প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২১, ২১:০১
আগাছা-কচুরিপানাতে কৃষকের লাভের হাসি
পানিতে নিমজ্জিত জমিতে আগাছা-কচুরিপানায় ভর্তি থাকে বর্ষাকালে। আগাছা কচুরিপানা পরিস্কার করে জমিকে চাষাবাদ উপযোগী করে তুলতে কৃষককে অনেক অর্থ ব্যয় ও পরিশ্রম করতে হতো। বছরের সিংহভাগ সময় জমিগুলো থাকতো পরিত্যক্ত। সেই আগাছা-কচুরিপানাকে সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করছে কৃষকেরা। কচুরিপানাকে স্তূপ করে ভাসমান বেড বানিয়ে সবজি চাষ করা হচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা।
|আরো খবর
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায় ক’বছর ধরে ভাসমান বেডে সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। উপজেলার অলিপুর, বলাখাল ও বাকিলার কয়েকটি মাঠে ভাসমান বেডে লাউ, মিষ্টি কুমড়া ও শসার চাষ করা হয়েছে। ভাসমান বেডে সবজি চাষ অধিক লাভজনক বলে জানা যায়। ভাদ্র মাসে কচুরিপানা স্তুপ করে ভাসমান বেড বানানো হয়। সে বেডে ২০/২৫দিন পর সবজির বীজ বপন করা হয়। আর্শি^ন মাসের শেষের দিকে সবজির ফলন আসতে থাকে। শীতের আগাম এ সবজির ব্যাপক চাহিদা থাকে। তাই দামও ভালো পান কৃষকেরা। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে এ সবজি দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর হাজীগঞ্জ উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে ভাসমান বেডে লাউ, মিষ্টি কুমড়া ও শসা চাষ হয়েছে। এতে প্রায় ৫০০ থেকে ৫৭০ জন কৃষক এ চাষাবাদে সম্পৃক্ত। ভাসমান বেডে চাষ করা সবজিগুলো শীতে আগাম বাজারে আসবে। আগাম বাজারে আসায় কৃষকেরা সবজির ভালো দাম পায়। কচুরিপানা দিয়ে ভাসমান বেড বানিয়ে সবজি চাষে পতিত জমির ও সময়ের উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত হয়। কচুরিপানায় বিদ্যমান পুষ্টিগুণের কারণে কুমড়ার ফলন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হয়।
কৃষক মোঃ ইউছুফ (৬০) জানান, আমি ১২ বছর ধরে ভাসমান বেডে লাউ, মিষ্টি কুমড়া ও শসা চাষ করি। এ বছর আমি ৪৮ শতাংশ জমিতে চাষ করেছি। সবজি চাষ শেষে জমিগুলোতে আমরা ধান চাষ করি। তখন আমাদের বেশি সার দিতে হয়না। কচুরিপানা পঁচা পরবর্তী ফসলেরও সারের কাজ করে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভাসমান বেডে সবজি চাষে বেশি লাভজনক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম জানান, ভাসমান বেডে সবজি চাষ করা কৃষকদের সব সময় সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হয়। কচুরিপানা দিয়ে ভাসমান বেড বানিয়ে সবজি চাষে জমির উর্বরতা বাড়ে। জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয়না। এ পদ্ধতিতে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করা হয়।