প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২১, ০১:৫৩
কলেজে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা-০৮
পরিচিত অন্তত ৩০ জন ছোট বোনের বাল্যবিবাহ হয়েছে, স্কুল খোলা থাকলে এমনটি ঘটতো না
অতিমারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে প্রায় দেড় বছরের মত বন্ধ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের অবসরকালীন সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছেড়েছে অনেকে। জেলা শহরেই মাধ্যমিক স্কুলের ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ৩০ থেকে ৪০ জন ছাত্রীর বাল্যবিবাহ হয়েছে। এমটি জানিয়েছে মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী, চ্যাম্পিয়ন বিতার্কিক তাসনিয়া ইসলাম নোভা। বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে ওই সকল ছাত্রীদের বাল্য বিয়ের বলি হতে হতো না। ছাত্রদের জড়াতে হতো না শিশুশ্রমে। চাঁদপুর কণ্ঠের বিশেষ আয়োজন 'কলেজে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা' ধারাবাহীক সংবাদের আজকের পর্বে কথা বলা হয় চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের কৃতী এই শিক্ষার্থীর সাথে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তাৎপর্য, অনলাইন ক্লাসের প্রতিবন্ধকতা ও সমাধানে করণীয় বিষয়ে পর্যায়ক্রমিক প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
|আরো খবর
- কেমন চলছে করোনাকালীন পড়ালেখা? - করোনায় পড়ালেখার প্রতি কিছুটা অমনোযোগী হয়ে উঠেছি যা অস্বীকার করা যাবেনা। প্রায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরই একই অবস্থা। তবে অনলাইন ক্লাস করার মাধ্যমে লেখাপড়ার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। যদিও মাঝে মধ্যে নেট প্রবলেম এর কারনে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।
- অনলাইন ক্লাস করতে গিয়ে কি কি প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন? - সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতাই হলো মোবাইল মেগাবাইট। সকল শিক্ষার্থীর পক্ষে ডাটা প্যাক কিনে পুরো মাস অনলাইন ক্লাস করার সুযোগ থাকেনা। তাই মহামারীর এই সময়ে স্কুল কলেজ খোলার অবস্থা না থাকলেও শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ডাটা প্যাক এর ব্যবস্থা করলে অনেকেই এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে বলে আমি মনে করি।সেক্ষেত্রে স্কুল, কলেজ না খুলে এটি বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে কাজে লাগানো যায়।
- দীর্ঘদিন একটানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন? - আজ পর্যন্ত টানা ৫৩১ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারনে অনেকটা একঘেয়েমী চলে এসেছে। অনেকটা অলসতাও কাজ করে। এই অলসতা খুব সহজে কাটানো যাবে না। দীর্ঘদিন একটি লোহা ফেলে রাখলে যেমন মরিচা পরে তেমনি দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধেও শিক্ষার্থীদের মেধায় মরিচা পড়ে যাচ্ছে।
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সবচেয়ে নেতিবাচক দিক কোনটি বলে মনে করছেন? - করোনায় লেখাপড়া ছেড়েছে এমন শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক। আমার পরিচিত দশম শ্রেণিতে পরে এমন অনেক ছোট বোনের বাল্যবিবাহ হয়েছে। এদের সংখ্যা প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন! শহরেরই এই অবস্থা, গ্রামে আরো কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে এমনটি হতো না।
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আপনার কোন মতামত আছে? - স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল কলেজ খোলার পদক্ষেপ নেয়া এখন সময়ের দাবী। তবে বিশেষ সচেতনতার সাথে পদক্ষেপ নিতে হবে। পুরো সপ্তাহে খোলার সিদ্ধান্ত না নিয়ে সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েকদিনের জন্য পরীক্ষামূলক খোলা যেতে পারে। কেননা পরিস্থিতি এখনো সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। দোয়া করি মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে সুস্থ রাখুক (আমিন)।