প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
শিক্ষক সাক্ষাৎকার : রেবেকা সুলতানা
শিক্ষার্থীদের সন্তানের মত আগলে রাখি
রেবেকা সুলতানা। হাজীগঞ্জ উপজেলাধীন বলাখাল জে.এন. উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কারিগরি কলেজের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক। সম্প্রতি তিনি চাঁদপুর কণ্ঠের মুখোমুখি হন। এ সময় তিনি শিক্ষকতা জীবনের নানা দিক ও ভাবনার কথা জানান।
|আরো খবর
চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?
রেবেকা সুলতানা : আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষকতা পেশায় কীভাবে এলেন?
রেবেকা সুলতানা : ছোটবেলা থেকে পাঠাদানের প্রতি প্রবল দুর্বলতা ও অনেক গুণি শিক্ষকের সান্নিধ্য পেয়েছি বিধায় মহান এ পেশার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আজ এখানে আসা।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষক হিসেবে প্রথমদিন কেমন কেটেছে?
রেবেকা সুলতানা : প্রথম দিনের আগের দিন ছিল প্রবল উত্তেজনা। বিদ্যালয়ে ঢুকে বিশাল অট্টালিকা দেখে চমকে যাই। পরবর্তীতে সিনিয়র শিক্ষিকদের সান্নিধ্যে অসাধারণ এক অনুভূতি পাই। সহকারী শিক্ষকদের আন্তরিকতা ও ছাত্রদের ভালবাসায় প্রতিটা মুহূর্তে আমি শিহরিত হই। সে এক অনন্য অনুভূতি, যা আজও আমায় কাঁদায়।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার ছাত্রজীবন সম্পর্কে কিছু বলুন।
রেবেকা সুলতানা : ছাত্রজীবনে দায়িত্বশীল ছিলাম। কখনো একদিনের পড়া অন্যদিন গড়ায়নি। ছাত্রী হিসেবে ছিলাম মধ্যম সারির। বাবা ছিলেন সরকারি চাকুরিজীবী। তাই মেধা থাকা সত্ত্বের রোলটা কখনো প্রথম সারিতে আনতে পারিনি। তবে সকল শিক্ষকের প্রিয় ছাত্রী হিসেবে ছিলাম।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনাদের সময়ের শিক্ষাব্যবস্থা ও বর্তমান সময়ের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে কী পার্থক্য লক্ষ্য করেন?
রেবেকা সুলতানা : আমাদের সময়ে শাসন ছিল, জবাবদিহিতা ছিল, শিক্ষার্থীদের শিক্ষকদের প্রতি সম্মান ছিল এবং সকল শিক্ষক প্রতিটা ছাত্রকে চিনতো ও জানতো। আমরাও শিক্ষকদের ভয় পেতাম। বর্তমানে শাসন ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা না থাকার কারণে ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে এবং এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ভার্চুয়াল জগত।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি শিক্ষামন্ত্রী হলে বিশেষ যে তিনটি কাজ করতেন?
রেবেকা সুলতানা : আমি শিক্ষামন্ত্রী হলে কোনো স্কুলে কমিটি রাখতাম না। এনটিআরসির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সকল নিয়োগ এবং শুক্রবার ও শনিবার দুদিন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করতাম। ইতোমধ্যে যা শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় ঘোষণা করেছেন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
রেবেকা সুলতানা : শিক্ষা জীবনে খেলাধুলার গুরুত্ব প্রবল। খেলাধুলা মাদক, ইভটিজিং, সন্ত্রাস ও ভার্চুয়াল অ্যাডিকশন থেকে রক্ষা করে। সুতরাং খেলাধুলার প্রতি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জোরালোভাবে গুরুত্ব আরোপ করা উচিত।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার বিদ্যানিকেতনটি সম্পর্কে কিছু বলুন।
রেবেকা সুলতানা : এক কথায় অসাধারণ। আমার যাপিত জীবনের অধিকাংশ সময় এই সেরা প্রতিষ্ঠানে কাটাই। নিজের পরিবারের মতো আপন এই প্রতিষ্ঠানটির রেজাল্ট হাজীগঞ্জ উপজেলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। আর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আগলে রাখি সন্তানের মতো।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় ছাত্র কারা? কেনো প্রিয়?
রেবেকা সুলতানা : অনেক ছাত্রই প্রিয়, তবে ক্ষেত্রবিশেষে কিছু ছাত্র আছে দায়িত্বশীল, মেধাবী, পরিপাটি ও সুবোধ। আবার কিছু ছাত্র আছে পড়ালেখায় মনোযোগী হবার চেষ্টা ও আগ্রহ আছে, যাদের পাঠদানে আমি আনন্দ বোধ করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষকতা জীবনের একটি আনন্দের ঘটনা বলুন।
রেবেকা সুলতানা : আমি হিসাববিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠানে যোগদান করি। ২০১০ সালে আমার বিভাগের প্রথম ৬ জন ছাত্র জিপিএ-৫ অর্জন করে ও শতভাগ পাস করে, সে মুহূর্তটাতে আমি মন থেকে খুশি হই।