প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:২৪
বহুমুখী পাটজাত পণ্য তৈরি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা
![বহুমুখী পাটজাত পণ্য তৈরি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা](/assets/news_photos/2025/02/14/image-58926-1739514380bdjournal.jpg)
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চাঁদপুরে বহুমুখী পাটজাত পণ্য তৈরি বিষয়ক পাঁচ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী বৃহস্পতিবার বিকেলে সম্পন্ন হয়। এদিন বিকেলে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়। শহরের কাজী নজরুল ইসলাম সড়কের চাঁদপুর মহিলা সংসদ মিলনায়তনে এ আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ শিল্প মন্ত্রণালয়ের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশন (এসএমই)-এর আয়োজনে এবং চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহযোগিতায় এই আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়া ৩০ জন নারী উদ্যোক্তার মাঝে সনদ বিতরণ করা হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী। চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট মনিরা আক্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক যুগান্তরের সিটি এডিটর ও চাঁদপুরের কৃতী সন্তান মিজান মালিক, জেলা মহিলা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাসিমা আক্তার, জেলা মহিলা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বেবী আখন্দ, বাংলাদেশ শিল্প মন্ত্রণালয়ের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষক কাজী আশরাফুল হক ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সোনালী আঁশ বলে পাট শিল্পের গোটা পৃথিবীতে খ্যাতি ছিলো। এই শিল্পকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরে বৃহৎ আকারে দুটি পাটকল স্থাপন করা হয়। ওই সময়ে চাঁদপুরের পাট শিল্পের সুনাম গোটা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। কালের পরিক্রমায় বাংলাদেশের পাটশিল্প অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। চাঁদপুরের দুটি পাটকলও এখন বন্ধ। তবে গেল কয়েক বছর পাট শিল্প কিছুটা জৌলুস ফিরে পেয়েছে। সরকার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পলিথিন নিষিদ্ধ করেছে। এতে করে পাট শিল্পের বিরাট দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবং চাঁদপুর উইমেন চেম্বারের আয়োজনে স্থানীয় নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে বহুমুখী পাটজাত পণ্য তৈরি বিষয়ক পাঁচ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। আমরা এই প্রশিক্ষণের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং অংশ নেয়া প্রশিক্ষণার্থীদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমাদের চাঁদপুরে নারী উদ্যোক্তারা অনেক বেশি উপকৃত হয়েছে। এখন প্রয়োজন প্রশিক্ষণ নেওয়া নারীদের পৃষ্ঠপোষকতা করা, তাদের তৈরি পাটজাত পণ্য বিক্রয়, বিপণন এবং প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা। এ বিষয়ে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান রাখছি।
চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য রাখী মনি সিনহা এবং সবাই মিলে নারী উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক তানিয়া ইসলামের যৌথ পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়া নারী উদ্যোক্তা সুমাইয়া নাজমীন, ফাহিমা মাহজাবীন, উম্মে কুলসুম, তুমি, সাদিয়া, মালিহা ইসলাম ও অর্পিতা মজুমদার।
এ বিষয়ে চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মনিরা আক্তার বলেন, চাঁদপুরে অসংখ্য মেধাবী নারী আছে, যারা নিজের অঙ্গনে থেকেও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তাদের জন্যে প্রয়োজন উপযুক্ত প্রশিক্ষণ। আমরা উইমেন চেম্বারের পক্ষ থেকে সে সব নারীকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে তাদের যোগ্যতাকে কাজে লাগাতে চাই। আমরা চাই নারীরা তাদের যোগ্যতা নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াক। আমরা আগামীতে আরো ক্লাস্টার বেইজড প্রশিক্ষণ দেবো। আমরা চাই প্রতিটি ঘর হবে একটি কুটির শিল্প কারখানা। আগামীতে দেশ-বিদেশ থেকে এসব কুটির শিল্প দেখতে মানুষ চাঁদপুরে আসবে।
তিনি আরো জানান, দেশে বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যার অংশ হিসেবে এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দেশব্যাপী নারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উদ্যোক্তাদেরও এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।