প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২১, ১৮:৪৩
স্কুলে-কলেজে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা-০৬
পরিপূর্ণ গাইডলাইনের অভাবে শিক্ষার্থীদের পড়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে
দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবন। শ্রেণি পাঠদান সরাসরি বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা ও উন্নত ক্যারিয়ারের জন্য পরিপূর্ণ গাইডলাইন পাচ্ছে না। যার ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ার আগ্রহ দিনদিনই কমে যাচ্ছে। করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি খেয়েছে ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। সকল প্রস্তুতি নিয়েও পরীক্ষার কয়েকদিন আগে বন্ধ হয়ে যায় তাদের পরীক্ষা। তারপর থেকে দীর্ঘ দেড় বছরের বিরতি। এর মধ্যে অটোপাশের ভিত্তিতে তাদের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল দিলেও ভার্সিটি ভর্তি নিয়ে শুরু হয় অনিশ্চয়তা।
|আরো খবর
এসব বিষয় নিয়ে কি ভাবছেন এই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা, তাদের মানসিক অবস্থাইবা কেমন? তা' নিয়ে শুরু হয় চাঁদপুর কণ্ঠের বিশেষ আয়োজন 'স্কুল-কলেজে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা'। এই পর্বে কথা বলা হয় চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুল বুশরার সাথে।
- করোনায় কেমন চলছে পড়ালেখা? - বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পেছানোটা প্রস্তুতির ধারাবাহিকতা বিঘ্নিত করছে। একেক সময় একেক তারিখ দিয়ে পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়ায় পরীক্ষার্থীদের মনোযোগ সরিয়ে ফেলছে। দীর্ঘ সময় ধরে একই মানদণ্ডে প্রস্তুতি চালিয়ে যাওয়াটা একজন পরীক্ষার্থীর জন্য বেশ কষ্টকর ও অতিরিক্ত চাপদায়ক।
- মানসিক অবস্থা কেমন? - করোনায় পড়ালেখার ধারাবাহিকতা বজায় রাখাটা কঠিন। পরিপূর্ণ গাইডলাইনের অভাবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে।
- আপনি কী মনে করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সময়ের দাবী? - বিপর্যস্ত ও পরিবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন ও হতাশাগ্রস্ত করে তুলছে। সার্বক্ষণিক ঘরে থাকায় তাদের মাঝে আচরণগত পরিবর্তন চলে আসছে। এধরনের অস্বাভাবিক জীবন ও শিক্ষাব্যবস্থা মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাচ্ছে।
- গত ৫৩০ দিন টানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। আপনার প্রতিক্রিয়া কি? - প্রায় দেড় বছর ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা হতে শিক্ষার্থীদের বড় একটা গ্যাপ তৈরি হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে একটা বড় অংশ শিক্ষা থেকে ছিটকে পড়েছে। সাথে রয়েছে সেশনজট। এরকম চলতে থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হবে। এ সমস্যা নিরসনে অতিশীঘ্রই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকায় বহুমুখী শিক্ষা ও ক্রীড়া বিনোদন গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। পরীক্ষার চাপ না থাকায় ও ক্যারিয়ার সচেতন না হওয়ায় ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারিয়ে ইন্টারনেট, টিভি, কার্টুনে, গেইমে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
- অনলাইনে পাঠদান কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে বলে মনে করেন? - করোনাকালীন অনলাইন পাঠদান নিঃসন্দেহে ফলপ্রসূ কিন্তু তাতে অভ্যস্ত ক'জন! প্রান্তিক অঞ্চলগুলোতে এখনো ইন্টারনেট সেবা অনিশ্চিত হওয়ায় অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা পৌঁছে দেয়া সম্ভবপর হচ্ছে না। ফলে অনলাইন ক্লাসের সুফল শহরে, প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে।
- স্বাস্থবিধি মেনে স্কুল কলেজ খোলার বিষয়ে আপনার মতামত কি? - শিক্ষা প্রশাসন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ধাপে ধাপে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে। উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা স্তরে টিকা প্রদানের পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করি।