শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২১, ১৩:০৯

ফরম পূরণে শিক্ষাবোর্ডের সফটওয়্যার

অনলাইন ডেস্ক
ফরম পূরণে শিক্ষাবোর্ডের সফটওয়্যার

বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার ফরম পূরণে নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ করতে প্রতি বছর নানা নির্দেশনা দেওয়া হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড থেকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করে। তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে। সর্বশেষ করোনাকালেও এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

তবে এবার ভিন্ন পথে হাঁটছে শিক্ষাবোর্ড। অতিরিক্ত অর্থ আদায় ঠেকাতে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একজন পরীক্ষার্থী ফরম পূরণসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাওনা পরিশোধ করতে পারবে। প্রমাণ হিসেবে থাকবে সফটওয়্যারের মাধ্যমে পাওয়া এসএমএস। তাই চাইলেও প্রতিষ্ঠান আগের মতো অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে তা অস্বীকার করতে পারবে না। প্রতিষ্ঠান চাইলেও নামে-বেনামে নানা খাত দেখিয়ে অতিরিক্ত ফি আদায় করতে পারবে না।

শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ১২ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ হবে এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে। সংশ্লিষ্ট কলেজ এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরীক্ষার্থী বা তার অভিভাবকের সচল একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের কাজ শুরু করবে। প্রতিষ্ঠান, বোর্ড ফি ও কেন্দ্র ফি সফটওয়্যারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেট করা থাকবে। পরীক্ষার্থীর কাছে কত টাকা পাওনা, কলেজ শুধু সফটওয়্যারে সেই টাকার পরিমাণ এন্ট্রি দেবে। তারপর পরীক্ষার্থী বা অভিভাবকের নিবন্ধিত ফোন নম্বরে চলে যাবে একটি এসএমএস, যাতে টাকার পরিমাণ উল্লেখ থাকবে।

কোনো পরিক্ষার্থী যদি মনে করে, তার কাছে অতিরিক্ত অর্থ চাওয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে সে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে। সেখানে সমাধান না পেলে বোর্ডের কন্ট্রোল রুমে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবে। তাৎক্ষণিক তা যাচাই-বাছাই করবে বোর্ড। প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের ফরম পূরণের প্যানেল তাৎক্ষণিক বন্ধ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বোর্ড।

জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, এতদিন বোর্ড ফির বাইরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নানা খাত দেখিয়ে অর্থ আদায় করত, যার কোনো ডকুমেন্ট থাকত না। এখন একজন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রতিষ্ঠান টিউশন ফিসহ কোন খাতে কত টাকা নেবে তা আমাদের কাছে দৃশ্যমান হবে। পরীক্ষার্থীরাও জানতে পারবে এবং ডকুমেন্ট পাবে। তাই চাইলেই একটি প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত ফি আদায় করতে পারবে না।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার মুকুল শিক্ষাবোর্ডের নতুন এ পদ্ধতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আমরাও চাই ফরম পূরণের নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যে অনৈতিক বাণিজ্য করে, তা বন্ধ হোক।

সফটওয়ারের মাধ্যমে যেভাবে হবে ফরম পূরণ করোনার কারণে এবার এইচএসসির ফরম পূরণের পুরো কাজটি হবে অনলাইনে। কোনো অবস্থাতেই পরীক্ষার্থী বা অভিভাবকদের কলেজে ডাকা যাবে না। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বোর্ডের ওয়েবসাইটে পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রিন্ট করে হার্ড কপিতে লাল কালি ব্যবহার করে টিক চিহ্ন দিয়ে পরীক্ষার্থী নির্ধারণ করবে। তারপর প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পাওনার খালি ঘরে সঠিকভাবে হিসাব-নিকাশ করে নির্বাচিত প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পাওনা (পাওনা না থাকলে ‘শূন্য’ টাকা) লিখবে। ফোন নম্বরের ঘরে পরীক্ষার্থী বা তার অভিভাবকের নম্বরটি লিখতে হবে।

মোবাইল নম্বর সঠিকভাবে লেখার পর বকেয়া পাওনা প্রদান, মোবাইল নম্বর সংগ্রহ বা অন্য কোনো কারণে পরীক্ষার্থী বা তার অভিভাবককে সশরীরে প্রতিষ্ঠানে আসতে বলা যাবে না। প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার তথ্য যাচাই করতে হবে।

সব যাচাই-বাছাই হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানের মোট বকেয়া পাওনা এন্ট্রি করতে হবে। এখানে বোর্ড ফি ও কেন্দ্র ফি অটো সেট থাকবে। প্রতিষ্ঠানের এ দুটি খাতে টাকা এন্ট্রি দিতে হবে না। সবকিছু সঠিকভাবে এন্ট্রি দেওয়ার পর সেন্ড বাটনে ক্লিক করার পর পরীক্ষার্থীর মোবাইলে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা একটি এসএমএস চলে যাবে।

