সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২১, ২১:০০

উদ্যোক্তাদের জন্য ড. মোঃ সবুর খান রচিত

এ জার্নি টুয়ার্ডস এন্ট্রাপ্রেনিউরশীপ বই ক্রোয়েশিয়ান ভাষায় অনূদিত

অনলাইন ডেস্ক
এ জার্নি টুয়ার্ডস এন্ট্রাপ্রেনিউরশীপ বই ক্রোয়েশিয়ান ভাষায় অনূদিত

জাতি হিসাবে আমরা গর্বিত এজন্য যে ক্রোশিয়ার নতুন উদ্যোক্তা ও স্টার্ট আপদের জন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি (ডিসিসিআই) এর সাবেক সভাপতি মোঃ সবুর খান রচিত নতুন উদ্যোক্তাদের সহযোগিতার জন্য পূর্ণাঙ্গ দিক্নির্দেশনা সম্বলিত“এ জার্নি টুয়ার্ডস এন্ট্রাপ্রেনিউিরশীপ” ক্রোয়েশিয়ান ভাষায় অনুদিত হয়েছে। ক্রোয়েশিয়ান ভাষায় বইাটর নাম দেয়া হয়েছে “পুতভাঞ্জি প্রেমা পোদুজেতনিসট্ভু” এবং লেখক ড. মো. গবুর খান। গত মাসে বইটি ক্রোয়েশিয়ায় প্রকাশিত হয়। উদ্যোক্তা বিষয়ে জ্ঞান আহরনের লক্ষ্যে ক্রোিেশয়ার জাগরিবে সুইস ভিত্তিক প্রকল্প আয়োজিত এ ইউথ বিজনেস ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী ১০ জন ইয়ং স্টারকে পুরস্কার হিসাবে এ বইটি প্রদান করা হয়। একাডেমিক উদ্দেশ্যে বিদেশী ভাষায় কোন বই অনুদিত হওয়া বাংলাদেশের যে কোন লেখকের জন্য সম্মানজনক স্বীকৃতি স্বরুপ। মিস ইভা এবং মিস ক্যাটারিনা জেজিককে এ কাজে তাদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপধন্যবাদ রইল।

বইটি প্রথম ইংরেজীতে “হ্যান্ডবুক অফ এন্ট্রাপ্রেনিউরশীপ ডেভেলাপমেন্ট” নামে প্রকাশিত হয়। ড. মো. সবুর খান ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (ডিসিসিআই) সভাপতি থাকাকালীন ২০১৩ সালের ৬ নভেম্বর ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (ডিসিসিআই) আয়োজিত “এন্ট্রপ্রেনিউরশীপ এন্ড ইনোভেশন এক্সপো”এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মহামান্য রাস্ট্রপতি জনাব মো. আবদুল হামিদ এ হ্যান্ডবুকের মোড়ক উম্মোচন করেন।

দেশ-বিদেশের অসংখ্য একাডেমিশিয়ান ও উদ্যোক্তাদের বিপুল সাড়ায় ও অনুরোধে এবং স্টার্টআপদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ড. মো. সবুর খান বইটিতে বেশ কিছু একাডেমিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে বইটিকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ করে এর নাম দেন “এ জার্নি টুয়ার্ডস এন্ট্রাপ্রেন্্্্্্্্্্উিরশীপ”। ২০১৪ সালে বইটি প্রথম ইংরেজীতে প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ততকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে এ বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করেন।

বাংলাদেশের নবীন উদ্যোক্তাদের কথা মাথায় রেখে এবং তাদের সহযোগিতার উদ্দেশ্যে ড. মো. সবুর খানপূর্ণাঙ্গ দিক্নির্দেশনা সম্বলিতবইটিকে বাংলায় অনুবাদ করেন এবং এর নাম দেন “উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও ব্যবসায় নির্দেশনা”। বইটি স্কলারস্ পাবলিকেশন্স এর ব্যানারে প্রকাশিত হয়। ২০১৭ সালের ১৮ ই ফেব্রুয়ারি বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলাপমেন্ট অথরিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (ডিসিসিআই) সভাপতি আবুল কাশেম খান। সভাপতিত্ব করেন পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ।

বইটি উদ্যোক্তা হতে আগ্রহীদের জন্য একটি দিক নির্দেশনা। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এবং দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বইটি পরিবর্তনের জরুরি বার্তা বহন করে- বিশেষ করে সমাজের পরিবর্তন এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, চাকরি খোঁজার থেকে চাকরি দেবার সংস্কৃতির চর্চা।

বইটি প্রকাশের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হতে সঠিক দিক নির্দেশনা, পরামর্শ ও তথ্য-উপাত্ত দিয়ে উদ্বুদ্ধ করা যাতে তারা উপযুক্ত মানসিক শক্তিলাভে সামর্থ্য হয়। বইটি আমাদের হতাশা গ্রস্থ তরুন সমাজ কিভাবে তারা উদ্যোক্তাহতে পারবে এবং তাদের ভেঞ্চার শুরু করতে প্রয়োজনীয় মূলধনের জোগাড় কিভাবে করবে তা নির্ধারনে সহায়তা করবে।

বইটি বিশেষভাবে নতুন স্টার্টআপ এবং নতুন উদ্যোক্তাদের জন্যই রচনা করে হয়েছে। বইটিতে রয়েছে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার সূচনা প্রস্তুতি,ক্ষমতা নির্ধারন, কিভাবে ব্যবসার পরিকল্পনা করতে হয়, কিভাবে নিবন্ধন করতে হয়, কার্যকর ব্যবসায়িক কৌশলসমূহ, আগামী দিনের উদ্যোক্তাদের জন্য ঢাকা চেম্বারের সহায়তা সমূহ এবং সফল ব্যবসায়িদের ষাফল্যগাঁথা। এতে আরো রয়েছে ৩৮ টি ব্যাংক এবং এনবিএফআই এর এসএমই পণ্যের বিশদ বিবরন।

