প্রকাশ : ১৮ মে ২০২২, ২২:০৫
শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমাতে কোচিং বাণিজ্য বন্ধের চেষ্টা করছি : শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, দক্ষ মানবসম্পদ ও উন্নত দেশ গড়তে শিক্ষার বিকল্প নেই। তাই শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমিয়ে যথাযথ মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ ঘটাতে কোচিং বাণিজ্য বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষাকে ঘিরে বঙ্গবন্ধুর যে অসমাপ্ত স্বপ্ন ছিলো সেটি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। মঙ্গলবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২২-এর জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
|আরো খবর
দীপু মনি বলেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ভ্যাকসিন দেয়ার বিষয়টি সম্পন্ন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। এতে তারা শিখতে পেরেছে কোনো কাজই ছোট নয়। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু মনে করতেন মেধাবী সৃজনশীল প্রজন্ম আগামীদিনের সোনার বাংলা গড়ে তুলবে। আমরা শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলার জন্যে দেশব্যাপী সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা করেছি। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের সহযোগিতা নিয়ে সৃজনশীল চিন্তার বিকাশ ঘটাতে পেরেছে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার চেয়ে অংশগ্রহণ বড় বিষয়। যারা অংশগ্রহণ করেছে সবাই সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। এ অভিজ্ঞতা তাদের জন্যে বড় সাফল্য বয়ে নিয়ে আসবে। অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, শিক্ষাবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) একেএম আফতাব হোসেন জানান, এ বছর প্রতিষ্ঠান পর্যায় থেকে প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী উপজেলা পর্যায়ে ও উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ে প্রায় ৭৭৭৫ জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছেন। আবার জেলা পর্যায়ে থেকে প্রায় ১০২০ জন প্রতিযোগী বিভাগীয় পর্যায়ে এবং ৯টি বিভাগ থেকে ১৫ জন করে মােট ১৩৫ জন প্রতিযোগী আজকের এ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সৃজনশীল প্রজন্ম, সমৃদ্ধ আগামী’ এই স্লোগানে ২০১৩ সাল থেকে সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হচ্ছে। গত দুই বছর করোনা অতিমারির কারণে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তাই এই বছরের প্রতিযোগিতাটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্যরকম সাড়া ফেলেছে। আজ যারা বিজয়ী হবে তাদের জন্য নগদ দুই লাখ টাকা পুরস্কার, ক্রেস্ট, মেডেল এবং সার্টিফিকেট দেয়া হবে। পরবর্তীতে এ পুরস্কার দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মূলত দেশব্যাপী সৃজনশীল মেধা অনুসন্ধানে সরকারের সমন্বিত কর্মসূচি ‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ’। অনন্য সাধারণ মেধা অন্বেষণের লক্ষ্যে এবং শহর ও গ্রামের শিক্ষা বৈষম্য নিরসনের জন্যে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অসাধারণ মেধাসম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রী অন্বেষণ করা এবং তাদের উৎসাহ দিতে এককালীন বিশেষ মেধা বৃত্তি এই কর্মসূচির আওতায় রয়েছে। একই সাথে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (অটিস্টিক) শিক্ষার্থীর মেধাকে বিকশিত করে মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে তাদেরও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৩টি বিষয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। তবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (অটিস্টিক) শিক্ষার্থীরা তাদের জন্যে নির্ধারিত বিষয় ছাড়াও সাধারণ বিষয়গুলোতেও অংশগ্রহণ করেছেন।
প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীরা ভাষা ও সাহিত্য (বাংলা, ইংরেজি), দৈনন্দিন বিজ্ঞান, গণিত ও কম্পিউটার, বাংলাদেশ স্টাডিজ (ইতিহাস, পৌরনীতি, অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান) এবং বাংলাদেশ স্টাডিজ ও মুক্তিযুদ্ধ এ পাঁচটি বিষয়ে অংশ নিয়েছেন। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।