঙ্গালী কণ্ঠ লেখক পুরস্কার (২০১৮), কচিপাতা ম্যাগাজিন লেখক পুরস্কার (২০১৯), কথাসাহিত্যে কবি জীবনানন্দ দাশ পুরস্কার (২০১৯), মহাত্মা গান্ধী পুরস্কার (২০২০), একাত্তর ও নারী বইয়ের জন্যে সম্মাননা (২০২৩), মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে উদীয়মান বাংলাদেশ সম্মাননা (২০২৩) ও বাংলার বীর ফাউন্ডেশন সম্মাননা (২০২৪)।

তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ : মুক্ত আকাশ কতদূর (সংকলন ২০১৫), গল্পের আয়নায় মানুষের মুখ (গল্পগ্রন্থ, ২০১৭), নক্ষত্ররাজির কথা (প্রবন্ধগ্রন্থ, ২০১৭), মৌ-এর চিঠির সাতকাহন (চিঠির গ্রন্থ, ২০১৭), দেশ আমার ভাবনা আমার (কলামগ্রন্থ,২০১৮), একাত্তর ও নারী (মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ, ২০১৮), প্রিয়ন্তির সারাবেলা (শিশুতোষ গ্রন্থ, ২০১৯), অল্প স্বল্প গল্প (অনুগল্পের গ্রন্থ, ২০১৯), গল্পগুলো তুলতুলির (শিশুতোষ গ্রন্থ, ২০১৯), বেলা শেষের গদ্য (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯), জীবনের টুকরো গল্প (গল্পের বই, ২০২০), ভূতের বৃষ্টি (শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ, ২০২১), বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ (প্রবন্ধ গ্রন্থ, ২০২১), মুক্তিযুদ্ধ ও আব্দুল মান্নান মতিন (সাক্ষাৎকার ও স্মৃতিচারণ গ্রন্থ, ২০২১, মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে নিয়ে), হাঁটুতে শেলের টুকরো (মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্পগ্রন্থ, ২০২২), গন্তব্যহীন যাত্রা ২০২৩ (গল্পগ্রন্থ), গল্পে গল্পে ফেব্রুয়ারি (শিশুতোষ গল্প, ২০২৩), একাকী আমি ও অরণ্য (উপন্যাস, ২০২৪), ভাষাকন্যারা (ভাষা আন্দোলনের নারীদের নিয়ে, ২০২৪), কলমকন্যারা (বাংলা সাহিত্যের নারীদের নিয়ে) ও মেঘনার মিষ্টি স্বপ্ন (শিশুতোষ গল্প, ২০১৬, এই বইটি বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রথম মা ও মেয়ের বই। মা রহিমা আক্তার মৌ, বড় মেয়ে রৌদ্র মালিহা, ছোট মেয়ে অভ্র)। প্রকাশের অপেক্ষায় আছে ‘কলমকন্যারা’, ‘একাত্তর ও নারী’, ‘শিউলি তলায় ফুল কুড়াই’ (শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ) ও ‘সাদা শাড়ির ভূত’ (শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ)।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়