বইটির অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নতুন উদ্যোক্তাদের উতসাহিত ও অনুপ্রাণিত করতে এখানে বাংলাদেশের বেশ কিছু সফল ব্যবসায়ীদের সাফল্যগাঁথা অত্যন্ত দক্ষতা ও নান্দনিকতার সাথে তুলে ধরা হয়েছে। তাদের সাফল্যগাঁথাই বলে দেয় কি পরিমান দৃঢ়তা এবং সঠিক কৌশল অবলম্বন করে একজন উদ্যোক্তা তার জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যেতে পারে।

বইটি নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসায়ের নতুন নতুন উদ্যোগগুলিতে বিশেষ মনোযোগ প্রদান করে । জাতীয় নীতিমালা দ্বারা সমর্থিত ব্যবসায়িক অনুকূল পরিবেশ স্টার্টআপদের বিকাশ টেকসইয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ন। এতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে কিভাবে স্টার্টআপসমূহ ভেঞ্চার ক্যাপিটালকে আকৃস্ট করতে পারে এবং একে কাজে লাগিয়ে কিভাবে ব্যবসার ভিত্তি স্থাপন ও সম্প্রসারণ করা যায়। স্টার্ট আপদের অনুসরনযেগ্যে অসংখ্য মডেল রয়েছে এ বইটিতে। এর মধ্যে বিশেষগুরুত্বসহকারে দেয়া হয়েছে ব্লু ওসেন মডেল। এটা এক ধরনের বিপনণ কৌশল যা নতুন অপ্রতিদ্বদ্বী বিপনন স্পেস ও নতুন চাহিদা তৈরির মাধ্যমে প্রতিযোগিতাকে নিস্ক্রিয় করে ফেলে। এজন্য একজনকে গবেষণা করতে হয়, নতুন চাহিদা খুঁজে বের করতে হয়, উযুক্ত ধারনা উদ্ভাবন করতে হয় এবং ধারনাটিকে এশটি পণ্যে রুপান্তরিত করতে হয়। কিন্তু বাস্তবে একটা নতুন ব্যবসা শুরুকরে রাতারাতি সাফল্য লাভ করা এটা খুবই কঠিন কাজ।কারন এর সাথে অনেক ঝুঁকি সম্পৃক্ত রয়েছে। প্রায়শই ব্যবসায়ে প্রবেশকারীতে কেবল ব্যাচ থেকে শুরু করতে হয়। ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপের জটিলতার কারনে তিনি হতাশা বোধ করতে পারেন। সেকি শেষ পর্যন্ত এটি তৈরি করতে পারবে? তার অনুপেরনা প্রয়োজন এবং সর্বোত্তম অনুপ্রেরণা ডিকটম থেকে আসে: “প্রতিটি গণণা শূন্য দিয়ে শুরু হয়। আমাদেরকে উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে যারা অন্যদেরকে চাকরি দেবে যা সত্যিকারার্থে আমাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখবে যখন আমরা মধ্যম আয়ের দেশে ধাবিত হব। বইটি নিয়ে ঠিক এমনটাই আশা প্রকাশ করছেন লেখক ড. মো.সবুর খান, যিনি সম্প্রতি স্কলারস পাবলিকেশন্স এর ব্যানারে “এ জার্নি টুয়ার্ডস এন্ট্রাপ্রেনিউরশীপ” শিরোনামে বইটি প্রকাশ করেছেন ।

বাংলাদেশ খুব দ্রুতই উন্নত দেশের কাতারে চলে যাবে বলে যে ভবিষ্যৎবাণী করা হচ্ছে তা মূলত এদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের ওপর ভিত্তি করেই করা হচ্ছে। কারণ আগের চেয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পথ অনেক সহজ হয়েছে। ব্যাংক থেকে লোন পাওয়া সহজ হয়েছে। এখন উদ্যোক্তা উন্নয়নের জন্য যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে, উচ্চশিক্ষার সিলেবাসে ব্যাপক পরিবর্তন আনা। এমনভাবে সিলেবাস প্রণয়ন করা উচিত যাতে আমাদের শিক্ষিত তরুণরা ছাত্রবয়সেই ভাষার ওপর দক্ষ হয়ে ওঠে, যোগাযোগের ওপর দক্ষ হয়ে ওঠে এবং ব্যবস্থাপনার ওপর দক্ষ হয়ে ওঠে।

কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে শিল্পনির্ভর অর্থনীতি না হলে দেশ কখনোই উন্নত হবে না। আমাদের তাই শিল্পের দিকে যেতে হবে। আর শিল্পের দিকে যেতে হলে হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ উদ্যোক্তা দরকার। সুষম উন্নয়নের জন্য সব শ্রেণিপেশার মানুষকেই উদ্যোক্তার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। উচ্চশ্রেণি, মধ্যবিত্ত শ্রেণি, তরুণ প্রজন্ম, তৃণমূল পর্যায়-সব ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে। তা না হলে উন্নয়র টেকসই হবে না এবং সুষম হবে না।

কিন্তু কীভাবে উদ্যোক্তা হওয়া যায় সে ব্যাপারে সঠিক কোনো দিক নির্দশনা আমরা খুব একটা পাইনা। আশা করি তরুনরা এ বই থেকে সেই দিকনির্দেশনা পাব সবুর খানের এই বই থেকে।

লেখক : মোঃ আনোয়ার হাবিব কাজল, ঊর্ধ্বতন সহকারি পরিচালক (জনসংযোগ), ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, মোবাইলঃ ০১৭১৩৪৯৩০১৫, ০১৮১১৪৫৮৮১৫

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়