প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:৩৬
খুবির দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় ৬ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের গল্লামারী অংশ অবরোধ করে রাখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একজনকে আটক ও বাকি অপরাধীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে আটকের আশ্বাসে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে চলা এ অবরোধ বিকাল সাড়ে ৪টায় প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা।
|আরো খবর
শুক্রবার সকাল ১০টায় গল্লামারীর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আলহাজ মোল্লা ও আইন ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুজন হোসাইনকে স্থানীয় কয়েকজন মারধর করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
জানা যায়, আলহাজ মোল্লার মোটরসাইকেলের সঙ্গে এক প্রাইভেট কারের ধাক্কা লাগা, না লাগা নিয়ে ঝামেলার শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
আলহাজ গাড়ির ড্রাইভারকে বার বার বলছিলেন আপনার গাড়িতে কোনোধরনের ধাক্কা লাগেনি, আপনি নেমে দেখতে পারেন। প্রাইভেট কার থেকে এক ব্যক্তি নেমে এসে এই নিয়ে বাগবিতণ্ডা শুরু করে। তবে প্রাইভেট কারের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগার কোনো প্রমাণ দেখাতে না পেরে তিনি চলে যান। এরপরে গাড়ির মধ্যে থাকা অপর ব্যক্তি নেমে এসে গালাগালি শুরু করে। আলহাজ নিজেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিলে আরো ১০/১২ জন জন নিয়ে এসে তার ওপরে চড়াও হয়। ঘটনার সময় আরেক শিক্ষার্থী সুজন হোসাইন ওই স্থান দিয়েই যাচ্ছিলেন। তিনি এগিয়ে গিয়ে কথা বলতে চাইল তাকেও মারধর করা হয়। এ সময় তাকে মোটরসাইকেলের হেলমেট দিয়ে মাথায় ও মুখে আঘাত করা হয়। এরপরে সুজনকে প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে যেতে চাইলে ওই দুই শিক্ষার্থী কোনোরকমে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ঘটনার বিচার দাবি করে সড়কের চারপাশ অবরুদ্ধ করে ফেলে। মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যান।
বেলা ৩টার দিকে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খুলনার মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি এ সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শুনে দোষীদের শাস্তির বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করেন। এ ছাড়াও মোবাইল ফোনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেনের কথা বলিয়ে দেন। এ সময় উপাচার্যও দোষীদের শাস্তির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন।
পরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এসে ছাত্রদের শান্ত করলে পরে ছাত্ররা অবরোধ তুলে নেন।
পরবর্তীতে এ ঘটনায় বিকেলে লায়ন্স স্কুলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে। আর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে দ্রুত বাকিদের আটকের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।