প্রকাশ : ০২ মে ২০২৩, ০৮:৪৩
হার না মানা শতবর্ষী বৃদ্ধ যদুলাল বাইন
বাঁশের তৈরি পণ্য বিক্রি করেই চলে সংসার
বাঁশ আর বেতকেই জীবিকার প্রধান বাহক হিসাবে ধরে রেখেছেন চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলাধীন ১৬নং সুলতানাবাদ ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি পরিবার। কিন্তু দিন দিন বাঁশ আর বেতের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় অভাব অনটনে দিন পার করছেন বাঁশমালীরা। জানা যায়, পূর্ব পুরুষদের কাছে পাওয়া বংশ পরম্পরাই এ পেশায় গত কয়েক বছরে আগে বেশ সফলতা ছিল। কিন্তু প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বাজারে আসার কারণে কমে গেছে বাঁশের তৈরি পণ্যের চাহিদা। অন্যদিকে, প্লাস্টিক পণ্যের দাম বাঁশের তৈরি পণ্যের চেয়ে অনেক কম। আগে ৫০০ টাকার বাঁশ কিনে সেই বাঁশ দিয়ে পণ্য তৈরি করে ১ হাজার ৫শ’ টাকা বিক্রি করা যেত। কিন্তু বাঁশের দাম বাড়ার কারণে এখন ৫০০ টাকার বাঁশ কিনে সেই বাঁশ দিয়ে পণ্য তৈরির পর ১০০০ টাকাও বিক্রি করা যায় না।
|আরো খবর
বাঁশমালীরা জানান, ৫০টি পরিবার বাঁশের তৈরি চাটাই, খাঁচা, বিটে, পলও, আন্টা, কুলা, পাখা, ডালি, ভাড়, ঝাড়ু, হাসঁ-মুরগি রাখা খাঁচাসহ নানা পণ্য তৈরি করে হাট-বাজারে বিক্রি করে কোন মতো চলে তাদের সংসার। বাঁশের তৈরি পণ্য ছাড়া অন্য কোন কাজ তাদের জানা নেই। তাই পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে এটা করতে করেন। সরকারি ভাবে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিলে পরিবারগুলো আরও ভালো পণ্য তৈরি করে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে জানান বাঁশমালিরা। এ ব্যাপারে একজন ঊধ্র্বতন কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি পেশার মানুষকে এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করছি। বাঁশমালীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে, শতবর্ষী বৃদ্ধ যদুলাল বায়েন এর তিন ছেলে মনিন্দ্র চন্দ্র সরকার, বাবুল চন্দ্র সরকার ও প্রিয়লাল সরকার এবং একমাত্র মেয়ে মনি রাণী সরকার। এরমধ্যে গেলো বছর ২৫ ডিসেম্বর জন্ডিস ও লিভার কান্সারে আক্রান্ত হয়ে অকালে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তাঁর ছোট ছেলে সুজাতপুর বাজারের টেইলার্স প্রিয়লাল সরকার (৪৫) এবং গেলো ৪/৫ বছর আগে তাঁর সহধর্মিনীও না ফেরার দেশে চলে গেছেন (দিব্যান লোকন্ স্ব গচ্ছতু)। প্রিয়তমা স্ত্রী আর আদরের ছোট ছেলেকে হারিয়ে শতবর্ষী যদুলাল বাইন আজ অসহায়। পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে এ বয়সেও নিরলসভাবে কর্ম করে যাচ্ছেন চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলাধীন ১৬নং সুলতাবাদ ইউনিয়নস্থিত কোয়রকান্দি গ্রামের ১'শ ১৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ যদুলাল চন্দ্র বাইন। বাঁশের তৈরি পণ্য বিক্রি করেই চলে শতবর্ষী বৃদ্ধ যদুলাল বাইনের সংসার।
শতবর্ষী বৃদ্ধার নাতি অমল চন্দ্র সরকার বলেন, সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিলে পরিবারগুলো আরও ভালো পণ্য তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতে পারবে।