পাওনা বা মোবাইল নম্বর এন্ট্রিতে ভুল ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থী পেমেন্ট না করা পর্যন্ত এডিট বাটনে ক্লিক করে প্রতিষ্ঠান, পাওনা বা মোবাইল নম্বর সংশোধন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে সংশোধন করার পর অবশ্যই পুনরায় সেন্ট এসএমএস বাটনে ক্লিক করতে হবে। তবে কোনো পরীক্ষার্থী পেমেন্ট সম্পন্ন করলে আর সংশোধনের সুযোগ থাকবে না নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো পরীক্ষার্থী ফি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তার ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়নি বলে গণ্য হবে। তবে যে পরীক্ষার্থীরা পেমেন্ট নিশ্চিত করেছে, তাদের নামের পাশে প্রতিষ্ঠান ‘পেইড’ দেখাতে পারবে। বাকিগুলো পেন্ডিং দেখাবে। প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠান ‘আনপেইড স্টুডেন্ট লিস্ট’ বাটনে ক্লিক করে ফরম পূরণের নির্ধারিত শেষ তারিখের পূর্বে যে পরীক্ষার্থীরা পেমেন্ট করেনি, তা দেখাতে পারবে। যারা পেমেন্ট করেনি, ফোনে যোগাযোগ করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ফরম পূরণ করতে পারবে। ফরম চূড়ান্ত হওয়ার পর সেখানে পরীক্ষার্থীদের স্বাক্ষর নেওয়া প্রয়োজন নেই বলে বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে।

বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, একজন পরীক্ষার্থী চাইলে এসএমএসের মাধ্যমে তার নাম, রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর, কেন্দ্র নাম, বোর্ড ও কেন্দ্র ফি এবং প্রতিষ্ঠানের পাওনার পরিমাণ জানতে পারবে।

কোন বিভাগে কত ফি করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সব বিষয়ে পরীক্ষা হবে না। তাই অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার ফরম পূরণের ফি কমানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চলতি বছর ডিসেম্বর মাসে এ পরীক্ষা নেওয়া হবে। চলতি বছর বিজ্ঞান বিভাগের ১ হাজার ১৬০ টাকা, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ১ হাজার ৭০ টাকা ফি ধার্য করা হয়েছে। নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যাবে না।

পরীক্ষার ফি পরিশোধের পদ্ধতি ফরম পূরণের পর শিক্ষার্থী এসএমএসে টাকা পরিশোধ করার একটি লিংক পাবে। সেটি ব্যবহার করে অথবা সোনালী ব্যাংকের সোনালী ই-সেবা অ্যাপ ব্যবহার করে পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পরীক্ষার সর্বমোট ফি পরিশোধ করতে পারবে। এছাড়া বোর্ডের ওয়েবসাইটের স্টুডেন্ট প্যানেল থেকেও ‘সোনালী সেবা’ পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি পরিশোধ করা যাবে।

মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ, বিকাশ, রকেট, ইউপে ও সোনালী ই-ওয়ালেট যে কোন একটির মাধ্যমে পরীক্ষার ফি প্রদান করতে পারবে। তাছাড়া যে কোনো ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, ডাচ বাংলা ব্যাংকের নেক্সাস প্রভৃতি ব্যবহার করেও পরীক্ষার ফি প্রদান করা যাবে। অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ কাটা হবে।

টাকা পাঠানোর আগে প্রতিষ্ঠানের পাওনা এবং সার্ভিস চার্জসহ সর্বমোট টাকার ন্যূনতম অংক অ্যাকাউন্টে থাকতে হবে। টাকা পরিশোধ করার পর পরীক্ষার্থীকে তার ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়েছে মর্মে একটি এসএমএসের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে। কারিগরি ত্রুটির কারণে পরীক্ষার্থী এসএমএস না পেলে বোর্ডের ওয়েবসাইটে স্টুডেন্ট প্যানেলে তার ফরম পূরণের স্ট্যাটাস দেখতে পারবে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো পরীক্ষার্থী ফি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তার ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়নি বলে গণ্য হবে।

অভিযোগ শুনবে কন্ট্রোল রুম এইচএসসির ফরম পূরণ সংক্রান্ত কোনো সমস্যা বা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কন্ট্রোল রুমের নিম্নোক্ত ফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। নম্বরগুলো হলো- ০২-৯৬৬৯৮১৫, ০২-৫৬৬১১০১৮১, ০২-৫৮৬১০২৪৮, ০১৬১০৭১১৩০৭, ০১৬২৫৬৩৮৫০৮, ০১৭২২৭৯৭৯৬৩।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়