প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৬
শ্রীনগর আড়িয়াল বিলে নজর কারা মিষ্টি কুমড়া
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ঐতিহ্যবাহী আড়িয়াল বিলের নজরকাড়া মিষ্টি কুমড়া। শ্রীনগর বাজার থেকে মাত্র সাড়ে চার কিলোমিটার পথ পার হলেই গাদিঘাট গ্রাম। আড়িয়াল বিলের শুরুটা মূলত গাদিঘাট থেকেই। ১৩৬ বর্গ কিলা মিটারের আড়িয়াল বিল দেশের মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বিল। শীতের শেষের দিকে আড়িয়াল বিলে গেলে চোখে পরবে বৃহৎ আকারের নজরকাড়া মিষ্টি কুমড়া। দেশের সর্বত্রই আড়িয়াল বিলের মিষ্টি কুমড়ার ব্যপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া এর নাম ডাক রয়েছে দেশব্যাপি। কুমড়া গুলো পরিপক্ক হওয়ার পর জমি থেকে গন্তব্য স্থলে পাঠানোর পালা চলে। কুমড়াগুলো বৃহৎ আকার হওয়ার কারনে যে কারও মন কারে। বিল থেকে এ সকল মিষ্টি কুমড়া পঠানোর অপেক্ষায় রাস্তার দু’পাশে সারি সারি ভাবে রাখা হয়ে থাকে।
মুন্সীগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ ঢাকার মিরপুর, কাওয়ান বাজার, সাভার সহ মাদারিপুর, ফরিদপুর, নারায়নগঞ্জ, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আড়িয়াল বিলের মিষ্টি কুমড়া পাঠানো হয়ে থাকে। আড়িয়াল বিলের কোন কোন মিষ্টি কুমড়া দুই মনেরও বেশী ওজনের হয়ে থাকে। আকৃতি ও স্বাদের দিক দিয়ে কোন কিছুর সাথে তুলনা করা যায় না।
জানা যায়, আড়িয়াল বিলে প্রতি ৪ একর জমিতে ৭০/৮০ টি মিষ্টি কুমড়া বীজ রোপন করে চাষিরা ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করে থাকে। তবে সার, ওষুধ ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ও নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হয় তাদের। এছাড়া জমি থেকে মিষ্টি কুমড়া তোলার জন্য প্রতি বছর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মাস চুক্তিতে শ্রমীক নিয়োগ করা হয়ে থাকে। নৌকা দিয়েও দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌছে মিষ্টি কুমড়া। ওজন ও কেজী অনুযায়ী বিক্রি করা হয়ে থাকে এই মিষ্টি কুমড়া গুলো। প্রতি পিছ কুমড়া ২’শ টাকা হতে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত ও কেজী ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন মিষ্টি কুমড়ার উপস্তিতি অনেক অসুখ থেকে মুক্তি দেয়। মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমান ভিটাামন এ রয়েছে। বিটাক্যারোটিন সমৃদ্ধ এ সবজিটি তাই চোঁখের জন্য খুবই উপকারি। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ মিষ্টি কুমড়া ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে। মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি’ও রয়েছে। যা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। সর্দি, কািস ও ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধে করতে সাহায্য করে। শরীরের ফ্রি রেডিকাল ড্যামেজ প্রতিরোধে মিষ্টি কুমড়া বিশেষ ভুমিকা পালন করে বলে জানাযায়। আড়িয়ার বিলে শুধু মিষ্টি কুমড়াই জন্মে না। পাশা-পাশি এ বিলে কড়ল্লা, খিরাই, টমেটো, শশা, বেগুন, লাউ, ঢেরস, পাতাকপি, কাচামরিচসহ বিভিন্ন সাকসব্জি চাষ হয়ে থাকে। এছাড়া বিলে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের চাষ করা হয়। এখান কার কুমড়া প্রসিদ্ধ। বর্ষায় ডুবে পুরো বিলে পলির আস্তর পরার কারনে একান কার ভুমি খুব উর্বর হয়ে উঠে। বর্ষায় এ বিল হয়ে উঠে মাছের ভান্ডার। তবে শীত মৌসুমে এখান কার সবজির চাহিদা অনেকগুন বেড়ে যায়।