প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২১, ১৬:০৭
স্কুলে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা-১০
স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সময়ের দাবী
যতই সময় গড়াচ্ছে ততই হাঁপিয়ে উঠছে শিক্ষার্থীরা। ঘরবন্দি জীবন থেকে মুক্তি চায় তারা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার গণদাবী উঠেছে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে। গ্রামাঞ্চলের বহু ছাত্রী পারিবারিক চাপে বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছে। ছাত্ররা জড়িত হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের কাজে। এতে করে পড়ালেখার লাইন থেকে বিচ্যুত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
|আরো খবর
অনলাইন পাঠদানের উপর নির্ভরশীল হয়ে একঘেয়েমী ভাব চলে এসেছে অনেকে মাঝে। যে শিক্ষার্থীরা এক সময় স্কুল ছুটির প্রতিক্ষায় থাকতো তারাই এখন স্কুল খোলার প্রতিক্ষায় আছে। স্কুল বন্ধকালীন সময়ে কেমন চলছে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা, কি ভাবছে তারা, কেমন যাচ্ছে তাদের মানসিক অবস্থা -তা নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠের ধারাবাহীক বিশেষ আয়োজন 'স্কুলে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা।'
এই পর্বে কথা বলা হয় ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরস্থ ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী কথিকা চক্রবর্তী তৃণার সাথে। করোনাকালীন পড়ালেখা, অনলাইন ক্লাস, এ্যাসাইনমেন্ট ও আসন্ন নভেম্বরে সম্ভাব্য অনুষ্ঠিতব্য চার বিষয়ের এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে কথা বলা হয় কৃতী এই শিক্ষার্থীর সাথে। চাঁদপুর কণ্ঠের পর্যায়ক্রমিক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
চাঁদপুর কণ্ঠ: করোনায় কেমন চলছে পড়ালেখা? কথিকা চক্রবর্তী তৃণা: বিগত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবুও বাসায় থেকে যতটুকু পারছি পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ: মানসিক অবস্থা কেমন? কথিকা চক্রবর্তী তৃণা: স্কুল বন্ধ থাকায় অনেকদিন বন্ধু-বান্ধব ও শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের সংস্পর্শে যেতে পারছি না। খুব মিস করি সবাইকে। সবার জন্য মন খারাপ লাগে। আবার পরিবারের সবার সাথে আগের চেয়ে একটু বেশি সময় কাটাতে পারছি বলে ভালো লাগছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ: নভেম্বর-ডিসেম্বরে ৪ বিষয়ে এসএসসি পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। আসন্ন পরীক্ষাকে কিভাবে দেখছেন? কথিকা চক্রবর্তী তৃণা: চার বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়াটিকে আমি ভালোভাবেই দেখছি। নিজের যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে প্রত্যাশিত ফল পাব, এটাইতো আকাঙ্খিত। অন্তত এটি অটোপাশ থেকে অনেক বেশি ভালো।
চাঁদপুর কণ্ঠ: আপনি কি মনে করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সময়ের দাবী? কথিকা চক্রবর্তী তৃণা: অবশ্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সময়ের দাবী।
চাঁদপুর কণ্ঠ: অনলাইন পাঠদান কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে বলে মনে করেন? কথিকা চক্রবর্তী তৃণা: অনলাইন পাঠদানে ভালো খারাপ দু'টি দিকই রয়েছে। অনলাইন পাঠদানের মাধ্যমে আমরা শিক্ষকদের সংস্পর্শে কিছুটা হলেও আসতে পারছি। পাঠ্য বইয়ের অনেক জটিল বিষয় বুঝ নিতে পারছি। তবুও সরাসরি ক্লাসে পাঠদানের বিস্তর পার্থক্য আছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ: শিক্ষার্থীরা এ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে কতটা উপকৃত হচ্ছে বলে মনে করেন? কথিকা চক্রবর্তী তৃণা: এ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে আমরা অনেকটাই উপকৃত হচ্ছি। এর মাধ্যমে আমরা একদিকে যেমন নতুন কিছু শিখতে পারছি অন্যদিকে পুরাতন পড়াগুলোও রিভিশন হয়ে যাচ্ছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ: স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়ে আপনার মতামত কী? কথিকা চক্রবর্তী তৃণা: স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আমি সহমত পোষণ করছি। করোনাকালীন সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি জোরদার করে, সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিত করে, যে সকল শিক্ষার্থীর বয়স ১৮ এর উপরে তাদের টিকার আওতায় এনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার উদ্যোগ নিতে পারে সরকার।
চাঁদপুর কণ্ঠ: করোনায় পড়ালেখা ছেড়েছে বা বিয়ে হয়ে গেছে বা কাজে জড়িয়েছে এমন কোন সহপাঠী আছে কি? থাকলে তাদের সংখ্যা কত? কথিকা চক্রবর্তী তৃণা: আমার সহপাঠীদের মধ্যে ২-৩ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। ছাত্রদের মধ্যে ১০-১২ জন বিভিন্ন কাজে যোগ দিয়েছে। তবে আমার জানা মতে কেউই পড়ালেখা ছেড়ে দেয়নি। পাশাপাশি স্কুল খুললে পড়ালেখাটাও চালিয়ে যাবে বলে জেনেছি।