প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৩, ২০:৫২
মতলবে ভুট্টার চাষ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
ন্যায্যমূল্য না পেয়ে মূলধন হারানোর আশঙ্কায় কৃষক
গত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর বেশি ভুট্টা চাষে আগ্রহ দেখা গেছে কৃষকের। চলতি মৌসুমে মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ভুট্টার চাষ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। কৃষকরা ন্যায্য মূল্য না পেয়ে মূলধন হারানোর আশঙ্কায় রয়েছে রয়েছে।
|আরো খবর
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বিগত বছরের তুলনায় মতলবে ভুট্টার আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করছে। চলতি মৌসুমে মতলব উত্তর উপজেলায় ভুট্টার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ২শ’ ৯০ হেক্টর জমি হলেও শেষ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৬শ’ ৮২ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২১ হাজার ৪শ’ ৫৬ টন। মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ভুট্টার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ২শ’ ৪৫ হেক্টর জমি হলেও শেষ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৬শ’ ৩০ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২১ হাজার ৪০ টন।
মতলব অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া ভাল হওয়ায় ভুট্টার আবাদ বেশি হয় বলে কৃষকেরা ভুট্টা চাষে বেশি আগ্রহী। বিগত বছরগুলোতে ভুট্টার দাম ভালো পাওয়ায় এ বছরও দুটি উপজেলার অধিকাংশ কৃষক ভুট্টা চাষ করেছে। এবার ভুট্টার ভালো আবাদ হলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় হতাশ চাষীরা। অনেক কৃষক সমিতি থেকে লোন তুলে ভুট্টা চাষ করে ভালো ফলন পেলেও দেখছে না লাভের মুখ। কৃষকেরা বলছে লাভ তো দূরের কথা, এখন লোন আর সুদের টাকা তারা পরিশোধ করতে দিশেহারা।
গত বছর এ সময়ে ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা মণ দরে ভুট্টা বিক্রি হলেও চলতি মৌসুমে শুরুতে মতলবে ভুট্টার দাম কমেছে মণ প্রতি ৩০০-৫০০ টাকা। বতর্মানে কৃষকদের ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকা মণ দরে ভুট্টা বিক্রি করতে হচ্ছে, যা আবাদের খরচের তুলনায় কম।
মতলব উত্তর উপজেলার ভুট্টা চাষী দ্বীন ইসলাম জানান, ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছ। গত বছর ভুট্টার যে দাম ছিলো এ বছর তা নেই। মণ প্রতি ৩০০-৪০০ টাকা কমে গেছে। এই দামে ভুট্টা বিক্রি করলে তাদের লাভ নয় বরং লোকসান গুণতে হবে অনেক টাকা। দাম ভালো না হলে কৃষকদের মূলধন হারিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়বেন।
স্থানীয় ভুট্টা ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী জানান, এবার প্রথম দিকে কৃষকের কাছ থেকে ১৩০০ টাকা দরে ক্রয় করে আড়তে নিয়ে ১১০০ টাকা বিক্রি করতে হয়েছে। বর্তমানে আরো দাম কম। প্রথম বিক্রিতে আমার ২৫ টাকা লোকসান হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী জানান, এ বছর মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ভুট্টা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জিত হয়েছে। গত মৌসুমে ভুট্টার মূল্য বেশি পাওয়ায় কৃষকরা এবার বেশি আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে। ভালো ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে দাম কমতে পারে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এবার ভুট্টার দাম এতোটা কম আশানুরূপ নয়। কৃষক উৎপাদন ব্যয়ের তুলনায় ন্যায্যমূল্য না পেলে আবাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।