রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২১, ২০:১৫

স্কুলে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা-১১

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই একজন শিশুকে মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে

হাছান খান মিসু
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই একজন শিশুকে মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে

সকল শিশু কিশোরেরই প্রত্যাশা থাকে, পড়াশোনা করে জীবনে সফল হওয়ার। আর পড়াশোনার জন্য আমাদের জীবনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সর্বাধিক ভুমিকা পালন করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই একজন শিশুকে মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। সেখানে একজন শিশুর নতুন জীবনের বীজ বপন করা হয়। কিন্তু বর্তমানে কোভিড -১৯ ভাইরাসের সংক্রমণের কারনে সারাবিশ্ব স্থবির হয়ে গিয়েছে। আমাদের প্রিয় বাংলাদেশও তার ব্যাতিক্রম নয়।

কথাগুলো বলেছেন বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র সাজিদ রহমান রাফি। দৈনিক চাঁদপুর কন্ঠের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের জন্য 'স্কুলে ফিরতে শীক্ষার্থীর ব্যাকুলতা' শীর্ষক শিরোনামে কথা হয় তার সাথে।

সে জানায়, করোনার কারনে সারাদেশ প্রায়ই পড়েছে লকডাউনের কবলে। যার ফলে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বারবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ দিয়েও সরকার তা খুলতে ব্যর্থ হয় বিভিন্ন সময় করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর উর্ধ্বগতির কারনে।

আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজও তার ব্যাতিক্রম নয়। বর্তমানে আমি নবম শ্রেণির একজন ছাত্র। কিন্তু কোভিড - ১৯ পরিস্থিতির সুচনাকালে আমি ছিলাম ৮ম শ্রেনির একজন ছাত্র অর্থাৎ আমি ছিলাম একজন জে এস সি পরিক্ষার্থী। বছরের প্রথম তিন মাস যাবত খুব ভালো প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম কারন আমার লক্ষ্য ছিল জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়া।

বছরের প্রথম দিক দিয়েই চীনে করোনার থাবা দেখে ভয় পেলেও কখনো কল্পনা করতে পারিনি যে করোনা তার ভয়ঙ্কর থাবা ছুড়ে দিবে বাংলাদেশের দিকেও। যাহোক করোনার সংক্রমণ রোধের উদ্দেশ্যে সারাদেশে লকডাউন দেয় সরকার ১৫ দিনের জন্য। স্কুল বন্ধ দেওয়ায় আমি এবং আমার বন্ধুরা অনেক আনন্দ বোধ করি। কিন্তু কে জানতো, সেই আনন্দের এত চড়া মূল্য দিতে হবে।

আজ দেড় বছর যাবত বিদ্যালয় বন্ধ। যদিও মাঝে মাঝে এসাইনমেন্ট পরীক্ষার কারণে বন্ধুদের সাথে দেখা হয়, তবুও আগের সেই ক্লাসের সময় দুষ্টুমি, টিফিন টাইমে বন্ধুদের সাথে একত্রে বসে টিফিন ভাগ করে খাওয়া, শিক্ষকের আদরমাখা শাসন সবকিছুই খুব মিস করি। কোভিড -১৯ পরিস্থিতিতির প্রথম অংশে জে এস সির জন্য প্রস্তুতি বন্ধ না করলেও পরবর্তী সময় যখন সরকার জানান যে জে এস সি পরীক্ষা হবে না, সবাই কে অটো পাস দিয়ে দেবেন তখনই আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়।

জেএসসি পরীক্ষা না দিতে পেরে মনে হলো যেনো আমি জীবনের একটি বিরাট অংশ হারালাম। তখনই বুঝলাম যে, বিদ্যালয়ে সময়কাল আসলে কতোটা আনন্দময় এবং মধুর ছিল। একসময় ভাবতাম যে বিদ্যালয়ে আসা একটি বিরক্তকর কাজ। সেখান শিক্ষকরা শুধু পড়াশোনাই করান, কিন্তু আজ মনে হচ্ছে বিদ্যালয়ে বন্ধুদের খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ, বিভিন্ন ধাঁধা, বৃত্তি পরীক্ষাসহ জীবনের বহু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলোও অনেক মিস করছি। আর বর্তমানে বিদ্যালয়ে যাওয়াও একটি বহু আকাংঙ্খিত ব্যাপার হয়ে দাড়িঁয়েছে।

আসলে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে একটা প্রচলিত আওয়াজ আছে যা অনেক সময়ে অনেক অভিভাবককে বলতে শুনেছি যে স্কুলে পড়াশোনা হয়না।কিন্তু করোনা এসে আমাদেরকে বুঝিয়ে দিল যে স্কুল ছাড়া পড়াশোনা হয় না।

যদিও এখন বিশ্বের অনেক দেশেই করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়েছে।। আর আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই এখন ভ্যাকসিন নিচ্ছে। হয়তো পরিস্থিতি খুব শীঘ্রই নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং আমরা আবারও আমাদের বহু কাংখিত স্কুল ক্যাম্পাসে আগেরই মতো ফিরে যেতে পারবো। সেই বহুল কাংখিত মুহূর্তের প্রত্যাশায় আমরা চাতক পাখির মতো আজও অপেক্ষায় আছি,কখন ঘোষণা আসবে যে এখন থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাসগুলো খুলে দেওয়া হলো!

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়